- আপলোড টাইম : ০৮:৩৮:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
- / ৪১ বার পড়া হয়েছে
হাজার মাসের চেয়ে উত্তম রজনী
শবেকদরে খুলে যাক শান্তির দুয়ার
পৃথিবীর মানুষ আজ দিশেহারা। কারো কাছে কোনো ধরনের জীবনের দিশা নেই। কোন কাজটি সঠিক কিংবা বেঠিক তা কেউ বলতে পারছেন না। সঙ্গত কারণে স্থানীয় থেকে বৈশ্বিক সবখানে একধরনের অস্থিরতা বিরাজমান। ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক সব পক্ষ নিজেদের সততা ও সঠিকতার দাবিদার। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কেন এত শত্রুতা-বৈরিতা, দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত আর রক্তপাত। আসলে ‘সঠিক’ কোনটি তা জানা-বোঝার উপায় আছে। যিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাকে সেটি দিতে পারেন। ঐশী গ্রন্থগুলোতে সবিস্তারে তা বর্ণিত রয়েছে। কিন্তু মানুষ আগের সব আসমানি কিতাব বিকৃত করে ফেলেছে। আমাদের পরম সৌভাগ্য- কুরআন অবিকৃত রয়েছে। এর সংরক্ষণের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ নিয়েছেন। সূরা কদরে আল্লাহ এক সৌভাগ্যের রজনীর কথা উল্লেখ করেছেন। এটি হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। কৌতূহলের বিষয়, গুনে গুনে হিসাব করলে দেখা যাবে রাতটির মূল্য ৩০ হাজার দিনের সমান। লক্ষণীয়, মানুষের গড়পড়তা আয়ুর সমান এটি প্রায়। ধর্মীয় পণ্ডিতরা রাতটিকে ২৬ রমজান দিবাগত রাত হিসেবে চিহ্নিত করতে চান। অনেকে আরেকটু বাড়িয়ে বলতে চান এটি শেষ ১০ রমজানের বেজোড় রাতগুলোর একটি। সূরা বাকারায় ১৮৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘রমজান মাস। যাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে’। এটি এখনো আল্লাহর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অবিকৃত রয়েছে। শেষনবী সা: কুরআন দ্বারা পরিচালিত হওয়ায় তাকে হেদায়াতের জন্য কোনো ব্যক্তি কিংবা কোনো কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হতে হয়নি। এখনো কুরআন রয়েছে। তাহলে আমরা কেন এর দ্বারা পরিচালিত হতে পারি না। আসলে আমরা কুরআন বুঝতে পারি না। যতটুকু বুঝতে পারলে সঠিক পথে পরিচালিত হতে পারব, ততটুকু বোঝার শক্তি আমাদের নেই। বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়, কুরআন আমাদের হাতে থাকার পরও সমাধান না পাওয়ার পেছনে মূল কারণ- এর প্রকৃত বুঝ আমাদের নেই। কুরআনে সূরা দুখানের তৃতীয় আয়াতে ‘লাইলাতুল মোবারাকা’ বলে একটি নির্দিষ্ট রাতের উল্লেখ রয়েছে। বর্ণনার ধারামতে বোঝা যায়, এটি মানবজাতির দিকনির্দেশক ‘কিতাব’ সংক্রান্ত। এ রাতে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস এই কিতাব আল্লাহ মানুষের জন্য পাঠিয়েছেন, যা করুণা ও প্রচুর্যে ভর। এই সূরার পরের আয়াতে বলা হয়েছে, এ রাতে প্রত্যেকটি ব্যাপারে বিজ্ঞতাপূর্ণ ফয়সালা বা সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ব এখন নানা জটিলতার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিপদে জড়িয়ে পড়ছে মানুষ। আমরা যদি দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাতময় এলাকাগুলোর দিকে নজর দিই এবং এ নিয়ে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর অবস্থান দেখি; পরিস্থিতি কতটা গুরুতর বুঝতে পারব। প্রতিদিন যুদ্ধে শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে; কিন্তু কেউ শান্তির কথা বলছে না। অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, খরা, দাবানলসহ অসংখ্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিদিন আঘাত হানছে। এগুলো নিয়ে বৈশ্বিক নেতৃত্ব এক হতে পারেনি। বলতে হয়, এ ক্ষেত্রে মানবজাতি ব্যর্থ হয়েছে। এ বহুমুখী জটিল অবস্থা থেকে বৈশ্বিক মুক্তিতে আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন। কুরআনের অনুশীলন সেটি দিতে পারে। কোন রাতে কুরআন নাজিল হয়, তা সুনির্দিষ্ট করে আল্লাহ বলেননি। তবে মাসটি যে রমজান সেটি বুঝতে অসুবিধা হয় না। বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কিছু দিন নির্দিষ্ট করলেও রমজানের প্রত্যেকটি রাত যে ইবাদতকারীদের জন্য মহাগুরুত্ব রাখে তা স্পষ্ট।