ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জামজামি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

সরকারি বীজ পাওয়া গেল ইউনিয়ন পরিষদের বাথরুমে

নাহিদ হাসান, ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক, আলমডাঙ্গা:
  • আপলোড টাইম : ১০:৫৭:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১১১ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গার জামজামি ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রনি আহম্মেদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও সরকারি বীজ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের পাটের বীজ ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত বাথরুমে পাওয়া গেছে। এছাড়া গতকাল দুপুরে জামজামি ইউনিয়নের সাধারণ কৃষক, সোহাগপুর গ্রামের গ্রাম-পুলিশ সালাম, জামদামি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম, কৃষক হাসিবুল আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার অফিসে জামজামি ইউনিয়নের বরাদ্দ ও প্রণোদনার বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি অফিসারের রুম থেকে বের হওয়া মাত্রই জামজামি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষক সালামকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে কৃষক সালাম বলেন, ‘বীজ ও প্রণোদনার বিষয়ে জানতে আসা আমার অপরাধ। আমি কৃষি কর্মকর্তার অফিস থেকে বের হওয়া মাত্রই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রনি আহমেদ আমাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করেন। আমাকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার বিষয়ে আমি কৃষি কর্মকর্তাকে জানালে তিনি আমাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। আমি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ কৃষক হিসেবে সার ও বীজের বিষয়ে জানার অধিকার আমার আছে। আমি বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমডাঙ্গা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি প্রেরণ করেছি।’

এ বিষয়ে জমজমী ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সে সঠিকভাবে বিতরণ না করে বিভিন্ন সময় বীজ নানা কৌশলে নয়-ছয় করে।’ এ বিষয়ে জানতে জামজামি ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রনি আহমেদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বারবার সাংবাদিকদের সামনে গিয়ে দেখা করতে বলেন।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, ‘আমি আমার প্রতিনিধি পাঠিয়ে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে সঠিকভাবে তদন্ত করার মাধ্যমেই জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা। তবে ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত বাথরুম থেকে উদ্ধার হওয়া পাটের বীজ আমাদের হেফাজতে আছে।’ এরপরেই উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রনি আহমেদ বিভিন্ন মহলে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেন এবং সাংবাদিকদের দেওয়া হয় নানা প্রলোভন।
এ বিষয়ে জামজামি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের একটি রুম দিতে হয়, তাই একটি রুম দিয়েছি। তবে তারা যদি কোনো অপকর্ম করে, সেই অপকর্মের দায় কোনোভাবেই ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সদস্য বা চেয়ারম্যান হিসেবে আমি নেব না। যে অপকর্ম করেছে, এই দায় তাকেই নিতে হবে।’

আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

জামজামি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ

সরকারি বীজ পাওয়া গেল ইউনিয়ন পরিষদের বাথরুমে

আপলোড টাইম : ১০:৫৭:০৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

আলমডাঙ্গার জামজামি ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রনি আহম্মেদের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও সরকারি বীজ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের পাটের বীজ ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত বাথরুমে পাওয়া গেছে। এছাড়া গতকাল দুপুরে জামজামি ইউনিয়নের সাধারণ কৃষক, সোহাগপুর গ্রামের গ্রাম-পুলিশ সালাম, জামদামি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম, কৃষক হাসিবুল আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার অফিসে জামজামি ইউনিয়নের বরাদ্দ ও প্রণোদনার বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি অফিসারের রুম থেকে বের হওয়া মাত্রই জামজামি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কৃষক সালামকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে কৃষক সালাম বলেন, ‘বীজ ও প্রণোদনার বিষয়ে জানতে আসা আমার অপরাধ। আমি কৃষি কর্মকর্তার অফিস থেকে বের হওয়া মাত্রই উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রনি আহমেদ আমাকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করেন। আমাকে হুমকি-ধমকি দেওয়ার বিষয়ে আমি কৃষি কর্মকর্তাকে জানালে তিনি আমাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেন। আমি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ কৃষক হিসেবে সার ও বীজের বিষয়ে জানার অধিকার আমার আছে। আমি বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলমডাঙ্গা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, জেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি প্রেরণ করেছি।’

এ বিষয়ে জমজমী ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সে সঠিকভাবে বিতরণ না করে বিভিন্ন সময় বীজ নানা কৌশলে নয়-ছয় করে।’ এ বিষয়ে জানতে জামজামি ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রনি আহমেদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বারবার সাংবাদিকদের সামনে গিয়ে দেখা করতে বলেন।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, ‘আমি আমার প্রতিনিধি পাঠিয়ে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে সঠিকভাবে তদন্ত করার মাধ্যমেই জানা যাবে প্রকৃত ঘটনা। তবে ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত বাথরুম থেকে উদ্ধার হওয়া পাটের বীজ আমাদের হেফাজতে আছে।’ এরপরেই উপ-সহকারী কৃষি অফিসার রনি আহমেদ বিভিন্ন মহলে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেন এবং সাংবাদিকদের দেওয়া হয় নানা প্রলোভন।
এ বিষয়ে জামজামি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের একটি রুম দিতে হয়, তাই একটি রুম দিয়েছি। তবে তারা যদি কোনো অপকর্ম করে, সেই অপকর্মের দায় কোনোভাবেই ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সদস্য বা চেয়ারম্যান হিসেবে আমি নেব না। যে অপকর্ম করেছে, এই দায় তাকেই নিতে হবে।’

আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ মেহেদী ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’