ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে বিএনপির নামে চাঁদাবাজির নাটক

নেহালপুর ও মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির কড়া প্রতিবাদ

প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৯:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৬ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠার পর তা বন্ধের জন্য গ্রামবাসী প্রতিবাদ জানালে ঠিকাদার ও প্রধান শিক্ষক নিজেদের অপকর্ম লুকাতে প্রচার করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে না পারায় তারা কাজ বন্ধের হুমকি দিচ্ছেন। যা নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এদিকে, গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ও নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে কে বা কারা চাঁদাদাবি করেছে, তা জানতে চান। এসময় প্রধান শিক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। অন্যদিকে, বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে জানতে পেরে ঠিকাদার ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন।

এ বিষয়ে নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফরজ আলী বলেন, ‘লোকমুখে শুনছি শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজে ঠিকাদারের কাছে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কে বা কারা নাকি চাঁদা দাবি করেছে। যা আমাদের দলের জন্য লজ্জাজনক। যদি সত্যিই কেউ বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা দাবি করে, তার নাম প্রকাশ করা হোক। আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরগনি বলেন, ‘বিদ্যালয়টি আমাদের এলাকার সম্পদ। এখানে নিম্নমানের ইট, বালু ও রড দিয়ে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে, তা এলাকাবাসী জানার পর বাধা দিলে ঠিকাদার বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য চাঁদাবাজির নাটক প্রচার করেন।’

নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ও ঠিকাদার মিলে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতেই চাঁদাবাজির নাটক সাজানোর চেষ্টা করে। আজ আমরা এসেছি, কে চাঁদা দাবি করেছে, তার নাম প্রকাশ করতে হবে।’ দর্শনা থানা যুবদলের সদস্যসচিব সাজেদুর রহমান মিলন বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে শিডিউলের বাইরে কাজ করতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি চাঁদা দাবি করে, তার বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেব। কিন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মাণ করতে দেব না।’

জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করার পর নিয়মমাফিক কাজ পায় কুষ্টিয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আনোয়ার আলী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ঠিকাদার আত্মগোপনে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুয়াডাঙ্গার শাকিল নামের একজন কাজ শুরু করেন। ১ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭০ টাকা ব্যয়ে ১ থেকে ৩ তলা পর্যন্ত বিল্ডিং নির্মাণ ও সংস্কারের কাজের শুরুতেই নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া ও রড এর ব্যবহার দেখে গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিয়োজিত শাকিল আহমেদ বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে প্রচারণা চালায় বিএনপির লোকজন চাঁদা দাবি করায় কাজ করতে পারছি না।

এদিকে, এই কাজ দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশলী এখন পর্যন্ত কাজের সাইট পরিদর্শন করেনি বলে অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি বলেন, কাজে কোনো ধরনের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হবে না। আগে যা করা হয়েছে তা বাতিল করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদরের মাখালডাঙ্গা ও নেহালপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত হওয়ায় শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এলাকাবাসীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে কোনো অনিয়ম মেনে না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে এলাকাবাসী।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে বিএনপির নামে চাঁদাবাজির নাটক

নেহালপুর ও মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির কড়া প্রতিবাদ

আপলোড টাইম : ০৮:৩৯:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ ওঠার পর তা বন্ধের জন্য গ্রামবাসী প্রতিবাদ জানালে ঠিকাদার ও প্রধান শিক্ষক নিজেদের অপকর্ম লুকাতে প্রচার করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে না পারায় তারা কাজ বন্ধের হুমকি দিচ্ছেন। যা নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এদিকে, গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ও নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে কে বা কারা চাঁদাদাবি করেছে, তা জানতে চান। এসময় প্রধান শিক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। অন্যদিকে, বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছে জানতে পেরে ঠিকাদার ঘটনাস্থলে উপস্থিত না হয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন।

এ বিষয়ে নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ফরজ আলী বলেন, ‘লোকমুখে শুনছি শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজে ঠিকাদারের কাছে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কে বা কারা নাকি চাঁদা দাবি করেছে। যা আমাদের দলের জন্য লজ্জাজনক। যদি সত্যিই কেউ বিএনপি বা অঙ্গ সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা দাবি করে, তার নাম প্রকাশ করা হোক। আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

মাখালডাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরগনি বলেন, ‘বিদ্যালয়টি আমাদের এলাকার সম্পদ। এখানে নিম্নমানের ইট, বালু ও রড দিয়ে নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে, তা এলাকাবাসী জানার পর বাধা দিলে ঠিকাদার বিষয়টি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য চাঁদাবাজির নাটক প্রচার করেন।’

নেহালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ও ঠিকাদার মিলে নিজেদের অপকর্ম ঢাকতেই চাঁদাবাজির নাটক সাজানোর চেষ্টা করে। আজ আমরা এসেছি, কে চাঁদা দাবি করেছে, তার নাম প্রকাশ করতে হবে।’ দর্শনা থানা যুবদলের সদস্যসচিব সাজেদুর রহমান মিলন বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে শিডিউলের বাইরে কাজ করতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি চাঁদা দাবি করে, তার বিরুদ্ধে আমরা সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেব। কিন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ভবন নির্মাণ করতে দেব না।’

জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করার পর নিয়মমাফিক কাজ পায় কুষ্টিয়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আনোয়ার আলী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ঠিকাদার আত্মগোপনে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুয়াডাঙ্গার শাকিল নামের একজন কাজ শুরু করেন। ১ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭০ টাকা ব্যয়ে ১ থেকে ৩ তলা পর্যন্ত বিল্ডিং নির্মাণ ও সংস্কারের কাজের শুরুতেই নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া ও রড এর ব্যবহার দেখে গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিয়োজিত শাকিল আহমেদ বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে প্রচারণা চালায় বিএনপির লোকজন চাঁদা দাবি করায় কাজ করতে পারছি না।

এদিকে, এই কাজ দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রকৌশলী এখন পর্যন্ত কাজের সাইট পরিদর্শন করেনি বলে অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি বলেন, কাজে কোনো ধরনের নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হবে না। আগে যা করা হয়েছে তা বাতিল করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদরের মাখালডাঙ্গা ও নেহালপুর ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত হওয়ায় শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি এলাকাবাসীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এই বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে কোনো অনিয়ম মেনে না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে এলাকাবাসী।