ইপেপার । আজ সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫

কোটচাঁদপুর হাসপাতালের ২৬ কোটি টাকার নতুন ভবন ১৭ মাস ধরে পড়ে

চুরি হচ্ছে মূল্যবান জিনিসপত্র, চিকিৎসাসেবা ব্যহত

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১১:৩২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / ২৯ বার পড়া হয়েছে

২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনটি ১৭ মাসেও চালু হয়নি। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তড়িঘড়ি করে অসম্পূর্ণ ভবনটি উদ্বোধন করেছিলেন। অব্যবহৃত থাকার কারণে ভবনের আসবাবপত্র, টিভি ও পানির ট্যাবসহ গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী চুরি হয়ে গেছে। প্রশাসনিক অনুমোদন না হওয়ায় ১০০ শয্যার হাসপাতালটি চালু করা যাচ্ছে না।
এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক। যা ইনডোর, আউটডোর, নাইট ডিউটি ও জরুরি বিভাগসহ সকল ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। বর্তমানে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও এখানে ১০০ থেকে ১২০ জন রোগী সবসময় ভর্তি থাকেন। কখনো কখনো রোগীর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে বেড সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় থাকতে বাধ্য হয়।
হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যা হিসাবে মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১২৪ জন থাকার কথা, কিন্তু আছে মাত্র ৭১ জন। দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে ৫৩টি। ১৯ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ জন। শূন্য আছে ১২টি ডাক্তারের পদ। ৭ জনের মধ্যে আবার ২ জন আছেন ডেপুটেশনে অর্থাৎ চিকিৎসক আছেন মাত্র ৫ জন। আরও দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বদলির আদেশ হয়েছে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হবে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার পারলাট গ্রামের বৃদ্ধা হামিদা বেগম ও হাওয়া বেগম বলেন, ঘণ্টা যাবৎ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসকের সেবা পাওয়া যায় না। আযমপুরের সামাউল বলেন, আঘাতজনিত ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। যে ভিড় দেখতেছি ডাক্তার দেখাতে পারবো কিনা জানি না। রাজাপুরের বিথীকা রানী ও একই সমস্যার কথা জানান। সরেজমিন দেখা যায় ডাক্তারের চেম্বারের সামনে লম্বা লাইন। একজন ডাক্তার প্রতিদিন ৩০০ করে রোগী দেখেন। এতে রোগীরা ভালো সেবা পান না।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ম. আমানউল্লাহ আল মামুন জানান, তিনি কয়েক মাস আগে এখানে যোগদান করেছেন হাসপাতালটি ৫০ শয্যার হলেও ব্যাপক জনবল সংকট রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পর্যাপ্ত জনবল নেই। অপ্রতুল সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন ভালো সেবা প্রদানের। তিনি জানান, ইতোমধ্যে হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণ হলেও প্রশাসনিক অনুমোদন হয়নি। এখনো নেই জনবল ও বাজেট দেওয়া হয়নি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

কোটচাঁদপুর হাসপাতালের ২৬ কোটি টাকার নতুন ভবন ১৭ মাস ধরে পড়ে

চুরি হচ্ছে মূল্যবান জিনিসপত্র, চিকিৎসাসেবা ব্যহত

আপলোড টাইম : ১১:৩২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবনটি ১৭ মাসেও চালু হয়নি। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তড়িঘড়ি করে অসম্পূর্ণ ভবনটি উদ্বোধন করেছিলেন। অব্যবহৃত থাকার কারণে ভবনের আসবাবপত্র, টিভি ও পানির ট্যাবসহ গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী চুরি হয়ে গেছে। প্রশাসনিক অনুমোদন না হওয়ায় ১০০ শয্যার হাসপাতালটি চালু করা যাচ্ছে না।
এদিকে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন মাত্র ৫ জন চিকিৎসক। যা ইনডোর, আউটডোর, নাইট ডিউটি ও জরুরি বিভাগসহ সকল ক্ষেত্রে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। বর্তমানে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও এখানে ১০০ থেকে ১২০ জন রোগী সবসময় ভর্তি থাকেন। কখনো কখনো রোগীর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পায় যে বেড সংকুলান না হওয়ায় বারান্দায় থাকতে বাধ্য হয়।
হাসপাতালটিতে ৫০ শয্যা হিসাবে মোট কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ১২৪ জন থাকার কথা, কিন্তু আছে মাত্র ৭১ জন। দীর্ঘদিন শূন্য রয়েছে ৫৩টি। ১৯ জন চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ জন। শূন্য আছে ১২টি ডাক্তারের পদ। ৭ জনের মধ্যে আবার ২ জন আছেন ডেপুটেশনে অর্থাৎ চিকিৎসক আছেন মাত্র ৫ জন। আরও দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বদলির আদেশ হয়েছে। এতে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হবে।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার পারলাট গ্রামের বৃদ্ধা হামিদা বেগম ও হাওয়া বেগম বলেন, ঘণ্টা যাবৎ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসকের সেবা পাওয়া যায় না। আযমপুরের সামাউল বলেন, আঘাতজনিত ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। যে ভিড় দেখতেছি ডাক্তার দেখাতে পারবো কিনা জানি না। রাজাপুরের বিথীকা রানী ও একই সমস্যার কথা জানান। সরেজমিন দেখা যায় ডাক্তারের চেম্বারের সামনে লম্বা লাইন। একজন ডাক্তার প্রতিদিন ৩০০ করে রোগী দেখেন। এতে রোগীরা ভালো সেবা পান না।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ম. আমানউল্লাহ আল মামুন জানান, তিনি কয়েক মাস আগে এখানে যোগদান করেছেন হাসপাতালটি ৫০ শয্যার হলেও ব্যাপক জনবল সংকট রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পর্যাপ্ত জনবল নেই। অপ্রতুল সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন ভালো সেবা প্রদানের। তিনি জানান, ইতোমধ্যে হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণ হলেও প্রশাসনিক অনুমোদন হয়নি। এখনো নেই জনবল ও বাজেট দেওয়া হয়নি।