অভিযোগের পরেও চুয়াডাঙ্গায় চুরি যাওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধারে পুলিশের ধীরগতি
ভুক্তভোগী ও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের এসপি অফিস ঘেরাও- আপলোড টাইম : ১০:০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
- / ৭৭ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গা পৌর শহর থেকে দিন-দুপুরে দুটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় ভুক্তভোগী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ঘেরাও করেছেন। গতকাল রোববার বিকেল চারটার দিকে মোটরসাইকেল খোয়া যাওয়া দুই ভুক্তভোগীর সঙ্গে তাদের বন্ধুজন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জড়ো হন। এসময় জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) কনক কুমার দাস তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং দ্রুত সমেয়র মধ্যে কার্যকরি পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তারপর শিক্ষার্থীরা ফিরে আসেন।
পুলিশ সুপার কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ভুক্তভোগীরা জানান, গত শুক্রবার বাগানপাড়ার পুরাতন গোরস্থান জামে মসজিদের সামনে থেকে মোটরসাইকেল দুটি চুরি হয়। দুই দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এসময় ভুক্তভোগীরা জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও চুরি, ডাকাতি, সহিংসতাসহ অপরাধ দমনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।
থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগের বরাত দিয়ে দুই ভুক্তভোগী পৌর শহরের বাগানপাড়ার ইকরামুল হক শাকিল ও বড় বাজারপাড়ার এস এম আমিন উদ্দীন বলেন, ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুর আনুমানিক ১টা ২০ মিনিটের দিকে তারা তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল (রেজি: ঢাকা-মেট্রো-ল-৫২৩৭৮৬) এবং পালচার ঘ-১৬০ নিয়ে বাগানপাড়াস্থ পুরাতন গোরস্থান মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে যান। নামাজ শেষে বেরিয়ে দেখতে পান তাদের মোটরসাইকেল দুটি চুরি হয়ে গেছে। বন্ধুরা মিলে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করলেও কোনো সন্ধান মেলেনি। তাদের ধারণা, দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে ১টা ৪০ মিনিটের মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোরেরা মোটরসাইকেল দুটি নিয়ে গেছে।
এস এম আমিন উদ্দীনের ভাই ভুক্তভোগী ফারহান লায়েস আবেগ অভিযোগ করে বলেন, ‘চুরির পর থানায় গিয়ে দেখি, অভিযোগ নেওয়ার জন্য সেখানে কেউ নেই। আমাদের অভিযোগটি লিখতে পুলিশের এক ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে। এরপরেও এখন পর্যন্ত কোনো তদন্ত বা পদক্ষেপ শুরু হয়নি। পুলিশের সেবায় আমরা চরম অসন্তুষ্ট।’
তিনি আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত পদক্ষেপের দাবিতে আমরা বাধ্য হয়ে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছি। আমরা চাই, চুরিসহ সব ধরনের অপরাধের প্রতিকার দ্রুত নিশ্চিত হোক এবং পুলিশের কার্যক্রম আরও গতিশীল করা হোক।’ এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা ও সদর উপজেলা শাখার শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনটির জেলা শাখার সদস্যসচিব সাফ্ফাতুল ইসলাম বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে চুয়াডাঙ্গায় চুরি, ডাকাতি, মারামারিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। কিন্তু পুলিশের কার্যক্রম খুবই ধীরগতির। আমরা চাই, জেলা পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে পদক্ষেপ নিক এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক।’
চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) কনক কুমার দাস বলেন, ‘ভুক্তভোগীরা তাদের মোটরসাইকেল চুরির বিষয়ে জানাতে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আসেন। এসময় তাদের বন্ধুরাও সঙ্গে ছিলেন। আমরা তাদের অভিযোগ শুনেছি এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি। পুলিশের পক্ষ থেকে চুরি হওয়া মোটরসাইকেল উদ্ধারে প্রয়োজনীয় তদন্ত ও তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ ধরনের অপরাধ দমনে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত টহল ও নজরদারি জোরদার করা হচ্ছে।’