গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজে পিঠা উৎসব
- আপলোড টাইম : ০৯:৫১:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
- / ৪১ বার পড়া হয়েছে
শুধু খাবার হিসেবেই নয়, বরং বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অংশ হিসেবে পিঠা আমাদের জীবনচিত্রে গভীরভাবে মিশে আছে। প্রতি শীতেই গ্রামবাংলায় ঘরে ঘরে শুরু হয় পিঠা-পুলি তৈরির উৎসব। এই ঐতিহ্যকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করে তুলতে মেহেরপুরের গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজে দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ উৎসবে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা ২৫টি স্টল সাজিয়ে শত রকমের বাহারি ও মুখরোচক পিঠা প্রদর্শন করেন। ভোজনরসিকরা এসে পিঠা খেয়ে নানা প্রশংসা করেছেন। আয়োজকরা জানান, প্রতি বছরই এ ধরনের আয়োজন করা হবে যাতে নতুন প্রজন্ম পিঠা-পুলির সাথে পরিচিত হতে পারে।
গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজ চত্বরে আয়োজিত এ পিঠা উৎসবে ছিল বেশ কিছু ভিন্নতা। শিক্ষার্থীদের নিজ হাতে তৈরি করা এসব পিঠা সাজানো ছিল তাদের স্টলে। শোভা পাচ্ছিল স্বতীন পিঠা, বেক্কল জামাই, মেয়েদের মন, জামাইয়ের প্যাচ, ভালবাসার লাল গোলাপ, পিয়াসা, পাটি সাপটা, চিতই, ভাপা, পুলি, সরু, মালাই রোল, চিটা রুটি সহ শতাধিক ধরণের পিঠা। ভোজনরসিকরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে দেখছেন ও স্বাদ নিচ্ছেন, অনেকেই তাদের সন্তানদেরও পিঠার স্বাদ ও পরিচয়ের সুযোগ করে দিচ্ছেন।
পিঠা উৎসবের স্টলগুলোর নামের ভিন্নতাও ভোজনরসিকদের আকৃষ্ট করেছে। স্টলগুলোর নাম ছিল- ছয় সখীর পিঠা ঘর, আমার পিঠা আমার জামাই, দূরে কেনো, কাছে এসো, পিঠার হাঁড়ি, আমার বাড়ি, চুপি চুপি খেয়ে যাও, পিঠা পুলির ঝুলি, আইয়া হাইয়া যানসহ নানা নাম।
শিক্ষার্থীরা বলেন, পিঠা উৎসব শুধু পিঠার সাথে মানুষের পরিচয় করানোর মাধ্যম নয়, এটি একটি আস্থার পথ যা নতুন প্রজন্মকে গ্রামীণ ঐতিহ্য এবং খাবারের প্রতি আগ্রহী করে তোলে। এমনি আয়োজন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে করা উচিত।
পিঠা উৎসব উপভোগ করতে আসা ভোজনরসিকরা বলেন, বিদেশি খাবার অনেকটা আমাদের দেশে জায়গা করে নিয়েছে, যার ফলে মা-বাবাদের হাতের পিঠা বিলুপ্তির মুখে। প্রতিবছর এ ধরনের পিঠা উৎসব আয়োজন করা হলে নতুন প্রজন্ম দেশীয় পিঠার সাথে পরিচিত হতে পারবে।
কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও বলেন, গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে শীতকালে নানা ধরণের পিঠাপুলি তৈরী হয় প্রতিটি বাড়িতে। বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পিঠা-পুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে দীর্ঘকাল ধরে। পিঠা উৎসবের আয়োজন আসলে লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতিরই এক ধরনের বহিঃপ্রকাশ।
কলেজের অধ্যক্ষ খোরশেদ আলম বলেন, ‘শীতের শেষের দিকে হলেও আমরা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা নিয়ে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছি। এ উৎসবে বিলুপ্তি হওয়া সহ নতুন নতুন পিঠা নিয়ে স্টল সাজানো হয়েছে। নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়ে সহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ পিঠা খেতে এসেছেন। আমাদের এই উৎসবে যারা এসেছেন তাদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রতিবছরই এমন বর্ণাঢ্য আয়োজন হবে। এছাড়া উৎসবে পিঠা নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে।’