ইপেপার । আজ শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আসছে ছাত্রদের নয়া দল, তরুণ ভোটাররাই টার্গেট

চমক সৃষ্টি করতে শীর্ষ নেতৃত্ব ভোটের আগে দলে যোগ দেবেন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৩ বার পড়া হয়েছে

হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা শিক্ষার্থীরা তারুণ্য ভোটারদের টার্গেট করে শীঘ্রই নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দিচ্ছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দল ঘোষণার প্রাথমিক পরিকল্পনা থাকলেও শেষ সময় আরও কিছু হিসাব-নিকাশ করা হচ্ছে। দলের প্রধান এবং সেক্রেটারি কে হবেন এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম সারির ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে দুটো পরামর্শ এসেছে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন, চূড়ান্ত নেতৃত্বে থাকবেন তারা যেন শুরু থেকেই দলের অগ্রভাগে থাকেন। আবার আরেকটি অংশ মনে করছেন নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হলে বড় অংশ তখন পদবিসহ সামনে আসবেন। এতে নির্বাচনপূর্ব চমক আসবে। ভোটের হাওয়ায় তারুণ্যের দলে উত্তাপ আসবে। তাই ভোটের পূর্বে শীর্ষপদে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ এসেছে। কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় দল ঘোষণা হবে তাঁর একটি রোডম্যাপ ইতোমধ্যে দাঁড় করানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে দল ঘোষণা নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকা নির্ভরযোগ্য ছাত্ররা বলছেন, শহীদ পরিবারের চাওয়া চাহিদা এবং তাদের পরামর্শকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েই দলের ঘোষণা আসবে। একই সঙ্গে চব্বিশের আন্দোলনে আহত যোদ্ধাদের রাখা হবে দলের প্রথম সারিতে। জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুরের আবু সাঈদের বাড়ি থেকে লংমার্চ শুরু করে চট্টগ্রামের শহীদ ওয়াসিমের বাড়ি পর্যন্ত লংমার্চ করে এ দলের ঘোষণার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই লংমার্চ চলবে অন্তত ১৫ দিন। লংমার্চের শুরুতেই দল ঘোষণার বিষয়ে অধিক পরামর্শ এসেছে। এতে ১৫ দিনে পথে পথে কর্মসূচিতে সব দল মতের মানুষের অংশগ্রহণ এবং প্রচারণায় বেশি লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দল ঘোষণার পর অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়াও জানা যাবে। রাজপথে লংমার্চ থেকে উত্তর দেওয়ায়ও সুবিধা হবে। বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র জানায়, ছাত্রনেতারা মনে করছেন, পথে পথে কর্মসূচিতে যদি কোনো রাজনৈতিক দল থেকে বাধা আসে, কোনো ছাত্রনেতা হামলা আক্রমণের শিকার হয় তাহলে রাজনৈতিক অনেক লাভের হিসাবও থাকবে নতুন রাজনৈতিক দলের।
ছাত্র নেতৃত্বদ্বয় বলছেন, নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবেই থাকবে। এই প্ল্যাটফর্ম স্ব অবস্থায় থাকবে। যে প্ল্যাটফর্ম থেকে হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্ম প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। একই সঙ্গে চব্বিশের ছাত্রজনতার সকল হত্যার বিচার বাস্তবায়ন পর্যন্ত এটি কাজ করবে। তবে এই দুই অংশের কেউ চাইলে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারবেন। ইতোমধ্যে দক্ষ ও অভিজ্ঞদের দ্বারা তৈরি করা হচ্ছে দলীয় গঠনতন্ত্র। এ নিয়ে একটি বিশেষ কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪-এর চেতনার ওপর ভিত্তি করেই সব তৈরি করা হচ্ছে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ, রাজনীতি, কূটনীতিতে অভিজ্ঞ এবং বিশ্বব্যাপী রাজনীতির গ্রহণযোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়েই দলের মূল ভিত্তি দাঁড় করানো হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণদের চাওয়া চাহিদা থাকবে বেশি অগ্রাধিকার।
