জীবননগরে সরকারি গাছ বিক্রি করায় বিএনপি নেতাসহ আটক ৩
দল থেকে শোকজ, থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন
- আপলোড টাইম : ০৯:৫৪:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / ২৪ বার পড়া হয়েছে
জীবননগরে রাস্তার ধারে জেলা পরিষদের গাছ বিক্রির ঘটনায় আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি হোসেন আলীসহ তিনজনতে আটক করে পুলিশ দিয়েছে স্থানীয়রা। গতকাল শনিবার সকালে উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের শাহপুর-সাবদালপুর সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হোসেন রহমানকে দল থেকে শোকজ করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি ও ঘোগরা গাছি গ্রামের বাসিন্দা হোসেন আলী, পাঁকা গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আবু তালেব (৪৪) ও একই গ্রামের দিনমজুর মো. মোতালেব হোসেন (৪০)।
এদিকে এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করায় রানা মাহামুদ নামে একজনকে বেধড়ক মারধর করেছে ওই নেতার লোকজন। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহপুর- সাবদালপুর সড়কের ধারে বিভিন্ন প্রজাতির বেশ কিছু গাছ লাগানো আছে। তার মধ্যে ৩টি কটুই চটকা গাছ ৪৫ হাজার টাকায় আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি হোসেন আলী বিক্রি করে দেন কাঠ ব্যবসায়ী আবু তালেবের কাছে। গতকাল সকালে আবু তালেবসহ ৪-৫ জনকে গাছ কাটতে আসেন। গাছ কাটা শুরু করলে তখন স্থানীয় জনতা তাদের বাধা দেন। তখন সে বিএনপির নেতার হোসেন আলীর কাছ থেকে গাছ কিনেছেন বলে জানান। স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হলে কাঠ ব্যবসায়ী ফোনে হোসেন আলীকে ঘটনার সম্পর্কে জানান, এবং কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে আসেন তিনি, তখন স্থানীয় জনতা তাদের আটক করে পুলিশকে খবর দেন।
উপজেলা বন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম কাজল বলেন, ‘সকালে আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাটা গাছগুলো জব্দ করা হয়েছিল। পরে জমি মাপজোপ করে জানা যায়, গাছগুলো জেলা পরিষদের জায়গায় ছিল। এ ঘটনায় জেলা পরিষদ ব্যবস্থা নেবে।’
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘সকালে স্থানীয় লোকজন গাছ কাটার সময় ৩ জনকে ধরে শাহপুর পুলিশ ক্যাম্পে সোপর্দ করে। পরে তাদের থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জানতে পেরেছি তারা জেলা পরিষদের জমিতে থাকা গাছ কাটছিলো, তখন স্থানীয়রা কাদের আটক করে। জেলা পরিষদ থেকে অভিযোগ সাপেক্ষে আইনানূগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টিনিয়ে সময় চেয়েছেন। অভিযোগ না পেলে রোববার (আজ) তাদের ৫৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
এদিকে, এই ঘটনার পরই আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির ৪ নম্বর সহ-সভাপতি হোসেন আলীকে শোকজ করা হয়। দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল রাত ৯টায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে তাকে শোকজ করা হয়। শোকজ নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, হোসেন আলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে হবে। একই সঙ্গে সতর্ক করা হয়েছে যে, তিনি যদি কোনো অনৈতিক বা অপকর্মে লিপ্ত হন, তার দায়দায়িত্ব দল নেবে না। পাশাপাশি, দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।