ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫

আলমডাঙ্গার খাসবাগুন্দার আদম ব্যাপারী রুনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ

বিদেশ পাঠানোর নামে কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’

আলমডাঙ্গা অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৮:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে আদম ব্যবসায়ীর কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় পাওনাদারকে পানির মোটর চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার ঘোলদাড়ি ফাঁড়ি পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ওল্টু রহমান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। পরে অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী আলমডাঙ্গা থানা-পুলিশের নিকট ‘মিথ্যা’ অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করায় ওল্টুকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপরেই অভিযোগকারী খাসবাগুন্দা গ্রামের বাসিন্দা আদম ব্যাপারী রুনুর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে থাকে এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রুনু আইলহাঁস ও খাসকররা ইউনিয়নে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে ২০-২৫ জনের নিকট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। ওই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ভুক্তভোগীদের নানাভাবে হয়রানির পাশাপাশি হুমকি-ধমকি প্রয়োগ করেন অভিযুক্ত নান্নু। অভিযুক্ত রুনু (৪০) উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের খাসবাগুন্দা গ্রামের তাহের আলীর ছেলে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা।

নীয়রা জানায়, রুন্নু গত কয়েক বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার আগেই খাসকররা ও আইলহাঁস ইউনিয়ন থেকে ২০-২৫ জন যুবককে ওই দেশে নেওয়ার জন্য প্রতিজনের নিকট থেকে ৫ লাখ টাকা চুক্তি করেন। তারা টাকা পরিশোধ করলেও তাদের আর মালেশিয়ায় যাওয়া হয়নি। রুনু ভুক্তভোগীদের টাকাও ফেরত দেয়নি। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের নানান হয়রানি দিয়ে আসছেন। এমনি বিপাকে পড়েছেন একই উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবু বাক্কার ছেলে ওল্টু রহমান।

গত চার বছর আগে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য রুনুর নিকট ৫ লাখ টাকা দেন। চার বছর পার হলেও মালয়েশিয়ায় যাবার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে অভিযুক্ত রুনু গত ৩ বছর আগে খাসবাগুন্দা গ্রামের বাসিন্দা ও হাইওয়ে পুলিশের (ডিআইজি) আব্দুল মালেকের নিকট থেকে তার লিচু বাগান লিজ নেন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখিয়ে তার আধিপত্যও বৃদ্ধি পায়। ভুক্তভোগীরা তাদের পাওনা টাকা চাইতে গেলে পড়তে হয় নানান হুমকির মুখে। ওল্টু এক পর্যায়ে আদালতের দারস্থ হন। ওল্টু তার সেজো ভাইয়ের জামাই মিলন আদালতে বৈদেশিক আইনে মামলা করেন রুনুর বিরুদ্ধে। ওই মামলায় ৭ দিন জেল খাটেন। গত ১৩ মার্চ জামিনে বেরিয়ে তার লিজকৃত জমিতে থাকায় বৈদ্যুতিক মোটর চুরির অভিযোগ তুলে ওটুর বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে খাসকররা ফাঁড়ি পুলিশ শনিবার দিবাগত রাতে আটক করে।

ভুক্তভোগী ওল্টুর মেজো ভাই ঝণ্টু জানান, গত কয়েকবছর আগে রুনু তার নিজ ১ বিঘা জমি সাড়ে ৫ লাখ টাকা চুক্তিতে বিক্রয় বায়না করে। দীর্ঘদিন পার হলেও জমি রেজিস্ট্রি করে দেয় না। টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানান টালবাহানা করেন। তার এমন অপকর্মে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।

আরেক ভুক্তভোগী মিলন বলে, মালয়েশিয়ায় থাকাকালীন গুল্টুকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছি বিদেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। দীর্ঘদিন ঘুরিয়েও মালয়েশিয়ায় নিয়ে যেতে পারেনি। টাকা চাইতে গেলেও টাকা দেয় না। বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশের ডিআইজির ভয় দেখায়। ডিআইজিকে বলে ডাকাতি ও হত্যা মামলায় জেলে পাঠিয়ে দেবে। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রুনুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনে কল ঢোকেনি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

আলমডাঙ্গার খাসবাগুন্দার আদম ব্যাপারী রুনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ

বিদেশ পাঠানোর নামে কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’

