চুয়াডাঙ্গায় পবিত্র রমজানের প্রথম জুমায় মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের ঢল
- আপলোড টাইম : ০৫:৫০:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
- / ১৭ বার পড়া হয়েছে
গত শনিবার তারাবি নামাজের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজানের আনুষ্ঠানিকতা। গতকাল শুক্রবার রমজানের প্রথম জুমার নামাজে চুয়াডাঙ্গার সব মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নামে। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সী মুসল্লিরা পাঞ্জাবি-পাজামা ও টুপি পরে মসজিদে আসেন। রমজানের প্রথম জুমায় প্রতিটি মসজিদেই এ মাসের গুরুত্ব ও ফজিলতের বিষয় আলোচনা করা হয়। গতকাল জুমার সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা মডেল মসজিদ, পৌর মডেল মসজিদ, বড় বাজার জামে মসজিদ, থানা মসজিদ, পৌরসভা জামে মসজিদ, জান্নাতুল মাওলা কবরস্থান জামে মসজিদসহ শহরের বিভিন্ন মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। নামাজের আগে প্রতিটি মসজিদেই ধর্মীয়, সামাজিক ও রমজানের তাৎপর্যসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বয়ান দেন ইমাম ও খতিবরা।
নামাজের আগে কোর্ট জামে মসজিদে রমজানের প্রথম জুমার তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করেন ইমাম রুহুল আমিন। তিনি বলেন, ‘রমজান মাসের চাঁদ দেখার পর প্রথম তারাবির নামাজ ও ভোরে সেহরির পর রোজা শুরু হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ইসলামে মাস হিসেবে রমজানের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা রয়েছে। এই মাসেই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছিলো। সূরা বাকারা: ১৮৫ থেকে তিনি আরও বলেন, ‘এই মাসের কথা কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, রমজান মাস, যাতে কোরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়েতস্বরূপ এবং হিদায়েতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী রূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে।’
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা জান্নাতুল মওলা জামে মজজিদে জুমার নামাজ শেষে কবরস্থানে প্রয়াত স্বজনদের জন্য মুসল্লিরা কবর জিয়ারত ও দোয়া করতে দেখা যায়। নামাজ শেষে অসহায়, দুস্থ ভিক্ষুকদের মধ্যে বিভিন্ন পরিমাণ অর্থ দান করেন মুসল্লিরা। প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এদিন স্থানীয় মডেল মসজিদসহ পাড়া-মহল্লার মসজিদেও তিল ধারণের জায়গা ছিল না। কোনো কোনো মসজিদে মুসল্লিরা মসজিদের আঙিনাতেও জায়নামাজ, চাদর ও পাটি বিছিয়ে জুমার নামাজ আদায় করেছে।
আলমডাঙ্গা পৌর শহরের প্রধান জামে মসজিদসহ উপজেলা মডেল মসজিদ, কাচারি জামে মসজিদ, দারুস সালাম জামে মসজিদ, থানা জামে মসজিদ, গোবিন্দপুর, কোর্টপাড়া, বাবুপাড়া, আনন্দধাম, রাজিকাগঞ্জসহ অন্যান্য সকল মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করা হয়। রমজানের প্রথম জুমার নামাজে এসকল মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় দেখা গেছে। এছাড়াও গতকাল প্রথম জুমার নামাজ আদায়ের কেন্দ্রবিন্দুতে আসমানখালীর বিভিন্ন মসজিদতে মুসলমানদের ঢল দেখতে পাওয়া গেছে। পাঞ্জাবি-পাজামা পরে এবং জামায়নামাজ নিয়ে মসজিদে উপস্থিত হন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
দামুড়হুদার বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা বলেন, ‘এ বছর রমজানের ছয় রোজার দিন প্রথম জুমার নামাজ পেয়েছে বিশ্ববাসী। আল্লাহ যদি বাঁচিয়ে রাখেন, তাহলে শেষ জুমার নামাজেও অংশ নেব। রমজানের প্রথম জুমার দিনে সব মসজিদেই মুসল্লিদের ভিড় দেখছি। অন্যান্য জুমার নামাজের থেকে রমজানের জুমার নামাজে মুসল্লিতের উপস্থিতি সব থেকে বেশি দেখা যায়।’
তিনি বলেন, ‘রমজান মাসসহ সারা জীবন আল্লাহ তা’আলার হুকুম-আহকাম মেনে চলার চেষ্টা করব। আমরা রোজা অবস্থায় মিথ্যা কথা বলবো না, কারো গীবত করবো না, কারো সাথে ঝগড়া করব না। সকলের সাথে সোহার্দ্যপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে রোজা পালন করব। বেশি বেশি আল্লাহর কাছে মাফ চাইবো যাতে বিগত দিনের গুনাহ আল্লাহ মাফ করেন।’
দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের ইমাম একলাছুর রহমান বলেন, ‘মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে বাজারে যেসব খাবারের দোকান আছে, সেগুলো পর্দার সহিত রাখতে হবে এবং প্রকাশ্যে ধূমপান ও পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। একটি হাদিসে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি রোজা থাকা অবস্থায় গালিগালাজ কিংবা পরনিন্দা করলে তার রোজা হালকা হয়ে যাবে। তাই আমরা চেষ্টা করব পবিত্রতা রক্ষার মাধ্যমে রোজা পালন করার।’
অন্যদিকে, জীবননগরেও প্রথম জুমার নামাজে উপজেলা শহরসহ সকল মসজিদে মুসল্লিদের ভিড় দেখা গেছে। মসজিদে মসজিদে সব শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এক কাতারে শামিল হয়ে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেছেন। জুমার ফরজ ও সুন্নত নামাজ শেষে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় এবং মিলাদ অন্তে দোয়া মোনাজাতেও বিপুলসংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন।