ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কে গাছ ফেলে ও বোমা ফাটিয়ে ডাকাত দলের তাণ্ডব

যানবাহন থামিয়ে গণডাকাতি, ছাড় পায়নি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সও

ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক, আলমডাঙ্গা:
  • আপলোড টাইম : ১০:১০:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৫৩ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গায় সড়কে গাছ ফেলে ও বোমা ফাটিয়ে গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার দিবাগত রাত ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের শ্রীরামপুর নামক স্থানে প্রধান সড়কে গাছ ফেলে ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ডাকাত দল এই তাণ্ডব চালায়। ডাকাত দলের সদস্যরা বাস-ট্রাক, পিকআপ, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স আটকে নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেয়। এর মধ্যে রয়েছে একটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স, কুষ্টিয়াতে রোগী রেখে ফেরার পথে দুটি অ্যাম্বুলেন্স, ছয়টি ট্রাক ও একটি পিকআপ।

কুষ্টিয়ার ড্রাম ট্রাক ড্রাইভার মিতুল বলেন, ‘আমি রাতে কুষ্টিয়া থেকে আলমডাঙ্গায় বালু নিয়ে এসেছিলাম। বালু নামিয়ে ফিরছিলাম। হঠাৎ আমার গাড়ির সামনে গাছ ফেলে আমার পথ অবরোধ করে ও পরপর চারটি বোম বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আমাদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এসময় আমার কাছ থেকে ৪২ হাজার টাকা, হেলপার সবুজের নিকট থাকা ২ হাজার ৫০০ টাকা ও মোবাইল কেড়ে নেয় ডাকাতরা। তারা ১০-১৫ জন ছিল, সবার মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল।’
আরেক ট্রাক চালক শ্রী বকুল রায় বলেন, তার গাড়ির পিছনেই পরপর চারটি বোমা ফাটিয়েছে ডাকাত দলের সদস্যরা। তার নিকট অল্প কিছু টাকা ছিল, সেগুলো তারা নিয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গার অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার শরিফুল বলেন, ‘আমি কুষ্টিয়ায় রোগী নামিয়ে ফিরছিলাম। হঠাৎ করেই সামনে দেখি রাস্তার ওপর একটি গাছ ফেলা, আরেকটি ট্রাক দাঁড়ানো। আমার নিকট থাকা ৫ হাজার টাকার মতো ছিনিয়ে নিয়েছে ডাকাত দলের সদস্যরা।’

এদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলা ডাউকি ইউনিয়নের ডাউকি গ্রামের একজন মহিলা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার কারণে অ্যাম্বুলেন্স যোগে লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন স্বজনেরা। এসময় তাদের আটক করে ডাকাত দল। তাদের নিকট কোনো টাকা পয়সা আছে কি না জিজ্ঞাসা করে টাকা-পয়সা নেই জানতে পারার পরেও লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে তল্লাশি চালায় ডাকাত দলের সদস্যরা। ডাকাতের কবলে পড়া ড্রাইভাররা বলেন, হঠাৎ পুলিশের গাড়ির হুটারের শব্দ শুনতে পেয়েই গ্রামের দিকের মাঠে নেমে পড়ে ডাকার দলের সদস্যরা।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সংবাদ পেয়েই সাথে সাথে আমি ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। এই ডাকাতের সাথে যে বা যারা জড়িত, তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো প্রকার লিখিত অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেনি।’

উল্লেখ্য, আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের সাদা ব্রিজ থেকে কম্বলপুর ব্রিজের মধ্যবর্তী রাস্তায় বেশকিছু বছর আগে প্রায়ই ডাকাতিসহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটত। তবে মাঝে এই ধরনের ঘটনা শোনা যায়নি। কিন্তু সম্প্রতি ফের ডাকাতিসহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এতে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কে গাছ ফেলে ও বোমা ফাটিয়ে ডাকাত দলের তাণ্ডব

