আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ও ডাউকী ইউনিয়ন বিএনপির পৃথক উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বেলগাছি ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে অনুষ্ঠিত ইফতার ও আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বেলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমজাদ হোসেন এবং ডাউকী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দার আলীর সভাপতিত্বে বাদেমাজু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পৃথক ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘দেশের সংকটময় মুহূর্তে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি সবসময় মানুষের পাশে থেকেছে। রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষায় আমরা সকলে মিলে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করে আসছি। রমজানে ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত সমাজ আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’ তিনি বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সৌহার্দ্য বজায় রেখে দল ও দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেন।

তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্টে স্বৈরাচারের পতন হলেও তাদের দোসররা ঘাপটি মেরে বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শহীদ জিয়ার আদর্শ ও তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। ঈদের পর থেকে ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে আমরা মাঠে নামতে চাই। পাড়া-মহল্লা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, পৌর, থানা পর্যায়ে আমার সকল স্থানে পৌঁছাতে চাই। মানুষের কথা শুনতে চাই, তাদের জন্য কাজ করতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘পতিত সরকারের দোসররা যেভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করেছিল, বিএনপির নেতা-কর্মীদের তার বিপরীত কাজ করে নিজ নিজ এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল। একতা ও নম্রতাই দলের নেতা-কর্মীদের পরিচয় হয়ে উঠতে হবে। বিগত ১৬ বছরে আমরা নিপীড়িত হয়েছি। এখন ফ্যাসিস্ট শাসনের পতনের পর আমাদের উচিত বিএনপির ভাবমূর্তি সাধারণ মানুষের হৃদয়ে গড়ে তোলা। আমাদের মানুষের আশা ও ভরসার প্রতীক হতে হবে। আমরা যদি ফ্যাসিস্ট সরকারের নেতাদের মতো আচরণ করি, তাহলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই ব্যহত হবে।’

শরীফুজ্জামান আরও বলেন, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করব, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকব। কেউ অন্যায় পথে হাঁটলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমাদের লড়াই গণতন্ত্রের লড়াই। তারেক রহমানকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আনার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য তৃণমূল পর্যায়ে দলকে আরও সংগঠিত করতে হবে।’

ইফতার ও দোয়া মাহফিলে শরীফুজ্জামান বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘বছরের পর বছর তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম জিয়াকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে তাকে পতিত স্বৈরাচারের সরকার কর্তৃক বন্দি করে রাখা হয়েছিল। সেই স্বৈরাচারের পতনের পর বেগম জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য যেতে দেয়া হয়েছে। দেশের মানুষের জন্য সারাজীবন কাজ করেছেন।’ এসময় তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন।

ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিণ্টু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির নেতা এমদাদুল হক ডাবু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মকবুল হোসেন, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক বকুল, আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মীর উজ্জ্বল হোসেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ইকরামুল হক ইকরা, জেলা ছাত্রদলের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান শুভ, আলমডাঙ্গা পৌর যুবদলের সদস্যসচিব সাইফুল আলম কনক, যুগ্ম আহ্বায়ক হাফিজুল ইসলাম ও ডাউকী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সালাম সিরাজী।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আলমডাঙ্গা উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইমদাদুল হক ইমদাদ, চুয়াডাঙ্গা পৌর সেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রুবেল হাসান ও আলমডাঙ্গা পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আতিক হাসান রিংকু। বেলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির ইফতার মাহফিল ও সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আখতার হোসেন জোয়ার্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা যুবদলের সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক চৌধুরী আলম বাবু, বেলগাছি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাসেল আহমেদ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব রাজু আহমেদ প্রমুখ।