চুয়াডাঙ্গার চার থানা পুলিশের ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযান
আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
- আপলোড টাইম : ০৫:২৬:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / ২৯ বার পড়া হয়েছে
দেশব্যাপী চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর অংশ হিসেবে চুয়াডাঙ্গা সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগরে অভিযানে ১০ জন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকা ও বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, দেশব্যাপী চলা বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর অংশ হিসেবে গত রোববার গভীর রাত ও গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৃথক অভিযান চালায় সদর থানা পুলিশ। অভিযানে পৌর শহরের হাজরাহাটি এলাকা থেকে পৌর ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি জাহিদ ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের চুয়াডাঙ্গা-৭৯ সংসদীয় আসনের সমন্বয়ক টিমের সদস্য সাইদ আহমেদ উৎসকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। উৎস সদর থানাধীন আকুন্দবাড়িয়া গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে।
সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান বলেন, ‘দেশব্যাপী চলা বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর অংশ হিসেবে সদর থানাধীন এলাকায় অভিযান চালিয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থাকা মামলার বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
এদিকে, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের এই বিশেষ অভিযানে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলার ৫ আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। গতকাল সোমবার আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে এসআই ওয়াহিদুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে। অভিযানের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আলমডাঙ্গা থানার মামলা নম্বর-১০, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, ১৯০৮-এর তদন্তে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বাড়াদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাড়াদী গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে শামসুজ্জামান (৪০), জামজামি ৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সেক্রেটারি ও নারায়ণপুর গ্রামের মৃত বিশারত আলীর ছেলে জামিরুল ইসলাম (৩৫), ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও ইখতার আলী মণ্ডলের ছেলে রেজাউল করিম (৩৭), বাড়াদী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য ওহিদুল ইসলামের ছেলে সাকিব হাসান (২৩) ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ফজলুল হকের ছেলে মিল্টন আলী রিণ্টু (২৬)। গ্রেপ্তারকৃতদের গতকালই চুয়াডাঙ্গা জেলা আদালতের পাঠানো হয়।
ওসি মাসুদুর রহমান বলেন, ‘দেশব্যাপী চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ এর অংশ হিসেবে আমরা অভিযান শুরু করেছি। ইতিমধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে।’
অন্যদিকে, দামুড়হুদা মডেল থানার পুলিশের ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযানে আওয়ামী লীগ নেতা ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হাসান আলী (৪৪) গ্রেপ্তার হয়েছে। তিনি দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের মুক্তারপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাসান মেম্বারের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, ‘হাসান মেম্বারের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তাকে আজ (মঙ্গলবার) আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
অপর দিকে, জীবননগর থানা পুলিশের ‘অপারেশ ডেভিল হান্ট’ অভিযানে আওয়ামী লীগের দুই নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। গতকাল সোমবার তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরআগে রোববার গভীর রাতে উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে জীবননগর থানা পুলিশ তাদের আটক করে। আটককৃতরা হলেন- আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নিধিকুণ্ডু গ্রামের বাসিন্দা রাশেদ মিয়া (৫০) এবং একই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবু সামা (৫০)। তিনি মণ্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জীবননগরে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযান শুরু হয়েছে। রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে দুই জনকে আটক করা হয়। তাদের আজ (সোমবার) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’