ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন

সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সময়ে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি

সমীকরণ প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩১:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
  • / ৫১ বার পড়া হয়েছে

মাগুরায় শিশুসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। সারাদেশের ন্যায় গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে জেলা থেকে উপজেলায় প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসকল কর্মসূচিতে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুততম সময়ে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের উদ্যোগে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল ইফতারের পর বৈষম্যের বিরোধীরা শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও হুঁশিয়ারি জানিয়ে সরকারি কলেজ সড়কে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সদস্যসচিব সাফ্ফাতুল ইসলাম। তিনি মাগুরায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা এবং সারাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ নানা অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাফ্ফাতুল ইসলাম বলেন, ‘দেশজুড়ে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে ধর্ষকরা পার পেয়ে যাচ্ছে। সময় এসেছে, আমরা একসঙ্গে রাস্তায় নামব এবং দাবি আদায় করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘একজন ৮ বছরের শিশুও যদি নিরাপদ না থাকে, তাহলে আমাদের সমাজ কোথায় দাঁড়িয়ে? আজ যারা ধর্ষণ করছে, তারা জানে যে বিচার পেতে দীর্ঘসূত্রিতা হবে, প্রভাবশালী মহল তাদের রক্ষা করবে। আমরা এই অবস্থা আর মেনে নেব না। ধর্ষকদের প্রকাশ্যে শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।’

সাফ্ফাতুল ইসলাম দাবি করেন, ‘শুধু ধর্ষণ নয়, সারাদেশে হত্যা, নিপীড়ন, দুর্নীতি, এবং বিচারহীনতার বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। যারা এই অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা চাই, দ্রুততম সময়ে বিচারের মাধ্যমে এসব অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর হোক।’

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম অর্ক, যুগ্ম আহ্বায়ক সিরাজুম মনিরা, জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ সজিবুল ইসলাম, রেজাউল বাসার প্লাবন ও সদর উপজেলা শাখার সদস্যসচিব ফাহিম উদ্দিন মভিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মাহবুব ইসলাম আকাশ, সানজিদা তাবাসসুম মিথীন, তাসলিম আল মাহমুদ, আব্দুল্লাহ আল কাফি, মোহাম্মদ লাবিব মণ্ডল, জান্নাতুল বাসার শ্রাবণ, জান্নাতুল মাওয়া ও আঞ্জুম হাবিবা।

এদিকে, মাগুরার ৮ বছরের শিশুর ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠন, উদীচী চুয়াডাঙ্গা জেলা সংসদ ও সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী এক মানববন্ধনের আয়োজন করে। গতকাল শহরের বড়বাজারের শহিদ হাসান চত্বরে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে, যা বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফল। অপরাধীরা ক্ষমতা ও অর্থের জোরে পার পেয়ে যায়, ফলে অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়ছে।’ বক্তারা আরও বলেন, ‘এই নির্মম ঘটনার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ১৮০ দিনের দীর্ঘ অপেক্ষার দরকার নেই, দ্রুততম সময়ে বিচার সম্পন্ন করতে হবে এবং ধর্ষণের শাস্তি প্রকাশ্যে ফায়ারিং স্কোয়াডে কার্যকর করতে হবে, যেন সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়।’
উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মালিক, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী জোয়ার্দার, সদস্য আলাউদ্দিন ওমর, উদীচী চুয়াডাঙ্গা জেলা সংসদের সভাপতি হাবীবী জহির রায়হান, মাসুদ আরিফ মানু, সদস্য শেখ আসমা হেনা চুমকি, চর্চায়ন সদস্য কবি রিগ্যান এসকান্দার, হেলেনা পারভীন, সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাইফুল ইসলাম, লোকমর্চার কানিজ সুলতানা ও মুক্তার বাউল। মানববন্ধনে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অপর দিকে, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গার কমলাপুর পিটিআই (প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট)-এর প্রশিক্ষণার্থীরা মানববন্ধন করেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পিটিআইয়ের সামনে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলেন, ‘সম্প্রতি ৮ বছরের শিশুর ধর্ষণসহ নারী ও শিশুদের ওপর যে নিকৃষ্টতম নির্যাতন চলছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আমরা মানববন্ধন করছি। আমরা শিশুদের শিক্ষা দিচ্ছি, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

প্রশিক্ষণার্থীরা বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচারে কোনো গড়িমসি করা যাবে না। আইনি ব্যবস্থা কঠোর হতে হবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। ধর্ষণের শাস্তি প্রকাশ্যে কার্যকর করতে হবে, যেন এটি অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।’ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন শহিদ উল্লাহ, বিপাশা, আনিকা শারমিলা কৃপা, আকাশসহ চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন শিক্ষকমণ্ডলী। মানববন্ধনে প্রশিক্ষণার্থীরা ‘এক দফা, এক দাবি- জনসমক্ষে ধর্ষকের ফাঁসি’, ‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করো’, ‘নিরাপদ সমাজ চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত পোস্টার হাতে প্রতিবাদ জানান।

অন্যদিকে, দেশব্যাপী নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে শহরের পায়রা চত্বরে সামাজিক ঐক্যজোটের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে মানবকল্যাণ সংঘসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যোগ দেন। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন সামাজিক ঐক্যজোটের সভাপতি গাউস গোর্কি, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আনোয়ার মাসুম, সরকারি কেসি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. বিএম রেজাউল করিম, সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সুশেন্দু ভৌমিক, অ্যাড. শেখ সেলিম, বারের সদস্য অ্যাড. মিল্টন, আতিকা ইসলাম, জাহান লিমন প্রমুখ। বক্তারা দেশব্যাপী ধর্ষণ বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে বিভিন্ন সংগঠনের মানববন্ধন

সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত সময়ে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি

