ইপেপার । আজ সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

ধর্ষকদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:২৪:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

সারাদেশে নারী শ্লীলতাহানি ও হয়রানি বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং মাগুরায় শিশু ধর্ষণকাণ্ডের অপরাধীদের ফাঁসি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গায় জেলা মহিলা দল, জীবননগরে বিভিন্ন সংগঠন ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে এই মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের কর্মসূচি: ‘রুখে দিতে ধর্ষণ, শুরু হোকে গর্জন’ স্লোগানে চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আসিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে এবং সারাদেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। গতকাল দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব ও মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনা। তিনি বলেন, ‘দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে, যা উদ্বেগজনক। শিশু, কিশোরী থেকে শুরু করে নারীরা কোথাও নিরাপদ নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন জেলা মহিলা দলের সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর শেফালী বেগম, সাধারণ সম্পাদক জাহানারা পারভীন, যুগ্ম সম্পাদক সালমা জাহান পারুল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরীন পারভীন, আলমডাঙ্গা উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক বন্নী এবং রহিমা বেগম। বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু অপরাধীরা অনেক সময় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাচ্ছে না। এতে সমাজে এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। তাই ধর্ষকদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা। বক্তারা আরও বলেন, ধর্ষণের মতো অপরাধ রুখতে কেবল আইনি ব্যবস্থাই যথেষ্ট নয়, বরং সমাজের সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

জীবননগর:
‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ধর্ষকের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, ধর্ষণের বিচার প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডসহ নানা স্লোগান লেখা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে জীবননগরে নারী ও শিশু ধর্ষণ বন্ধ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জীবননগর উপজেলাবাসীর আয়োজনে জীবননগর পৌর শহরে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলে বক্তব্য দেন জীবননগর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক সোহেল পারভেজ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন বিল্লাহ, সদস্যসচিব রিয়াজুর রহমান, যুগ্ম সদস্যসচিব শিফাত আল শাফায়েত, মুখ্য সংগঠক ওয়াকিল আহম্মেদ মুত্তাকিন, সংগঠক পলাশ, জীবননগর পৌর জামায়াতের আমির ফিরোজ হোসেন, থানা নায়েবে আমির হাফেজ বেলাল হোসাইন, জীবননগর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রিমন হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন জীবননগর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান, খেলাফত মজলিসের সদস্য সাঈদ আহম্মেদ, প্রাইড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক পারভেজ রানা, শিক্ষক মামুন হোসেন প্রমুখ।

মেহেরপুর:
সারাদেশে নারী শ্লীলতাহানি ও হয়রানি বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং মাগুরায় শিশু ধর্ষণকাণ্ডের অপরাধীদের ফাঁসি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বেলা ৩টায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ইসমাইল হাসান শিমুলের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি আতিকুর রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আতিকুর রহমান বলেন, ‘ধর্ষকের শাস্তি সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। তাহলে কেউ আর এই দুঃসাহস দেখাবে না। ওদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ বিচার নিয়ে কোনো তালবাহানা চলবে না। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এ ধরনের জঘন্য অপরাধকে কখনোই প্রশ্রয় দেবে না। অনতিবিলম্বে ধর্ষকদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ধারণ করেন, যেখানে লেখা ছিল ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চাই’ ইত্যাদি। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবদুল ওয়াহেদ, ইসমাইল হাসান শিমুলসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

ধর্ষকদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি

আপলোড টাইম : ১২:২৪:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

সারাদেশে নারী শ্লীলতাহানি ও হয়রানি বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং মাগুরায় শিশু ধর্ষণকাণ্ডের অপরাধীদের ফাঁসি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গায় জেলা মহিলা দল, জীবননগরে বিভিন্ন সংগঠন ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে এই মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের কর্মসূচি: ‘রুখে দিতে ধর্ষণ, শুরু হোকে গর্জন’ স্লোগানে চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাগুরায় ৮ বছরের শিশু আসিয়াকে ধর্ষণের পর হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে এবং সারাদেশে ধর্ষণের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। গতকাল দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব ও মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনা। তিনি বলেন, ‘দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে, যা উদ্বেগজনক। শিশু, কিশোরী থেকে শুরু করে নারীরা কোথাও নিরাপদ নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন জেলা মহিলা দলের সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর শেফালী বেগম, সাধারণ সম্পাদক জাহানারা পারভীন, যুগ্ম সম্পাদক সালমা জাহান পারুল, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরীন পারভীন, আলমডাঙ্গা উপজেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক বন্নী এবং রহিমা বেগম। বক্তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু অপরাধীরা অনেক সময় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাচ্ছে না। এতে সমাজে এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে। তাই ধর্ষকদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা। বক্তারা আরও বলেন, ধর্ষণের মতো অপরাধ রুখতে কেবল আইনি ব্যবস্থাই যথেষ্ট নয়, বরং সমাজের সর্বস্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। কর্মসূচিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা মহিলা দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

জীবননগর:
‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ধর্ষকের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, ধর্ষণের বিচার প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডসহ নানা স্লোগান লেখা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে জীবননগরে নারী ও শিশু ধর্ষণ বন্ধ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জীবননগর উপজেলাবাসীর আয়োজনে জীবননগর পৌর শহরে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলে বক্তব্য দেন জীবননগর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক সোহেল পারভেজ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদুল হক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন বিল্লাহ, সদস্যসচিব রিয়াজুর রহমান, যুগ্ম সদস্যসচিব শিফাত আল শাফায়েত, মুখ্য সংগঠক ওয়াকিল আহম্মেদ মুত্তাকিন, সংগঠক পলাশ, জীবননগর পৌর জামায়াতের আমির ফিরোজ হোসেন, থানা নায়েবে আমির হাফেজ বেলাল হোসাইন, জীবননগর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রিমন হোসেন, বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন জীবননগর উপজেলা শাখার সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান, খেলাফত মজলিসের সদস্য সাঈদ আহম্মেদ, প্রাইড প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক পারভেজ রানা, শিক্ষক মামুন হোসেন প্রমুখ।

মেহেরপুর:
সারাদেশে নারী শ্লীলতাহানি ও হয়রানি বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং মাগুরায় শিশু ধর্ষণকাণ্ডের অপরাধীদের ফাঁসি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মেহেরপুর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বেলা ৩টায় ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মেহেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ইসমাইল হাসান শিমুলের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন মেহেরপুর জেলা শাখার সভাপতি আতিকুর রহমান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে আতিকুর রহমান বলেন, ‘ধর্ষকের শাস্তি সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। তাহলে কেউ আর এই দুঃসাহস দেখাবে না। ওদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ বিচার নিয়ে কোনো তালবাহানা চলবে না। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এ ধরনের জঘন্য অপরাধকে কখনোই প্রশ্রয় দেবে না। অনতিবিলম্বে ধর্ষকদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ধারণ করেন, যেখানে লেখা ছিল ‘আমার সোনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চাই’ ইত্যাদি। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবদুল ওয়াহেদ, ইসমাইল হাসান শিমুলসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা।