চুয়াডাঙ্গায় শেষ হলো দুই দিনব্যাপী ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রকাশনা উৎসব
শেষ দিনে শিক্ষার্থী ও বইপ্রেমীদের ভিড়, ব্যাপক সাড়া
- আপলোড টাইম : ০৯:৩৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৫১ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী প্রকাশনা উৎসব-২০২৫ সমাপ্ত হয়েছে। শেষ দিন গতকাল বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই আয়োজন শেষ হয়। বইপ্রেমী শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সরব উপস্থিতিতে উৎসবটি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে দুই দিনব্যাপী এই উৎসবের উদ্বোধন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অ্যাড. রুহুল আমিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাগর আহমেদ।
প্রকাশনা উৎসবে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে নতুন প্রকাশনার উন্মোচন ছাড়াও সংগঠনের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। আয়োজকরা জানান, শিক্ষার্থীদের নৈতিক ও সৃজনশীল চিন্তাচেতনার বিকাশ ঘটানোই এই উৎসবের অন্যতম লক্ষ্য। এদিকে, প্রকাশনা উৎসব উপলক্ষে সরকারি কলেজের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকাকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়। উৎসবস্থলে নতুন প্রকাশনা ও ইসলামী সাহিত্য প্রদর্শিত হয়, যা শিক্ষার্থী ও জ্ঞানপিপাসুদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। অংশগ্রহণকারীরা জানান, ছাত্রশিবিরের প্রকাশনাগুলো নতুন কিছু শেখার দারুণ সুযোগ করে দেয়।
পাঠক সোহানুর রহমান বলেন, ‘আমি ছাত্রশিবিরের এই প্রকাশনা উৎসবে এসে বেশ আনন্দিত। এখানে বিভিন্ন ধরনের বই পাওয়া যাচ্ছে, যা পাঠকদের আকৃষ্ট করছে। বিশেষ করে ইসলামি সাহিত্য, ইতিহাস ও সমসাময়িক বিষয়ে লেখা বইগুলো অনেক সমৃদ্ধ। বইয়ের আয়োজন, পরিবেশ ও মানুষের উপস্থিতি সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।’
চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রশিবিরের অর্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, ‘পাঠকেরা বিভিন্ন লেখকের ও বিভিন্ন বিষয়ের বই কিনেছেন, যা আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক। শুধুমাত্র ইসলামী ছাত্রশিবিরের সমর্থকেরাই নয়, তার থেকেও বড় অংশ সাধারণ শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন। প্রত্যাশার থেকেও বেশি মানুষের উপস্থিতি আমাদেরকে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে এমন আয়োজন করতে উৎসাহিত করছে। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের সঙ্গে এসে আগ্রহ নিয়ে ছাত্রশিবিরের সমর্থক ফরম পূরণ করেছেন, যা আমাদের কার্যক্রমের প্রতি মানুষের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।’
জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাগর আহমেদ তাদের প্রকাশনা উৎসব সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা প্রতি বছরই পাঠকদের জন্য এমন একটি আয়োজন করার চেষ্টা করি, কিন্তু পতিত স্বৈরাশাসক ১৬ বছরে আমাদের কথা বলার অধিকারও কেড়ে নিয়েছিল। আমাদের সকল কার্যক্রম থামিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাশাসকের পতন ঘটিয়েছে। যার ফলে আমরা আমাদের এবং ছাত্রশিবিরের সমর্থকদের কথা বলার ও তাদের কার্যক্রম মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। এই প্রকাশনা উৎসব মানুষের মধ্যে আমাদের কার্যক্রম জানিয়ে দেয়ারই একটি অংশ।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রকাশনা উৎসবে আমরা দেশের বিভিন্ন লেখকের বই দিয়ে সাজিয়েছি। যাতে পাঠকেরা সহজেই মানসম্পন্ন বই সংগ্রহ করতে পারেন। এই উৎসবে পাঠকদের আগ্রহ আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা চাই, বইপড়ার অভ্যাস আরও বিস্তৃত হোক এবং জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ুক সমাজে।’
দুই দিনব্যাপী এই প্রকাশনা উৎসব পরিচালনায় ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবির চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সেক্রেটারি হাফেজ আমিরুল ইসলাম, এইচআরডি সম্পাদক মোতালেব হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক আবু রায়হান, স্কুল ও কলেজ সম্পাদক পারভেজ আলম, সহকারী সাহিত্য সম্পাদক শান্ত আল মামুন, সহকারী আইটি সম্পাদক আব্দুর রহিম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ শাখার সেক্রেটারি মাসুদুর রহমানসহ চুয়াডাঙ্গা পৌর ও সরকারি কলেজের অন্যান্য দায়িত্বশীলবৃন্দ।