নতুন দলে নেতৃত্বে আসছে এমন কয়েকজন জানিয়েছেন, দুই রাজনৈতিক দলের ওপর দেশের মানুষ অনেকে বিরক্ত। এই দলগুলো নিজেদের সংস্কার করতে পারে না। তরুণদের বেশি অগ্রাধিকার দেন না। যার পেশি শক্তি রয়েছে, অবৈধ পথে সম্পদ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জনপ্রতিনিধি বানানো হয়। ফলে দেশের জনগণ অধিকার এবং সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। তরুণরা কী চায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলো অগ্রাধিকার দেন না। দলের ভাবনাকেই তারা সব সময় গুরুত্ব দেন। ফলে একটা দল ১৫ বছর অবৈধ ভোটে ক্ষমতায় ছিল আরেকটা দল নিজেদের সংস্কারের জন্য দলে কাউন্সিল পর্যন্ত করেনি। সিলেকশনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করেছেন। নিজ দলের মধ্যে মতামত প্রকাশ, ভোট দেওয়ার রীতি চালু রাখতে পারেননি। তাই তারুণ্যের বড় একটা অংশ হাসিনার পতনের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলে ভরসা, আস্থা রাখবেন বলে মনে করছেন তারা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১৫-১৯ বছর বয়সী এক কোটি ৬৫ লাখ ৬৭ হাজার ১৫০ জন ভোটার রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, দেশের প্রায় ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে তারুণ্যের সংখ্যা তিন কোটির অধিক। এছাড়া গত ১৫ বছরে হাসিনার শাসন আমলে ভোট দিতে পারেননি এমন সংখ্যা কয়েক কোটি হবে। নতুন রাজনৈতিক দলে যারা আসছেন, তারা মনে করছেন, আন্দোলন করে যে ছাত্ররা হাসিনাকে সরাতে পেরেছে, দেশকে দ্বিতীয়বার বিজয় করেছে, এমন তরুণরা কেউ আর পুরনো দলে যাবে না। গত ১৫ বছর একটি দলের শাসনে মানুষ বিরক্ত আরেকটি দলের ব্যর্থতায় মানুষ অতিষ্ঠ। এখন মানুষ তারুণ্য শক্তিকে খুঁজে নেবে।
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, শীঘ্রই আমাদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হবে। আমাদের সঙ্গ বিপ্লবী, সিভিল সোসাইটি এবং পলিটিক্যাল তিন ধরনের লোক আছেন। যারা রাজনীতি করতে চান তারা অবশ্যই যদি নতুন রাজনৈতিক দলের পছন্দ হয় সেখানে তারা যোগ দিতে পারবেন। তাদের নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্তা নেই বলেও দাবি করেন তিনি। নাসীরুদ্দীন বলেন, আসলে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন। সেই সময় থেকেই মানুষের মনে কিংস পার্টির আইডিয়া রয়ে গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, খুব শীঘ্রই আশা করছি, নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে। এর গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র তৈরিসহ অন্যান্য কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে এখানো দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদে কারা থাকবেন তা নিয়েও কাজ চলছে। আমাদের নিয়মিত আলোচনা হচ্ছে। ছাত্র আন্দোলনে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, একটি নতুন রাজনৈতিক দল হবে তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থাকবে অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে। নতুন দল ঘোষণা হওয়ার পর এই দুই সংগঠন থেকে অনেকেই এ দলে যোগ দিতে পারবেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা বলেন, অর্গানিক ও টেকসই রাজনৈতিক দল গঠনের কাজ আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে আমরা সারাদেশ সফর করছি। মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার কথা জানার চেষ্টা করছি। দলের গঠনতন্ত্রের কাজ চলমান রয়েছে। অভিজ্ঞদের মাধ্যমে গঠনতন্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। তরুণরাই আমাদের রাজনৈতিক দলের শক্তি। চব্বিশের শহীদ পরিবারের স্বপ্ন এবং চেতনা বাস্তবায়ন থাকবে সর্বাধিক অগ্রাধিকারে। যে তরুণরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই গণ-অভ্যত্থানে দেখিয়েছেন সেই তরুণরাই নতুন রাজনীতির ধারা নিয়ে আসবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

