ইপেপার । আজ শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা ইসির অধীনে রাখার দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান কর্মসূচি

দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আরও কর্মসূচির ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১০:২৬:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে রাখার দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের অন্যান্য জেলার মতো চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসের সামনেও এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিস ও চারটি উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। কর্মসূচিতে তাঁরা এনআইডি সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই রাখার দাবি জানান।

চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসার আহমেদ আলী, সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার রাহুল রায়, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার সেখ মাসুম বিল্লাহ, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. নূর উল্লাহসহ নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে ৫ মার্চ বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবির বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো ঘোষণা না আসায় সারাদেশের মতো চুয়াডাঙ্গায়ও এই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি থেকে জানানো হয়েছে, দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই এনআইডি সেবা দিয়ে আসছে। তবে আগের সরকার এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার জন্য আইন সংশোধন করেছিল, যা কার্যকর হয়নি। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এনআইডি, জন্ম নিবন্ধন ও পাসপোর্ট সেবা একীভূত করে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এনআইডি সেবা নিজেদের অধীনে রাখতে চাইছেন ইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে মানববন্ধনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম কমিশনের (ইসি) অধীনে পুর্নবহাল না করলে আগামী ১৯ মার্চ থেকে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ভোটার আইডি কার্ড উপজেলা থেকে তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার শেখ মাসুম বিল্লাহ, সহকারী নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ ইমরান খান, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর শামিন হোসেন, আফরোজা খাতুন, রেশমা খাতুন, রাকিব হোসেন, আলমগীর হোসেন, অফিস সহায়ক ইদ্রিস আলি প্রমুখ। মানববন্ধনে উপজেলা নির্বাচন অফিসার শেখ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আগামী ১৮ মার্চের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ বাতিল করে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনে পুনর্বহাল করতে হবে। এর মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ১৯ মার্চ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসসহ সারা দেশের মাঠ পর্যায়ের সকল কার্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।’

উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা বলেন, এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীনেই নিরাপদ রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা নিরাপদ থাকবে। আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল আগামী নির্বাচনে জটিলতা সৃষ্টি ও দুর্নীতির সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্যে এনআইডি কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। ১৩ কোটি ভোটারের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে এবং দেশে গণতন্ত্র অক্ষুণ্ন রাখতে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকা জরুরি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা ইসির অধীনে রাখার দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান কর্মসূচি

দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আরও কর্মসূচির ঘোষণা

আপলোড টাইম : ১০:২৬:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে রাখার দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় দুই ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের অন্যান্য জেলার মতো চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসের সামনেও এই কর্মসূচি পালন করা হয়। বেলা ১১টা থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিস ও চারটি উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। কর্মসূচিতে তাঁরা এনআইডি সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনেই রাখার দাবি জানান।

চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিসার আহমেদ আলী, সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার রাহুল রায়, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসার সেখ মাসুম বিল্লাহ, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. নূর উল্লাহসহ নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত থেকে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে ৫ মার্চ বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবির বিষয়ে সরকারিভাবে কোনো ঘোষণা না আসায় সারাদেশের মতো চুয়াডাঙ্গায়ও এই কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি থেকে জানানো হয়েছে, দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন শুরু থেকেই এনআইডি সেবা দিয়ে আসছে। তবে আগের সরকার এটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার জন্য আইন সংশোধন করেছিল, যা কার্যকর হয়নি। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এনআইডি, জন্ম নিবন্ধন ও পাসপোর্ট সেবা একীভূত করে একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এনআইডি সেবা নিজেদের অধীনে রাখতে চাইছেন ইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

এদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে মানববন্ধনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কার্যক্রম কমিশনের (ইসি) অধীনে পুর্নবহাল না করলে আগামী ১৯ মার্চ থেকে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ভোটার আইডি কার্ড উপজেলা থেকে তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার শেখ মাসুম বিল্লাহ, সহকারী নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ ইমরান খান, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর শামিন হোসেন, আফরোজা খাতুন, রেশমা খাতুন, রাকিব হোসেন, আলমগীর হোসেন, অফিস সহায়ক ইদ্রিস আলি প্রমুখ। মানববন্ধনে উপজেলা নির্বাচন অফিসার শেখ মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আগামী ১৮ মার্চের মধ্যে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ বাতিল করে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনে পুনর্বহাল করতে হবে। এর মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে ১৯ মার্চ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাচন অফিসসহ সারা দেশের মাঠ পর্যায়ের সকল কার্যালয়ে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।’

উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তারা বলেন, এনআইডি কার্যক্রম ইসির অধীনেই নিরাপদ রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও তা নিরাপদ থাকবে। আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল আগামী নির্বাচনে জটিলতা সৃষ্টি ও দুর্নীতির সুযোগ তৈরির উদ্দেশ্যে এনআইডি কার্যক্রম অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। ১৩ কোটি ভোটারের তথ্য সুরক্ষিত রাখতে এবং দেশে গণতন্ত্র অক্ষুণ্ন রাখতে এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের অধীনেই থাকা জরুরি।