প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার
সংসদের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন মানবে না বলেছে বিএনপি
- আপলোড টাইম : ০৩:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / ৪৩ বার পড়া হয়েছে
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলটির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রায় পৌণে আটটা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা তারা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে যমুনার সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য সরকার কাজ করছে বলে আমাদের জানিয়েছেন (প্রধান উপদেষ্টা)। আমরা আশা করব, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে এবং একটি রোডম্যাপ (রূপরেখা) দেওয়া হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তারা (সরকার) একটি বক্তব্য রাখবেন বলে ধারণা দিয়েছেন।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাও বলেছেন- ডিসেম্বরের মধ্যে একটি নির্বাচন দেওয়ার জন্য তারা কাজ করছেন। প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি, জনগণও প্রত্যাশা করছেন।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে কোনোভাবেই একমত হবো না। আগে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। এর আগে কোনো নির্বাচন হবে না। এটা আগেও পরিষ্কার করে বলেছি। তিনি বলেন, আমরা যেটা বারবার বলে এসেছি- এ সরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সুতরাং দ্রুত নির্বাচনের জন্য আমরা তাদের আবারও তাগাদা দিয়েছি। ন্যূনতম সংস্কারের ক্ষেত্রে আলোচনার পর দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে বলেছেন তারা।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর দায় সরকার এড়াতে পারে না। তিনি জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে সার্বিক বিষয়ে দলের উদ্বেগের বিষয়গুলো প্রধান উপদেষ্টার কাছে তুলে ধরা হবে। একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে এটা বিএনপির দায়িত্ব। বিএনপি সেই দায়িত্ব পালন করেছে। তিনি বলেন, যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর দায় সরকার এড়াতে পারে না। কারণ, সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন বাহিনীর সামনেই একের পর এক ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যথেষ্ট বিপন্ন হয়েছে। ফ্যাসিবাদীরা এসব বিষয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়েছে। প্রশাসনে যারা ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ছিলেন, যারা দেশের সম্পদ লুট করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও পাচার হওয়া টাকা ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়েছে বলেও জানান মির্জা ফখরুল। বিগত ১৫-১৬ বছরে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাতারের দাবিও তুলেছেন বৈঠকে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দ্রব্যমূল্যের ব্যাপারে কথা বলেছি। এ সরকারের অন্যতম বড় ব্যর্থতা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। তারা কাজ করছেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টিও এসেছে। বিএনপি বলেছে, বিশেষ অভিযান ‘ডেভিল হান্টে’ যেন কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও সালাহ উদ্দিন আহমদও বৈঠকে অংশ নেন। অন্যদিকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির তিন নেতার বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হলে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন করতে সরকারের কোনো আপত্তি নেই।