শ্রমিক নেতা সবুজের ভাই টগর গ্রেপ্তার
দর্শনায় বোমা কাণ্ড মামলার সন্দেহভাজন মাস্টারমাইন্ড
- আপলোড টাইম : ০৬:১১:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
- / ১১ বার পড়া হয়েছে
দর্শনায় আলোচিত বোমা কাণ্ডের পেছনের রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম দীর্ঘদিন ধরে মাঠে কাজ করছিল। বিভিন্ন স্থানে একের পর এক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় কেরুজ কর্তৃপক্ষসহ প্রশাসনকে চরম বেগ পেতে হয়। পাশাপাশি, শ্রমিক-কর্মচারীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা ধারণা করেন, কেরুজ শ্রমিক ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক সাধারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কেউ পরিকল্পিতভাবে এসব বোমা রেখেছে। প্রায় এক মাসের গভীর তদন্ত ও অনুসন্ধানের পর, গত ১৫ মার্চ রাতে দর্শনা থানা পুলিশ কেরুজ শ্রমিক নেতা ফিরোজ আহমেদ সবুজের সংগঠনের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানায় পুলিশ, যা মঞ্জুর হয়।
এরপর থেকেই কেরুজ শ্রমিক ইউনিয়নের একাধিক নেতা ও কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশ থেমে থাকেনি। মূল পরিকল্পনাকারী তথা মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে একাধিক টিম দর্শনাসহ বিভিন্ন স্থানে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দর্শনা বাসস্ট্যান্ডে সুমনের চায়ের দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে কেরুজ শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ সবুজের ফুফাতো ভাই ও আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদাহ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাজান আলী ওরফে ব্যানার চেয়ারম্যানের ছেলে, কেরুজ ঝাঁঝরী খামারের ফার্ম করণিক রাসেল উদ্দিন টগরকে (৪৬) গ্রেপ্তার করা হয়।
কেরু এলাকার বিভিন্ন সূত্র জানায়, চলতি বছরে কেরু শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক সাধারণ নির্বাচনে পরাজয়ের আশঙ্কায় ভুগছিলেন সাবেক সভাপতি ফিরোজ আহমেদ সবুজ। তাই নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন স্থানে বোমা রাখা হয়, যেখানে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখেন রাসেল উদ্দিন টগর।
এছাড়া নির্বাচনী বিভিন্ন জটিলতার কারণে কেরু শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক শ্রম অধিদপ্তরে গিয়েছিলেন। সেখানে এক বৈঠকে শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা তৈফিক আহমেদ জানান, নির্বাচন বন্ধ করতে কেউ তাকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে চেয়েছিল, এবং সেই ব্যক্তি শ্রমিক ইউনিয়নের ভেতরেই রয়েছেন। এতে বোমা আতঙ্ক ও নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতদের প্রতি সন্দেহ আরও প্রবল হয়।
এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদ তিতুমীর জানান, পুলিশ বোমা উদ্ধারের রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় জড়িতরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, কেউ ছাড় পাবে না। প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’ ওসি বলেন, ‘বোমা উদ্ধার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, দর্শনা থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) অনুপ দাস, মঙ্গলবার (আজ) গ্রেপ্তারকৃত রাসেল উদ্দিন টগরকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবেন। ওসি শহীদ তিতুমীর আরও জানান, এ ঘটনা নিয়ে তাদের তদন্ত চলমান রয়েছে।