আসছে ছাত্রদের নয়া দল, তরুণ ভোটাররাই টার্গেট

চমক সৃষ্টি করতে শীর্ষ নেতৃত্ব ভোটের আগে দলে যোগ দেবেন

আপলোড টাইম : ০৯:২৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করা শিক্ষার্থীরা তারুণ্য ভোটারদের টার্গেট করে শীঘ্রই নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দিচ্ছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে দল ঘোষণার প্রাথমিক পরিকল্পনা থাকলেও শেষ সময় আরও কিছু হিসাব-নিকাশ করা হচ্ছে। দলের প্রধান এবং সেক্রেটারি কে হবেন এখনো তা চূড়ান্ত হয়নি। ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম সারির ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে দুটো পরামর্শ এসেছে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন, চূড়ান্ত নেতৃত্বে থাকবেন তারা যেন শুরু থেকেই দলের অগ্রভাগে থাকেন। আবার আরেকটি অংশ মনে করছেন নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা হলে বড় অংশ তখন পদবিসহ সামনে আসবেন। এতে নির্বাচনপূর্ব চমক আসবে। ভোটের হাওয়ায় তারুণ্যের দলে উত্তাপ আসবে। তাই ভোটের পূর্বে শীর্ষপদে যুক্ত হওয়ার পরামর্শ এসেছে। কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় দল ঘোষণা হবে তাঁর একটি রোডম্যাপ ইতোমধ্যে দাঁড় করানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে দল ঘোষণা নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকা নির্ভরযোগ্য ছাত্ররা বলছেন, শহীদ পরিবারের চাওয়া চাহিদা এবং তাদের পরামর্শকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েই দলের ঘোষণা আসবে। একই সঙ্গে চব্বিশের আন্দোলনে আহত যোদ্ধাদের রাখা হবে দলের প্রথম সারিতে। জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুরের আবু সাঈদের বাড়ি থেকে লংমার্চ শুরু করে চট্টগ্রামের শহীদ ওয়াসিমের বাড়ি পর্যন্ত লংমার্চ করে এ দলের ঘোষণার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই লংমার্চ চলবে অন্তত ১৫ দিন। লংমার্চের শুরুতেই দল ঘোষণার বিষয়ে অধিক পরামর্শ এসেছে। এতে ১৫ দিনে পথে পথে কর্মসূচিতে সব দল মতের মানুষের অংশগ্রহণ এবং প্রচারণায় বেশি লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে দল ঘোষণার পর অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়াও জানা যাবে। রাজপথে লংমার্চ থেকে উত্তর দেওয়ায়ও সুবিধা হবে। বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র জানায়, ছাত্রনেতারা মনে করছেন, পথে পথে কর্মসূচিতে যদি কোনো রাজনৈতিক দল থেকে বাধা আসে, কোনো ছাত্রনেতা হামলা আক্রমণের শিকার হয় তাহলে রাজনৈতিক অনেক লাভের হিসাবও থাকবে নতুন রাজনৈতিক দলের।
ছাত্র নেতৃত্বদ্বয় বলছেন, নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবেই থাকবে। এই প্ল্যাটফর্ম স্ব অবস্থায় থাকবে। যে প্ল্যাটফর্ম থেকে হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। এই প্ল্যাটফর্ম প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। একই সঙ্গে চব্বিশের ছাত্রজনতার সকল হত্যার বিচার বাস্তবায়ন পর্যন্ত এটি কাজ করবে। তবে এই দুই অংশের কেউ চাইলে নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারবেন। ইতোমধ্যে দক্ষ ও অভিজ্ঞদের দ্বারা তৈরি করা হচ্ছে দলীয় গঠনতন্ত্র। এ নিয়ে একটি বিশেষ কমিটিও ঘোষণা করা হয়েছে। ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪-এর চেতনার ওপর ভিত্তি করেই সব তৈরি করা হচ্ছে। সংবিধান বিশেষজ্ঞ, রাজনীতি, কূটনীতিতে অভিজ্ঞ এবং বিশ্বব্যাপী রাজনীতির গ্রহণযোগ্যতাকে প্রাধান্য দিয়েই দলের মূল ভিত্তি দাঁড় করানো হচ্ছে। বিশেষ করে তরুণদের চাওয়া চাহিদা থাকবে বেশি অগ্রাধিকার।
