রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে ২০ বছরের বন্ধুত্বের করুণ পরিণতি খুন
কান্না থামছে না রফিকের বৃদ্ধা মায়ের
- আপলোড টাইম : ১০:০৯:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
- / ৬১ বার পড়া হয়েছে
রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলি হয়ে তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতির মাঠে ২০ বছরের বন্ধুত্বের করুণ পরিণতি ঘটল বন্ধুর হাতেই প্রাণ হারানোর ঘটনায়। খুন হলেন বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক। একসময় মিলন ও রফিক ছিলেন অবিচ্ছেদ্য বন্ধু। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারণে সেই বন্ধুত্ব রূপ নেয় শত্রুতায়, যার শেষ পরিণতি হলো মৃত্যু। কথাগুলো বলছিলেন দর্শনা থানা যুবদলের সদস্যসচিব সাজেদুর রহমান মিলন। এদিকে, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে চরম দুর্দশায় পড়েছে রফিকের পরিবার। তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে দুই ছেলেকে হারানোর কষ্টে থামছে না নিহত রফিকের ৯০ বছরের বৃদ্ধা মায়ের কান্না।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দর্শনা থানার তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির রাজনীতিতে একসঙ্গে উত্থান হয়েছিল বর্তমান (বহিষ্কৃত) সভাপতি মিলন ও বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নিহত রফিকুল ইসলামের। তিতুদহ গ্রামের বাসিন্দারা জানান, একসময় মিলন ও রফিক এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে সবাই তাদের আপন ভাই বলেই মনে করত। সারাদিন একসঙ্গে থাকা, খাওয়া-সবই করতেন একসঙ্গে। তবে ২০২২ সালে তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের শুরু হয়। সেই দ্বন্দ্বের জেরে একসময় তারা একে অপরের শত্রুতে পরিণত হন, যা শেষ পর্যন্ত রফিকের হত্যার মাধ্যমে নিষ্ঠুর পরিণতি লাভ করল।
দর্শনা থানা যুবদলের সদস্যসচিব সাজেদুর রহমান মিলন বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই তাদের দুজনকে একসঙ্গে চলাফেরা করতে দেখেছি। কিন্তু কী কারণে তাদের মধ্যে এমন শত্রুতা সৃষ্টি হলো, তা জানি না। বন্ধুত্বের এমন পরিণতি সত্যিই দুঃখজনক।’ তিতুদহ গ্রামের একাধিক বাসিন্দা বলেন, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণেই এক সময়কার ঘনিষ্ঠ দুই বন্ধু চিরশত্রুতে পরিণত হলো, যার পরিণতি এক বন্ধুর হাতে আরেক বন্ধুর নির্মম মৃত্যু। এটি নষ্ট রাজনীতির ভয়াবহ কুফল।’
নিহত রফিক তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন। তার সেজো ভাই চার বছর আগে সরোজগঞ্জ বাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। আর ছোট ভাই শফিক একই ঘটনায় সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে বর্তমানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এই ঘটনা শুধু রফিকের পরিবারেই নয়, পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।