আপলোড টাইম : ০৯:৪৮:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

আলমডাঙ্গা উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে আদম ব্যবসায়ীর কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় পাওনাদারকে পানির মোটর চুরির মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার ঘোলদাড়ি ফাঁড়ি পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ওল্টু রহমান নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে। পরে অর্ধশতাধিক গ্রামবাসী আলমডাঙ্গা থানা-পুলিশের নিকট ‘মিথ্যা’ অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করায় ওল্টুকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। এরপরেই অভিযোগকারী খাসবাগুন্দা গ্রামের বাসিন্দা আদম ব্যাপারী রুনুর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে থাকে এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রুনু আইলহাঁস ও খাসকররা ইউনিয়নে মালয়েশিয়ায় পাঠানোর নামে ২০-২৫ জনের নিকট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা। ওই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ভুক্তভোগীদের নানাভাবে হয়রানির পাশাপাশি হুমকি-ধমকি প্রয়োগ করেন অভিযুক্ত নান্নু। অভিযুক্ত রুনু (৪০) উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের খাসবাগুন্দা গ্রামের তাহের আলীর ছেলে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা।

নীয়রা জানায়, রুন্নু গত কয়েক বছর আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার আগেই খাসকররা ও আইলহাঁস ইউনিয়ন থেকে ২০-২৫ জন যুবককে ওই দেশে নেওয়ার জন্য প্রতিজনের নিকট থেকে ৫ লাখ টাকা চুক্তি করেন। তারা টাকা পরিশোধ করলেও তাদের আর মালেশিয়ায় যাওয়া হয়নি। রুনু ভুক্তভোগীদের টাকাও ফেরত দেয়নি। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের নানান হয়রানি দিয়ে আসছেন। এমনি বিপাকে পড়েছেন একই উপজেলার আইলহাঁস ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবু বাক্কার ছেলে ওল্টু রহমান।

গত চার বছর আগে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য রুনুর নিকট ৫ লাখ টাকা দেন। চার বছর পার হলেও মালয়েশিয়ায় যাবার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে অভিযুক্ত রুনু গত ৩ বছর আগে খাসবাগুন্দা গ্রামের বাসিন্দা ও হাইওয়ে পুলিশের (ডিআইজি) আব্দুল মালেকের নিকট থেকে তার লিচু বাগান লিজ নেন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখিয়ে তার আধিপত্যও বৃদ্ধি পায়। ভুক্তভোগীরা তাদের পাওনা টাকা চাইতে গেলে পড়তে হয় নানান হুমকির মুখে। ওল্টু এক পর্যায়ে আদালতের দারস্থ হন। ওল্টু তার সেজো ভাইয়ের জামাই মিলন আদালতে বৈদেশিক আইনে মামলা করেন রুনুর বিরুদ্ধে। ওই মামলায় ৭ দিন জেল খাটেন। গত ১৩ মার্চ জামিনে বেরিয়ে তার লিজকৃত জমিতে থাকায় বৈদ্যুতিক মোটর চুরির অভিযোগ তুলে ওটুর বিরুদ্ধে আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে খাসকররা ফাঁড়ি পুলিশ শনিবার দিবাগত রাতে আটক করে।

ভুক্তভোগী ওল্টুর মেজো ভাই ঝণ্টু জানান, গত কয়েকবছর আগে রুনু তার নিজ ১ বিঘা জমি সাড়ে ৫ লাখ টাকা চুক্তিতে বিক্রয় বায়না করে। দীর্ঘদিন পার হলেও জমি রেজিস্ট্রি করে দেয় না। টাকা ফেরত চাইতে গেলে নানান টালবাহানা করেন। তার এমন অপকর্মে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।

আরেক ভুক্তভোগী মিলন বলে, মালয়েশিয়ায় থাকাকালীন গুল্টুকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছি বিদেশে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। দীর্ঘদিন ঘুরিয়েও মালয়েশিয়ায় নিয়ে যেতে পারেনি। টাকা চাইতে গেলেও টাকা দেয় না। বিভিন্ন আওয়ামী লীগ নেতা ও পুলিশের ডিআইজির ভয় দেখায়। ডিআইজিকে বলে ডাকাতি ও হত্যা মামলায় জেলে পাঠিয়ে দেবে। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রুনুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোনে কল ঢোকেনি।