যানবাহন থামিয়ে গণডাকাতি, ছাড় পায়নি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সও

আপলোড টাইম : ১০:১০:৩১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

আলমডাঙ্গায় সড়কে গাছ ফেলে ও বোমা ফাটিয়ে গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার দিবাগত রাত ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের শ্রীরামপুর নামক স্থানে প্রধান সড়কে গাছ ফেলে ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ডাকাত দল এই তাণ্ডব চালায়। ডাকাত দলের সদস্যরা বাস-ট্রাক, পিকআপ, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স আটকে নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল ছিনিয়ে নেয়। এর মধ্যে রয়েছে একটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স, কুষ্টিয়াতে রোগী রেখে ফেরার পথে দুটি অ্যাম্বুলেন্স, ছয়টি ট্রাক ও একটি পিকআপ।

কুষ্টিয়ার ড্রাম ট্রাক ড্রাইভার মিতুল বলেন, ‘আমি রাতে কুষ্টিয়া থেকে আলমডাঙ্গায় বালু নিয়ে এসেছিলাম। বালু নামিয়ে ফিরছিলাম। হঠাৎ আমার গাড়ির সামনে গাছ ফেলে আমার পথ অবরোধ করে ও পরপর চারটি বোম বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আমাদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এসময় আমার কাছ থেকে ৪২ হাজার টাকা, হেলপার সবুজের নিকট থাকা ২ হাজার ৫০০ টাকা ও মোবাইল কেড়ে নেয় ডাকাতরা। তারা ১০-১৫ জন ছিল, সবার মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল।’
আরেক ট্রাক চালক শ্রী বকুল রায় বলেন, তার গাড়ির পিছনেই পরপর চারটি বোমা ফাটিয়েছে ডাকাত দলের সদস্যরা। তার নিকট অল্প কিছু টাকা ছিল, সেগুলো তারা নিয়ে গেছে। চুয়াডাঙ্গার অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার শরিফুল বলেন, ‘আমি কুষ্টিয়ায় রোগী নামিয়ে ফিরছিলাম। হঠাৎ করেই সামনে দেখি রাস্তার ওপর একটি গাছ ফেলা, আরেকটি ট্রাক দাঁড়ানো। আমার নিকট থাকা ৫ হাজার টাকার মতো ছিনিয়ে নিয়েছে ডাকাত দলের সদস্যরা।’

এদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলা ডাউকি ইউনিয়নের ডাউকি গ্রামের একজন মহিলা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার কারণে অ্যাম্বুলেন্স যোগে লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন স্বজনেরা। এসময় তাদের আটক করে ডাকাত দল। তাদের নিকট কোনো টাকা পয়সা আছে কি না জিজ্ঞাসা করে টাকা-পয়সা নেই জানতে পারার পরেও লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে তল্লাশি চালায় ডাকাত দলের সদস্যরা। ডাকাতের কবলে পড়া ড্রাইভাররা বলেন, হঠাৎ পুলিশের গাড়ির হুটারের শব্দ শুনতে পেয়েই গ্রামের দিকের মাঠে নেমে পড়ে ডাকার দলের সদস্যরা।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার সংবাদ পেয়েই সাথে সাথে আমি ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। এই ডাকাতের সাথে যে বা যারা জড়িত, তাদের আটকের চেষ্টা চলছে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো প্রকার লিখিত অভিযোগ বা মামলা দায়ের করেনি।’

উল্লেখ্য, আলমডাঙ্গা-কুষ্টিয়া সড়কের সাদা ব্রিজ থেকে কম্বলপুর ব্রিজের মধ্যবর্তী রাস্তায় বেশকিছু বছর আগে প্রায়ই ডাকাতিসহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটত। তবে মাঝে এই ধরনের ঘটনা শোনা যায়নি। কিন্তু সম্প্রতি ফের ডাকাতিসহ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এতে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও।