ইপেপার । আজ শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫

তিতুদহে ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি নেতাকে হত্যার ঘটনা

জড়িত তিন আসামি গ্রেপ্তার, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৫:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার তিতুদহে ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি দেশীয় তৈরি চাইনিজ কুড়াল, ৩টি ধারালো হাসুয়া ও ৫টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়। এর আগে নিহতর স্ত্রী নাহিদা খাতুন মুক্তি বাদী হয়ে দর্শনা থানায় ধারা-১৪৩/৩২৩/ ৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/১১৪/৩৪ পেনাল কোডে একটি মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নম্বর ০৭। এরপর গতকাল রোববার পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে দর্শনার থানার গিরিশনগর গ্রামের মাঠ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দর্শনা থানার হুলিয়ামারী গ্রামের মৃত শরিফ উদ্দিনের ছেলে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক তসলিমুজ্জামান সাগর মেম্বার (৪৩), গিরিশনগর গ্রামের আব্দুল খালেক ত্রিপুরার ছেলে বিল্লাল হোসেন মোল্লা (৫০), এবং গিরিশনগর গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে আছের উদ্দিন মান্দার (৪২)। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা পুলিশ জানায়, তিতুদহে ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্র নাহিদা খাতুন মুক্তি বাদী হয়ে দর্শনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরোও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এরপর পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনা করে গিরিশনগর গ্রামের ফাঁকা মাঠের মধ্যে থেকে ঘটনার সাথে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি দেশীয় তৈরি চাইনিজ কুড়াল, ৩টি ধারালো হাসুয়া এবং ৫টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যহত আছে।

দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদ তিতুমীর বলেন, গ্রেপ্তার তিন আসামিকে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক (৫০) নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। স্থানীয়রা জানান, ভিজিএফ-এর কার্ড নিয়ে এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি, জামায়াত ও বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। ইউনিয়নে মাত্র ১ হাজার ৬৫০টি কার্ড বরাদ্দ এসেছিল। সেই কার্ড ভাগাভাগি করতে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বৈঠকের উদ্যোগ নেন। আমন্ত্রণ জানানো হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা, জামায়াত ও বিএনপিকে। তবে বৈঠকের আগেই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন গ্রুপ ও সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ বাধে। এসময় প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে রফিকসহ তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এরপরই উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি আঘাতে ঘটনাস্থলেই ইউনিয়ন বিএনপি নেতা রফিক নিহত হন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

তিতুদহে ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি নেতাকে হত্যার ঘটনা

জড়িত তিন আসামি গ্রেপ্তার, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

আপলোড টাইম : ০৯:১৫:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

চুয়াডাঙ্গার তিতুদহে ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি দেশীয় তৈরি চাইনিজ কুড়াল, ৩টি ধারালো হাসুয়া ও ৫টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়। এর আগে নিহতর স্ত্রী নাহিদা খাতুন মুক্তি বাদী হয়ে দর্শনা থানায় ধারা-১৪৩/৩২৩/ ৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/১১৪/৩৪ পেনাল কোডে একটি মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নম্বর ০৭। এরপর গতকাল রোববার পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে দর্শনার থানার গিরিশনগর গ্রামের মাঠ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দর্শনা থানার হুলিয়ামারী গ্রামের মৃত শরিফ উদ্দিনের ছেলে তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক তসলিমুজ্জামান সাগর মেম্বার (৪৩), গিরিশনগর গ্রামের আব্দুল খালেক ত্রিপুরার ছেলে বিল্লাল হোসেন মোল্লা (৫০), এবং গিরিশনগর গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে আছের উদ্দিন মান্দার (৪২)। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা পুলিশ জানায়, তিতুদহে ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্র নাহিদা খাতুন মুক্তি বাদী হয়ে দর্শনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে ৩৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরোও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এরপর পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার সাথে জড়িত প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন অভিযান পরিচালনা করে গিরিশনগর গ্রামের ফাঁকা মাঠের মধ্যে থেকে ঘটনার সাথে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। সময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি দেশীয় তৈরি চাইনিজ কুড়াল, ৩টি ধারালো হাসুয়া এবং ৫টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে অভিযান অব্যহত আছে।

দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদ তিতুমীর বলেন, গ্রেপ্তার তিন আসামিকে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার ভিজিএফের কার্ড ভাগাভাগি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিতুদহ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক (৫০) নিহত হন। ওই ঘটনায় আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। স্থানীয়রা জানান, ভিজিএফ-এর কার্ড নিয়ে এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধি, জামায়াত ও বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে অসন্তোষ ছিল। ইউনিয়নে মাত্র ১ হাজার ৬৫০টি কার্ড বরাদ্দ এসেছিল। সেই কার্ড ভাগাভাগি করতে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বৈঠকের উদ্যোগ নেন। আমন্ত্রণ জানানো হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা, জামায়াত ও বিএনপিকে। তবে বৈঠকের আগেই ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিলন গ্রুপ ও সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ বাধে। এসময় প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে রফিকসহ তার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এরপরই উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়ি আঘাতে ঘটনাস্থলেই ইউনিয়ন বিএনপি নেতা রফিক নিহত হন।