ইপেপার । আজ রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

জীবননগরে এক কাপ চায়ের দামে মিলছে আলু!

উৎপাদন খরচ নিয়ে বিপাকে চাষিরা

মিঠুন মাহমুদ, জীবননগর:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / ৫৯ বার পড়া হয়েছে

বর্তমানে এক কাপ দুধ চায়ের দাম ১৫ টাকা হলেও বাজারে আলুর দর ১০-১২ টাকা কেজি। যা চাষীদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বছর চুয়াডাঙ্গায় আলুর ভালো ফলন হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। জেলায় চাহিদার তুলনায় অধিক পরিমাণে আলু চাষ করায় বাজারে দাম কমে গেছে। ফলে উৎপাদন খরচের তুলনায় অর্ধেক দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু ১০ থেকে ১২ টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন কৃষকেরা।

কৃষকেরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছর আলু চাষ বন্ধ করে দিতে হবে, যদি সরকার বিদেশ থেকে আলু আমদানি বন্ধ না করে। তারা মনে করেন, যদি উৎপাদিত আলু বিদেশে রপ্তানির সুযোগ বাড়ানো যায়, তাহলে কিছুটা হলেও লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামের আলু চাষী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘এ বছর ২৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় ৮০-১০০ মণ আলু উৎপাদন হলেও বাজারে দাম নেই। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ৬৫-৭০ হাজার টাকা খরচ হয়, অথচ পাইকারি দরে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ১০-১৩ টাকা কেজি দরে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছর আলুচাষ করা কঠিন হয়ে যাবে।’

কাটাপোল গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, ‘এ বছর লিজ নেওয়া ও নিজের জমি মিলিয়ে ১০ বিঘায় আলু চাষ করেছি। কিন্তু তোলার সময় এসে বাজারে এমন ধস নামবে বুঝতে পারিনি। আলুর দাম না বাড়লে একেবারে পথে বসে যাবো।’
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় বেশি আলু চাষ হওয়ায় বাজারে দর পতন হয়েছে, ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে।’ তিনি জানান, চলতি মৌসুমে জীবননগর উপজেলায় ৯৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৭০ হেক্টর বেশি। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে তিনি আশাবাদী, এ বছর নেপালে আলু রপ্তানি করা হচ্ছে, ফলে কিছুটা হলেও দাম বাড়তে পারে।

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

জীবননগরে এক কাপ চায়ের দামে মিলছে আলু!

উৎপাদন খরচ নিয়ে বিপাকে চাষিরা

আপলোড টাইম : ০৮:৪৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বর্তমানে এক কাপ দুধ চায়ের দাম ১৫ টাকা হলেও বাজারে আলুর দর ১০-১২ টাকা কেজি। যা চাষীদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বছর চুয়াডাঙ্গায় আলুর ভালো ফলন হলেও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়েছেন। জেলায় চাহিদার তুলনায় অধিক পরিমাণে আলু চাষ করায় বাজারে দাম কমে গেছে। ফলে উৎপাদন খরচের তুলনায় অর্ধেক দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু ১০ থেকে ১২ টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন কৃষকেরা।

কৃষকেরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছর আলু চাষ বন্ধ করে দিতে হবে, যদি সরকার বিদেশ থেকে আলু আমদানি বন্ধ না করে। তারা মনে করেন, যদি উৎপাদিত আলু বিদেশে রপ্তানির সুযোগ বাড়ানো যায়, তাহলে কিছুটা হলেও লোকসান কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। জীবননগর উপজেলার কন্দর্পপুর গ্রামের আলু চাষী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘এ বছর ২৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। প্রতি বিঘায় ৮০-১০০ মণ আলু উৎপাদন হলেও বাজারে দাম নেই। এক বিঘা জমিতে চাষ করতে ৬৫-৭০ হাজার টাকা খরচ হয়, অথচ পাইকারি দরে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে মাত্র ১০-১৩ টাকা কেজি দরে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী বছর আলুচাষ করা কঠিন হয়ে যাবে।’

কাটাপোল গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ জানান, ‘এ বছর লিজ নেওয়া ও নিজের জমি মিলিয়ে ১০ বিঘায় আলু চাষ করেছি। কিন্তু তোলার সময় এসে বাজারে এমন ধস নামবে বুঝতে পারিনি। আলুর দাম না বাড়লে একেবারে পথে বসে যাবো।’
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘চাহিদার তুলনায় বেশি আলু চাষ হওয়ায় বাজারে দর পতন হয়েছে, ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচের অর্ধেক দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে।’ তিনি জানান, চলতি মৌসুমে জীবননগর উপজেলায় ৯৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৭০ হেক্টর বেশি। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে তিনি আশাবাদী, এ বছর নেপালে আলু রপ্তানি করা হচ্ছে, ফলে কিছুটা হলেও দাম বাড়তে পারে।