ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫
ঝিনাইদহের তৃণমূলে জামায়াত ও বিএনপি মুখোমুখি

জামায়াতের নারী কর্মীদের ওপর হামলায় বিএনপি সমর্থক গ্রেপ্তার

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ:
  • আপলোড টাইম : ১২:২১:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করলেও তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঝিনাইদহের তৃণমূলে মতবিরোধ এমনকি হামলার ঘটনাও ঘটেছে। ফলে ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত ও বিএনপি মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল নেতাদের এহেন কর্মকাণ্ডে অনেকটাই বিব্রত দুটি সংগঠনের জেলা নেতৃবৃন্দ। গত শনিবার ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের কুল্লোপাড়া গ্রামে জামায়াতের নারী কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এ নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দোষারোপ করে মহেশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন জামায়াতের নারী কর্মী হাসিনা খাতুন। কেন্দ্রীয় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান হামলার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছেন। প্রতিবাদে মহেশপুরের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক নারী সমাবেশ করেছে জামায়াত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরেও মহেশপুর সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতের নারী কর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এতে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে জামায়াতে ইসলামীর নারী কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় গতকাল সোহেল হোসেন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল হোসেন মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের কুল্লোপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে ও স্থানীয় বিএনপি সমর্থক।

জানা গেছে, গত ৮ মার্চ শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের কুল্লোপাড়া গ্রামের খায়রুল ইসলামের বাড়িতে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। জামায়াতের অভিযোগ, সভা চলাকালে স্থানীয় হায়াত আলীর ছেলে ঝুমুর, ওমর আলীর ছেলে আলামিন, আব্দুল কাদেরের ছেলে সোহেল, আব্দুল লতিফের ছেলে সাহেব আলী ও ফকির মিয়ার ছেলে আশরাফুলের নেতৃত্বে কয়েকজন হামলা চালায়। হামলায় আহত হন হাসিনা খাতুন নামে জামায়াতের এক নারী কর্মী। বিষয়টি উপজেলা থেকে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কানে পৌঁছে যায়।

মহেশপুর উপজেলা বিএনপিও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নয় বলে তারা দাবি করেছেন। এদিকে ভিজিএফ কার্ড বণ্টনে অসচ্ছতার অভিযোগ এনে সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদে চড়াও হন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেত্রী আম্বিয়া খাতুন লাকির ওপর তেড়ে যান জামায়াত নেতারা। এসময় ইউনিয়ন জামায়াতের আমির অ্যাড. আকরাম ও সেক্রেটারি ইউনুস আলী উপস্থিত ছিলেন। আবার বাজার কমিটি গঠন নিয়ে সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিতদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এভাবে প্রায় সারা জেলার তৃণমূলে কম-বেশি মতানৈক্য সৃষ্টি হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল জানান, ‘রাজপথে আমরা ফ্যাসিবাদ শক্তিকে হটিয়েছি। বিএনপির সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।’ তিনি বলেন, তৃণমূলে ফ্যাসিস্টরা বিভিন্ন দলে ঢুকে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বলে আমি মনে করি। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই। তৃণমূলে যা ঘটছে, সেটা হয়ত ভুল বোঝাবুঝি। একটি মহল আমাদের মধ্যে বিবাদ বা অনৈক্য সৃষ্টির জন্য হয়ত এটা করছে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

ঝিনাইদহের তৃণমূলে জামায়াত ও বিএনপি মুখোমুখি

জামায়াতের নারী কর্মীদের ওপর হামলায় বিএনপি সমর্থক গ্রেপ্তার

আপলোড টাইম : ১২:২১:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

রাজপথে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন করলেও তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ঝিনাইদহের তৃণমূলে মতবিরোধ এমনকি হামলার ঘটনাও ঘটেছে। ফলে ঝিনাইদহের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত ও বিএনপি মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। তৃণমূল নেতাদের এহেন কর্মকাণ্ডে অনেকটাই বিব্রত দুটি সংগঠনের জেলা নেতৃবৃন্দ। গত শনিবার ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের কুল্লোপাড়া গ্রামে জামায়াতের নারী কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এ নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দোষারোপ করে মহেশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন জামায়াতের নারী কর্মী হাসিনা খাতুন। কেন্দ্রীয় জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান হামলার ঘটনায় বিবৃতি দিয়েছেন। প্রতিবাদে মহেশপুরের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক নারী সমাবেশ করেছে জামায়াত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরেও মহেশপুর সরকারি কলেজ মাঠে জামায়াতের নারী কর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এতে নড়েচড়ে বসে স্থানীয় প্রশাসন।

এদিকে জামায়াতে ইসলামীর নারী কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় গতকাল সোহেল হোসেন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল হোসেন মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের কুল্লোপাড়া গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে ও স্থানীয় বিএনপি সমর্থক।

জানা গেছে, গত ৮ মার্চ শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের কুল্লোপাড়া গ্রামের খায়রুল ইসলামের বাড়িতে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। জামায়াতের অভিযোগ, সভা চলাকালে স্থানীয় হায়াত আলীর ছেলে ঝুমুর, ওমর আলীর ছেলে আলামিন, আব্দুল কাদেরের ছেলে সোহেল, আব্দুল লতিফের ছেলে সাহেব আলী ও ফকির মিয়ার ছেলে আশরাফুলের নেতৃত্বে কয়েকজন হামলা চালায়। হামলায় আহত হন হাসিনা খাতুন নামে জামায়াতের এক নারী কর্মী। বিষয়টি উপজেলা থেকে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের কানে পৌঁছে যায়।

মহেশপুর উপজেলা বিএনপিও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নয় বলে তারা দাবি করেছেন। এদিকে ভিজিএফ কার্ড বণ্টনে অসচ্ছতার অভিযোগ এনে সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদে চড়াও হন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেত্রী আম্বিয়া খাতুন লাকির ওপর তেড়ে যান জামায়াত নেতারা। এসময় ইউনিয়ন জামায়াতের আমির অ্যাড. আকরাম ও সেক্রেটারি ইউনুস আলী উপস্থিত ছিলেন। আবার বাজার কমিটি গঠন নিয়ে সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নে বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিতদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়। এভাবে প্রায় সারা জেলার তৃণমূলে কম-বেশি মতানৈক্য সৃষ্টি হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল আওয়াল জানান, ‘রাজপথে আমরা ফ্যাসিবাদ শক্তিকে হটিয়েছি। বিএনপির সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই।’ তিনি বলেন, তৃণমূলে ফ্যাসিস্টরা বিভিন্ন দলে ঢুকে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বলে আমি মনে করি। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনা বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই। তৃণমূলে যা ঘটছে, সেটা হয়ত ভুল বোঝাবুঝি। একটি মহল আমাদের মধ্যে বিবাদ বা অনৈক্য সৃষ্টির জন্য হয়ত এটা করছে।’