১৬ বছর কারাভোগের পর বাড়ি ফিরলেন বিডিআর জওয়ান তহিদ ও শাকিল
পরিবার-স্বজনদের মাঝে খুশির আমেজ, ক্ষতিপূরণের দাবি
- আপলোড টাইম : ০৯:৪৩:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৪০ বার পড়া হয়েছে
আলোচিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ১৬ বছর পর দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বড়বলদিয়ার বাজারপাড়ার আব্দুস সালাম ফকিরের ছেলে বিডিআর জওয়ান তহিদ হাসান ফকির জজ ও কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সুবুলপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে শাকিল কারাভোগের পর নিজ নিজ বাড়ি ফিরেছেন। গত ২৩ জানুয়ারি জামিন পেলেও দুদিন পর ২৫ জানুয়ারি বাড়ি ফেরেন তারা। তহিদ ফকির পরিবারে প্রথম ছেলে ও একমাত্র সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন। আর্থিক সচ্ছলতা ফেরাতে ২০০৬ সালে যোগ দিয়েছিলেন বিডিআরে। কিন্তু ভাগ্য সহায় হয়নি তার। ২০০৯ সালের পিলখানার ঘটনায় তহিদ ও শাকিল আসামি হয়ে চাকরিচ্যুত হন। পাঠানা হয় জেলে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সময় তিনি বেরাকেই ছিলেন।
এদিকে, তহিদ ফকির জজ ও শাকিলের আসার খবরে গ্রামসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন দেখতে ভিড় করেছেন বাড়িতে। তাকে ফিরে পেয়ে খুশি পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী। দীর্ঘ ১৬ বছর বাবা-মাকে ও পরিবারের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। দীর্ঘ ১৬ বছর জীবন থেকে অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলেছি বলে কেঁদে ফেলেন তারা, চাচা, চাচী, ভাই, দাদীসহ আত্মীয়-স্বজন অনেকে মারা গেলেও তাদের মাটি দিতে পারিনি। এদিকে, তহিদের স্ত্রী ১৬ বছরর জেলের কথা শুনে সেও জীবন থেকে দূরে সরে গিয়েছে। অপর দিকে, শাকিল এখনো বিয়ে করেনি। ছুটিত এসে বিয়ে হবার কথা ছিল।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর বাবা-মা, ভাই-বোনদের কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তহিদ ও শাকিল। তহিদের বাবা-মা আব্দুস সালাম ফকির ও মা বলেন, ‘আমার ছেলের জন্য আল্লাহর কাছে অনেক দোয়া করেছি যেন আমার সন্তান জেলখানা থেকে ফিরে আসার পর যেনো আমার মৃত্য হয়। আল্লাহ আমার কথা শুনছে। সন্তানকে কাছে না পাওয়ার বেদনা সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমার সন্তান আমার কাছে ফিরে এসেছে এটাই বড় পাওয়া। আজ আমরা খুব খুশি। তবে আমার সন্তানের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। মামলা প্রত্যাহার ও ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। তবে বিনাদোষে কারাভোগ ও চাকরি হারানোয় ক্ষতিপূরণসহ চাকরি ফেরত চেয়ে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তহিদকে দেখতে আসা দর্শনার বাসিন্দা ফয়সাল বলেন, খুবই দরিদ্র পরিবারর সন্তান। চাকরি করে ভাগ্য ফেরাতে চেয়েছিল। কিন্তু পিলখানার ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেছে পরিবারের। জেলখানায় তাকে দেখতে যাওয়ার মতো কেউ ছিল না। হত্যা ও বিষ্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে রাখা হয় তাকে। নিকট আত্মীয় -স্বজন মারা যাওয়ার সময় তাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়নি।
বিডিআর তহিদ বলেন, পিলখানার ঘটনার সময় ব্যারাকে থেকেও আসামি করা হয় আমাকে। করা হয় চাকরিচ্যুতও। চাকরি পুনর্বহাল, মামলা হতে অব্যাহতিসহ ১৬ বছরের পাওনাদি দেওয়ার দাবি জানাছি সরকারের কাছে। তিনি আরোও বলেন, ডিফেন্সে আমার অনেক সুনাম আছে আমি বাংলাদেশ বিডিআর খেলাধুলায় বক্সিংয়ে বাংলাদেশ সেরা বক্সার হিসাবে স্বর্ণ পদক পাই এবং বাংলাদেশ অলিম্পিক গেমস ব্রোঞ্জপদক পাই। যার কারণে আমাকে মাত্র তিন বছর চাকুরি জীবনে আমাকে ল্যান্স নায়েক হিসাবে প্রমোশন দেয়।
অপরদিকে বিডিআর শাকিল বলেন, ছাত্র আন্দলোনের কারণে আজ আমরা মুক্তি পেয়েছি তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি বর্তমান সরকার চাকরি পুনর্বহাল, মামলা হতে অব্যাহতিসহ ১৬ বছরের পাওনাদি দেওয়ার দাবি জানাই।