ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দামুড়হুদার জয়রামপুরে রেলওয়ের জমি থেকে গাছ কাটার অভিযোগ

বাঁধা দিয়ে রাতে নিজেই গাছ কাটলেন যুবদল নেতা

প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:
  • আপলোড টাইম : ০৬:১৬:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • / ১০ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন রেলের জমি থেকে রাতের আধারে মূল্যবান গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার দিবাগত গভীর রাতে গাছটি কাটা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এদিকে, গাছ কাটার খবর পেয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কেটে ফেলা রাখা গাছটি উদ্ধার করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিএনপির নেতা-কর্মীসহ এলাকার স্থানীয় মানুষের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের জয়রামপুর স্টেশনপাড়ায় আখ সেন্টারের পশ্চিম দিকে রেলের জমিতে একটি বিশাল আকৃতির মূল্যবান শিশু গাছ ছিল। কিছু দিন পূর্বে আলী হোসেন ভেবেছিল শিশু গাছটি তার জমির মধ্যে। গাছটি তিনি এক কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন এবং গাছটি কাটা শুরু করেন। এসময় দামুড়হুদা উপজেলা যুবদলের সদস্য জয়রামপুরের হুমায়ুন কবির ডাবলু এসে গাছটি কাটতে বাঁধা দেন। সংবাদ পেয়ে রেলে কর্মরত লোকজন এসে বলেন, গাছটি সম্পূর্ণ রেলের জায়গায় আছে। তাই সরকারি এই গাছ কোনোভাবে আর কাটা যাবে না। তখন আলী হোসেন গাছটি কাটা থেকে বিরত থাকেন এবং ওই কাঠ ব্যবসায়ীকে টাকা ফেরত দেন।
কিন্তু গত রোববার দিবাগত রাতে যুবদল নেতা ডাবলু তার লোকজন নিয়ে গাছটি কেটে ফেলেন। গতকাল সোমবার ভোরে শিশুগাছটি না দেখে আলী হোসেন স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে জয়রামপুর আখ সেন্টার থেকে গাছের দুটি লগ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে আলী হোসেন বলেন, ‘গত রাতে ডাবলু তার ছেলে-পেলে নিয়ে পিকনিক করেছে। তার সাঙ্গপাঙ্গরা গভীর রাতে গাছটি কেটে ফেলে। খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি গাছটি ডাবলু নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাটে। আমি যখন গাছটি কাটতে গিয়েছিলাম তখন এই ডাবলু আমাকে বাধা দিয়েছিল এবং রেল কোম্পানির লোকজন বলেছিল, এটা রেলের জায়গার গাছ। এটা সরকারি গাছ, কোনোভাবেই এই গাছ কাটা যাবে না। কিন্তু সরকারি গাছ জানা সত্ত্বেও ডাবলু তা কেটে নিয়েছে।’
এ বিষয়ে যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির ডাবলু বলেন, ‘আমি গাছ কাটার সময় ছিলাম না। এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সকালে গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরে আমি নিজেই থানা পুলিশ ও রেল কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। গাছ কাটার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’ এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শরিফ উর জামান সিজার বলেন, ‘যদি সে এ বিষয়ে জড়িত থাকে, তাহলে সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
রেলের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জয়রামপুর রেল স্টেশনের অদূরে আখ সেন্টার নামক স্থানের সামনে রেলের জায়গা থেকে একটি সরকারি শিশুগাছ কাটা হয়েছে। সংবাদ শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং গাছটি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। যেহেতু আমি সঠিকভাবে জানি না কে বা কারা গাছটি কেটেছে, তাই অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

দামুড়হুদার জয়রামপুরে রেলওয়ের জমি থেকে গাছ কাটার অভিযোগ

বাঁধা দিয়ে রাতে নিজেই গাছ কাটলেন যুবদল নেতা

আপলোড টাইম : ০৬:১৬:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর রেলস্টেশন সংলগ্ন রেলের জমি থেকে রাতের আধারে মূল্যবান গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার দিবাগত গভীর রাতে গাছটি কাটা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। এদিকে, গাছ কাটার খবর পেয়ে রেল কর্তৃপক্ষ কেটে ফেলা রাখা গাছটি উদ্ধার করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে বিএনপির নেতা-কর্মীসহ এলাকার স্থানীয় মানুষের মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের জয়রামপুর স্টেশনপাড়ায় আখ সেন্টারের পশ্চিম দিকে রেলের জমিতে একটি বিশাল আকৃতির মূল্যবান শিশু গাছ ছিল। কিছু দিন পূর্বে আলী হোসেন ভেবেছিল শিশু গাছটি তার জমির মধ্যে। গাছটি তিনি এক কাঠ ব্যবসায়ীর কাছে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন এবং গাছটি কাটা শুরু করেন। এসময় দামুড়হুদা উপজেলা যুবদলের সদস্য জয়রামপুরের হুমায়ুন কবির ডাবলু এসে গাছটি কাটতে বাঁধা দেন। সংবাদ পেয়ে রেলে কর্মরত লোকজন এসে বলেন, গাছটি সম্পূর্ণ রেলের জায়গায় আছে। তাই সরকারি এই গাছ কোনোভাবে আর কাটা যাবে না। তখন আলী হোসেন গাছটি কাটা থেকে বিরত থাকেন এবং ওই কাঠ ব্যবসায়ীকে টাকা ফেরত দেন।
কিন্তু গত রোববার দিবাগত রাতে যুবদল নেতা ডাবলু তার লোকজন নিয়ে গাছটি কেটে ফেলেন। গতকাল সোমবার ভোরে শিশুগাছটি না দেখে আলী হোসেন স্থানীয় লোকজনকে জানিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে জয়রামপুর আখ সেন্টার থেকে গাছের দুটি লগ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে আলী হোসেন বলেন, ‘গত রাতে ডাবলু তার ছেলে-পেলে নিয়ে পিকনিক করেছে। তার সাঙ্গপাঙ্গরা গভীর রাতে গাছটি কেটে ফেলে। খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি গাছটি ডাবলু নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাটে। আমি যখন গাছটি কাটতে গিয়েছিলাম তখন এই ডাবলু আমাকে বাধা দিয়েছিল এবং রেল কোম্পানির লোকজন বলেছিল, এটা রেলের জায়গার গাছ। এটা সরকারি গাছ, কোনোভাবেই এই গাছ কাটা যাবে না। কিন্তু সরকারি গাছ জানা সত্ত্বেও ডাবলু তা কেটে নিয়েছে।’
এ বিষয়ে যুবদল নেতা হুমায়ুন কবির ডাবলু বলেন, ‘আমি গাছ কাটার সময় ছিলাম না। এ বিষয়ে কিছুই জানি না। সকালে গাছ কাটার বিষয়টি জানতে পেরে আমি নিজেই থানা পুলিশ ও রেল কর্তৃপক্ষকে অবগত করি। গাছ কাটার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।’ এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক শরিফ উর জামান সিজার বলেন, ‘যদি সে এ বিষয়ে জড়িত থাকে, তাহলে সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
রেলের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জয়রামপুর রেল স্টেশনের অদূরে আখ সেন্টার নামক স্থানের সামনে রেলের জায়গা থেকে একটি সরকারি শিশুগাছ কাটা হয়েছে। সংবাদ শুনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং গাছটি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। যেহেতু আমি সঠিকভাবে জানি না কে বা কারা গাছটি কেটেছে, তাই অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করা হবে।