ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫

হত্যা মামলার আসামিকে মেহেরপুরে বিএডিসির উপ-পরিচালক হিসেবে পদায়ন

ব্যবস্থা না নিয়ে পদায়ন দেয়ায় ক্ষুব্ধ কৃষক-কর্মচারী-ব্যবসায়ীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১০:০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫
  • / ৪৪ বার পড়া হয়েছে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামিকে মেহেরপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক (বিপ্রকে) হিসেবে পদায়ন করায় আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে পরিচিত ওই উপ-পরিচালকের পদায়ন নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বিএডিসি কৃষক, ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের মধ্যে। জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সচিব (উপ-সচিব) ড. কে.এম. মামুন উজ্জামান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে আসামি হাফিজুল ইসলামকে মেহেরপুরে বিএডিসির উপ-পরিচালক (বিপ্রকে) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের দোসর ও ফ্যাসিবাদী হেলমেট বাহিনী হামলা করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসা মোহাম্মদপুর তেজগাঁও-এর বাসিন্দা রেশম আলী বেপারীর ছেলে হাফিজুর রহমান ওই হামলায় গুলিবিদ্ধ হন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শহিদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করে গুলিবিদ্ধ হাফিজুর রহমানকে। পরে হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় ১৬ই আগস্ট হাফিজুর রহমান মারা যান। এ ঘটনায় মো. সাব্বির মণ্ডল নামে শহিদ হাফিজুর রহমানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নম্বর ২২ এ একটি মামলা দায়ের করেন। যার সিআর মামলা নম্বর ২৮৯/২৪ (শেরে বাংলা নগর)। ওই মালায় ১ নম্বর আসামি সাবেক পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই মামলাটিতেই তৎকালীন বিএডিসি (খামার)-এর উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ১৬২ নম্বর আসামি।

এদিকে, সরাসরি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগের দোসর এই কর্মকর্তার মেহেরপুর বিএডিসিতে পদায়ন হওয়ায় আলোচনা-সমালোচনা বেড়েছে। বিএডিসির কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘হাফিজুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি হত্যা মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। অথচ তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হচ্ছে। এটা মেনে নেয়া যায় না।’

তবে ওই কর্মকর্তা বলছেন, তিনি মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। মেহেরপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক (বিপ্রকে) হিসেবে পদায়নপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ওই মামলায় হাফিজুর রহমানের নাম আছে। আমি উনি নয়। আমার নাম হাফিজুল ইসলাম। ওই মামলাটি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সচিব (উপ-সচিব) ড. কেএম মামুন উজ্জামান বলেন, ‘আমি মামলা বা এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

হত্যা মামলার আসামিকে মেহেরপুরে বিএডিসির উপ-পরিচালক হিসেবে পদায়ন

ব্যবস্থা না নিয়ে পদায়ন দেয়ায় ক্ষুব্ধ কৃষক-কর্মচারী-ব্যবসায়ীরা

আপলোড টাইম : ১০:০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামিকে মেহেরপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক (বিপ্রকে) হিসেবে পদায়ন করায় আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে পরিচিত ওই উপ-পরিচালকের পদায়ন নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে বিএডিসি কৃষক, ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের মধ্যে। জানা গেছে, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সচিব (উপ-সচিব) ড. কে.এম. মামুন উজ্জামান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে আসামি হাফিজুল ইসলামকে মেহেরপুরে বিএডিসির উপ-পরিচালক (বিপ্রকে) হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচিতে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের দোসর ও ফ্যাসিবাদী হেলমেট বাহিনী হামলা করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংহতি জানাতে আসা মোহাম্মদপুর তেজগাঁও-এর বাসিন্দা রেশম আলী বেপারীর ছেলে হাফিজুর রহমান ওই হামলায় গুলিবিদ্ধ হন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শহিদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করে গুলিবিদ্ধ হাফিজুর রহমানকে। পরে হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় ১৬ই আগস্ট হাফিজুর রহমান মারা যান। এ ঘটনায় মো. সাব্বির মণ্ডল নামে শহিদ হাফিজুর রহমানের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের এক কর্মচারী ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নম্বর ২২ এ একটি মামলা দায়ের করেন। যার সিআর মামলা নম্বর ২৮৯/২৪ (শেরে বাংলা নগর)। ওই মালায় ১ নম্বর আসামি সাবেক পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই মামলাটিতেই তৎকালীন বিএডিসি (খামার)-এর উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান ১৬২ নম্বর আসামি।

এদিকে, সরাসরি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামি ও আওয়ামী লীগের দোসর এই কর্মকর্তার মেহেরপুর বিএডিসিতে পদায়ন হওয়ায় আলোচনা-সমালোচনা বেড়েছে। বিএডিসির কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া। নাম প্রকাশ না করার শর্ত দিয়ে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘হাফিজুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দোসর। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি হত্যা মামলার আসামি। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। অথচ তাকে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হচ্ছে। এটা মেনে নেয়া যায় না।’

তবে ওই কর্মকর্তা বলছেন, তিনি মামলা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। মেহেরপুর বিএডিসির উপ-পরিচালক (বিপ্রকে) হিসেবে পদায়নপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ওই মামলায় হাফিজুর রহমানের নাম আছে। আমি উনি নয়। আমার নাম হাফিজুল ইসলাম। ওই মামলাটি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সচিব (উপ-সচিব) ড. কেএম মামুন উজ্জামান বলেন, ‘আমি মামলা বা এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’