নতুন দলে নেতৃত্বে আসছে এমন কয়েকজন জানিয়েছেন, দুই রাজনৈতিক দলের ওপর দেশের মানুষ অনেকে বিরক্ত। এই দলগুলো নিজেদের সংস্কার করতে পারে না। তরুণদের বেশি অগ্রাধিকার দেন না। যার পেশি শক্তি রয়েছে, অবৈধ পথে সম্পদ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের জনপ্রতিনিধি বানানো হয়। ফলে দেশের জনগণ অধিকার এবং সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। তরুণরা কী চায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলো অগ্রাধিকার দেন না। দলের ভাবনাকেই তারা সব সময় গুরুত্ব দেন। ফলে একটা দল ১৫ বছর অবৈধ ভোটে ক্ষমতায় ছিল আরেকটা দল নিজেদের সংস্কারের জন্য দলে কাউন্সিল পর্যন্ত করেনি। সিলেকশনের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন করেছেন। নিজ দলের মধ্যে মতামত প্রকাশ, ভোট দেওয়ার রীতি চালু রাখতে পারেননি। তাই তারুণ্যের বড় একটা অংশ হাসিনার পতনের নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলে ভরসা, আস্থা রাখবেন বলে মনে করছেন তারা।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ১৫-১৯ বছর বয়সী এক কোটি ৬৫ লাখ ৬৭ হাজার ১৫০ জন ভোটার রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্র বলছে, দেশের প্রায় ১২ কোটি ভোটারের মধ্যে তারুণ্যের সংখ্যা তিন কোটির অধিক। এছাড়া গত ১৫ বছরে হাসিনার শাসন আমলে ভোট দিতে পারেননি এমন সংখ্যা কয়েক কোটি হবে। নতুন রাজনৈতিক দলে যারা আসছেন, তারা মনে করছেন, আন্দোলন করে যে ছাত্ররা হাসিনাকে সরাতে পেরেছে, দেশকে দ্বিতীয়বার বিজয় করেছে, এমন তরুণরা কেউ আর পুরনো দলে যাবে না। গত ১৫ বছর একটি দলের শাসনে মানুষ বিরক্ত আরেকটি দলের ব্যর্থতায় মানুষ অতিষ্ঠ। এখন মানুষ তারুণ্য শক্তিকে খুঁজে নেবে।
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, শীঘ্রই আমাদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হবে। আমাদের সঙ্গ বিপ্লবী, সিভিল সোসাইটি এবং পলিটিক্যাল তিন ধরনের লোক আছেন। যারা রাজনীতি করতে চান তারা অবশ্যই যদি নতুন রাজনৈতিক দলের পছন্দ হয় সেখানে তারা যোগ দিতে পারবেন। তাদের নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের সম্পৃক্তা নেই বলেও দাবি করেন তিনি। নাসীরুদ্দীন বলেন, আসলে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন। সেই সময় থেকেই মানুষের মনে কিংস পার্টির আইডিয়া রয়ে গেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, খুব শীঘ্রই আশা করছি, নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করবে। এর গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র তৈরিসহ অন্যান্য কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে এখানো দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদে কারা থাকবেন তা নিয়েও কাজ চলছে। আমাদের নিয়মিত আলোচনা হচ্ছে। ছাত্র আন্দোলনে ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, একটি নতুন রাজনৈতিক দল হবে তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি থাকবে অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে। নতুন দল ঘোষণা হওয়ার পর এই দুই সংগঠন থেকে অনেকেই এ দলে যোগ দিতে পারবেন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা বলেন, অর্গানিক ও টেকসই রাজনৈতিক দল গঠনের কাজ আমরা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে আমরা সারাদেশ সফর করছি। মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার কথা জানার চেষ্টা করছি। দলের গঠনতন্ত্রের কাজ চলমান রয়েছে। অভিজ্ঞদের মাধ্যমে গঠনতন্ত্র তৈরি করা হচ্ছে। তরুণরাই আমাদের রাজনৈতিক দলের শক্তি। চব্বিশের শহীদ পরিবারের স্বপ্ন এবং চেতনা বাস্তবায়ন থাকবে সর্বাধিক অগ্রাধিকারে। যে তরুণরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে জুলাই গণ-অভ্যত্থানে দেখিয়েছেন সেই তরুণরাই নতুন রাজনীতির ধারা নিয়ে আসবেন।