চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ক্যাশিয়ার উজ্জল বড়ুয়ার ‘আওয়ামী প্রভাব’
দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে গড়েছেন কোটি টাকার সম্পদ
- আপলোড টাইম : ০৬:২০:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
- / ১৯ বার পড়া হয়েছে
দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে চুয়াডাঙ্গা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ক্যাশিয়ার উজ্জ্বল বড়ুয়ার বিরুদ্ধে। তিনি দীর্ঘদিন কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিপুল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত থেকেও ‘মুখোশ পরে’ বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলায় কর্মরত রয়েছেন। এখানেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।
দাপ্তরিক একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ক্যাশিয়ার পদে দায়িত্বরত থাকাকালে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল আয় বহির্ভূত সম্পদ গড়েছেন উজ্জ্বল বড়ুয়া। প্রভাব বিস্তার করে নির্বাহী প্রকৌশলী থেকে অধস্তন, সবাইকে তটস্থ রাখতেন। কথায় কথায় সবাইকে সাবেক হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ আওয়ামী লীগের কিছু নেতার ভয় দেখাতেন। ফলে বাধ্য তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদন করেছিলেন কক্সবাজারের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘উজ্জল বড়ুয়া জনস্বাস্থ্যে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়েও প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কক্সবাজার জেলার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এসব পদের বলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ব্যবহার করেই অনিয়ম-দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন তিনি। ফলে একজন অফিস সহকারী হয়ে বিপুল সম্পদের মালিক বনে যান।’
লিখিত আবেদনে আরও বলা হয়, কক্সবাজার জেলায় কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের ইট, বালি ও সিমেন্ট সাপ্লাইয়ার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। অঘোষিতভাবে নিজের লোক দিয়ে বাগিয়ে নিতেন ঠিকাদারী প্রকল্প। একইসঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজে ব্যবহৃত মালামাল ল্যাবরেটরি টেস্টে পাঠালে সরকারি হিসেবের চাইতে অধিক টাকা দাবি করতেন উজ্জল বড়ুয়া। এভাবে ঠিকাদারদের জিম্মি করে বিপুল টাকা আয় করেছেন তিনি। তার পদোন্নতিতে সুপারিশ করেছিলেন নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দিন। বিপ্লব বড়ুয়া ও হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারাতি অফিস সহকারী থেকে ক্যাশিয়ার পদ বাগিয়ে নেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, উজ্জ্বল বড়ুয়া ২০১৭ সালে চাকরিতে যোগদানের আগে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করলেও বর্তমানে বিলাসবহুল দ্বিতল বাড়ির মালিক। এছাড়া তিনটি ট্রাক, একটি সিএনজি, দুটি দোকানসহ নামে-বেনামে বিপুল অর্থবিত্ত গড়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। দুর্নীতির বহু অভিযোগ ও আওয়ামী লীগের পদধারী হয়েও এখনো তিনি চুয়াডাঙ্গার ক্যাশিয়ার পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত উজ্জ্বল বড়ুয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা। ষড়যন্ত্র করে এসব ছড়ানো হচ্ছে। আমি যদি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতাম, তাহলে আমি চুয়াডাঙ্গায় কেন? বাড়ির আশেপাশে থাকতাম।’