আপলোড টাইম : ০৫:৩১:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

মাগুরায় শিশুসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। সারাদেশের ন্যায় গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে জেলা থেকে উপজেলায় প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসকল কর্মসূচিতে ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুততম সময়ে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের উদ্যোগে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। গতকাল ইফতারের পর বৈষম্যের বিরোধীরা শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ ও হুঁশিয়ারি জানিয়ে সরকারি কলেজ সড়কে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সদস্যসচিব সাফ্ফাতুল ইসলাম। তিনি মাগুরায় ৮ বছরের শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা এবং সারাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ নানা অপরাধ বৃদ্ধির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাফ্ফাতুল ইসলাম বলেন, ‘দেশজুড়ে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে ধর্ষকরা পার পেয়ে যাচ্ছে। সময় এসেছে, আমরা একসঙ্গে রাস্তায় নামব এবং দাবি আদায় করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘একজন ৮ বছরের শিশুও যদি নিরাপদ না থাকে, তাহলে আমাদের সমাজ কোথায় দাঁড়িয়ে? আজ যারা ধর্ষণ করছে, তারা জানে যে বিচার পেতে দীর্ঘসূত্রিতা হবে, প্রভাবশালী মহল তাদের রক্ষা করবে। আমরা এই অবস্থা আর মেনে নেব না। ধর্ষকদের প্রকাশ্যে শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।’

সাফ্ফাতুল ইসলাম দাবি করেন, ‘শুধু ধর্ষণ নয়, সারাদেশে হত্যা, নিপীড়ন, দুর্নীতি, এবং বিচারহীনতার বিরুদ্ধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে। যারা এই অপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা চাই, দ্রুততম সময়ে বিচারের মাধ্যমে এসব অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কার্যকর হোক।’

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম অর্ক, যুগ্ম আহ্বায়ক সিরাজুম মনিরা, জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ সজিবুল ইসলাম, রেজাউল বাসার প্লাবন ও সদর উপজেলা শাখার সদস্যসচিব ফাহিম উদ্দিন মভিন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মাহবুব ইসলাম আকাশ, সানজিদা তাবাসসুম মিথীন, তাসলিম আল মাহমুদ, আব্দুল্লাহ আল কাফি, মোহাম্মদ লাবিব মণ্ডল, জান্নাতুল বাসার শ্রাবণ, জান্নাতুল মাওয়া ও আঞ্জুম হাবিবা।

এদিকে, মাগুরার ৮ বছরের শিশুর ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠন, উদীচী চুয়াডাঙ্গা জেলা সংসদ ও সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী এক মানববন্ধনের আয়োজন করে। গতকাল শহরের বড়বাজারের শহিদ হাসান চত্বরে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘দেশে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে, যা বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফল। অপরাধীরা ক্ষমতা ও অর্থের জোরে পার পেয়ে যায়, ফলে অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়ছে।’ বক্তারা আরও বলেন, ‘এই নির্মম ঘটনার দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ১৮০ দিনের দীর্ঘ অপেক্ষার দরকার নেই, দ্রুততম সময়ে বিচার সম্পন্ন করতে হবে এবং ধর্ষণের শাস্তি প্রকাশ্যে ফায়ারিং স্কোয়াডে কার্যকর করতে হবে, যেন সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়।’
উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মালিক, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী জোয়ার্দার, সদস্য আলাউদ্দিন ওমর, উদীচী চুয়াডাঙ্গা জেলা সংসদের সভাপতি হাবীবী জহির রায়হান, মাসুদ আরিফ মানু, সদস্য শেখ আসমা হেনা চুমকি, চর্চায়ন সদস্য কবি রিগ্যান এসকান্দার, হেলেনা পারভীন, সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সাইফুল ইসলাম, লোকমর্চার কানিজ সুলতানা ও মুক্তার বাউল। মানববন্ধনে বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অপর দিকে, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গার কমলাপুর পিটিআই (প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট)-এর প্রশিক্ষণার্থীরা মানববন্ধন করেন। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পিটিআইয়ের সামনে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলেন, ‘সম্প্রতি ৮ বছরের শিশুর ধর্ষণসহ নারী ও শিশুদের ওপর যে নিকৃষ্টতম নির্যাতন চলছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আমরা মানববন্ধন করছি। আমরা শিশুদের শিক্ষা দিচ্ছি, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

প্রশিক্ষণার্থীরা বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতনের বিচারে কোনো গড়িমসি করা যাবে না। আইনি ব্যবস্থা কঠোর হতে হবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। ধর্ষণের শাস্তি প্রকাশ্যে কার্যকর করতে হবে, যেন এটি অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে।’ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন শহিদ উল্লাহ, বিপাশা, আনিকা শারমিলা কৃপা, আকাশসহ চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন শিক্ষকমণ্ডলী। মানববন্ধনে প্রশিক্ষণার্থীরা ‘এক দফা, এক দাবি- জনসমক্ষে ধর্ষকের ফাঁসি’, ‘নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করো’, ‘নিরাপদ সমাজ চাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত পোস্টার হাতে প্রতিবাদ জানান।

অন্যদিকে, দেশব্যাপী নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে শহরের পায়রা চত্বরে সামাজিক ঐক্যজোটের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে মানবকল্যাণ সংঘসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যোগ দেন। মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন সামাজিক ঐক্যজোটের সভাপতি গাউস গোর্কি, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আনোয়ার মাসুম, সরকারি কেসি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. বিএম রেজাউল করিম, সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সুশেন্দু ভৌমিক, অ্যাড. শেখ সেলিম, বারের সদস্য অ্যাড. মিল্টন, আতিকা ইসলাম, জাহান লিমন প্রমুখ। বক্তারা দেশব্যাপী ধর্ষণ বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।