ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা রাইজিং অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ

পার্লামেন্টে সিট দিয়ে আমাদের কিনতে পারবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৮:২৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৯ বার পড়া হয়েছে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘কাদের কাদের আওয়ামী লীগের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল, আমাদের জানা আছে। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করার জন্য দালালি করছে। তারা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকবে কি না, সেই চিন্তায় আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের শাস্তির বিষয়ে কিছু বলছে না। আমাদেরকে হাসিনা-আওয়ামী লীগ কিনতে পারে নাই। পার্লামেন্টে সিট দিয়ে আমাদের কিনতে পারবেন না। আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। দয়া করে ক্ষমতামুখি হয়েন না। যারা ক্ষমতামুখি হয়েছেন, তাদেরকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।’
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে চারটায় চুয়াডাঙ্গা শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চ (সরকারি কলেজের বিপরীতে) প্রাঙ্গনে চুয়াডাঙ্গা নাগরিক কমিটির আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা রাইজিং অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এসময় তিনি আরও বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গাতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়নের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিকল্প নেই। চুয়াডাঙ্গাতে কোনো উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়নি। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা যে সরকারই আসুক, শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপা কিন্তু চুয়াডাঙ্গার পাশেই আছে। আপনাদের প্রতিরোধ করেই কিস্তু ওনাকে ঢাকায় যেতে হবে। টুক করে আপা কিন্তু ঢুকে পড়বে, খেয়াল রাখিয়েন। আওয়ামী লীগের আমলে তিনটা নির্বাচনে যে ভোট দিয়েছে, সে ৩০-৪০টা করে দিয়েছে। আবার যে দিতে পারেনি, সে একটাও পারেনি। গত ১৬ বছর আপনাদের নির্যাতনের মধ্যদিয়ে যেতে হয়েছে। গণহত্যার কারণে ইতিহাসে খুনি শেখ হাসিনার নাম লেখা থাকবে।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘প্রশাসনের মধ্যে মাফিয়াতন্ত্র ছিল। বিচারব্যবস্থা গণভবন থেকে পরিচালিত হতো। আমরা প্রশাসনে সংস্কার চাই। আমরা দেখেছি ওসি, ইউএনও, ডিসি, এসপি, ডিআইজি ভোটের আগে রাতে বিক্রি হতেন। সব হারুণ না, সব বেনজির না। আমরা আপনাদের ধারণ করতে চাই। হাসিনার পথকে আপনাদের অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই। দালালি করলে হারুণ-বেনজিরের মতো পালাতে হবে। পুলিশ আমাদের ভাই ভাই। আপনাদের জনমুখি হতে হতে হবে।’

oplus_2

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, এই আলোচনা অনেক পরে। আগে খুনি হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামানের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের কমিটির লিস্ট ধরে ধরে বিচার করতে হবে। তারপর আলোচনা হবে, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে কি করবে না। আগে বিচার নিশ্চিতের জন্য রাজনৈতিক দল থেকে দাবি তুলুন। আওয়ামী লীগ আমাদের দেশের টাকা লুট করে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনার আমার রাজনৈতিক বিভাজন প্রয়োজন নেই। পরবর্তী বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করব। আমাদের বিভক্তিতে ফ্যাসিস্টদের লাভ। আওয়ামী লীগের পুর্নবাসন ঠেকাতে আমাদের এক হয়ে থাকতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আসলাম অর্কের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব সাফফাতুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সেল সদস্য মোল্লা এহসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক বাবু খান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মেহেরপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা সদস্যসচিব মুস্তাফিজুর রহমান, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য এস এম আসরাফ সুইট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর রহমান অনিক, মুখ্য সংগঠক সজিবুল ইসলাম, সংগঠক কামরুল হাসান কাজল, সংগঠক আর রিফাত, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম, সদস্যসচিব ফাহিম উদ্দীন, জীবননগর প্রতিনিধি সোহেল পারভেজ প্রমুখ।
ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অভ্যুত্থানের শক্তি নাগরিক, আহত ও শহীদ পরিবারের সাথে তরুণ নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি চুয়াডাঙ্গা রাইজিং শিরোনামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

চুয়াডাঙ্গা রাইজিং অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ

পার্লামেন্টে সিট দিয়ে আমাদের কিনতে পারবেন না

আপলোড টাইম : ০৮:২৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৫

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, ‘কাদের কাদের আওয়ামী লীগের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল, আমাদের জানা আছে। কেউ কেউ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করার জন্য দালালি করছে। তারা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকবে কি না, সেই চিন্তায় আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের শাস্তির বিষয়ে কিছু বলছে না। আমাদেরকে হাসিনা-আওয়ামী লীগ কিনতে পারে নাই। পার্লামেন্টে সিট দিয়ে আমাদের কিনতে পারবেন না। আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি হয়েছে, তা ধরে রাখতে হবে। দয়া করে ক্ষমতামুখি হয়েন না। যারা ক্ষমতামুখি হয়েছেন, তাদেরকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে।’
গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে চারটায় চুয়াডাঙ্গা শিল্পকলা একাডেমির মুক্ত মঞ্চ (সরকারি কলেজের বিপরীতে) প্রাঙ্গনে চুয়াডাঙ্গা নাগরিক কমিটির আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা রাইজিং অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এসময় তিনি আরও বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গাতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। উন্নয়নের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিকল্প নেই। চুয়াডাঙ্গাতে কোনো উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়নি। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বা যে সরকারই আসুক, শিক্ষার উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপা কিন্তু চুয়াডাঙ্গার পাশেই আছে। আপনাদের প্রতিরোধ করেই কিস্তু ওনাকে ঢাকায় যেতে হবে। টুক করে আপা কিন্তু ঢুকে পড়বে, খেয়াল রাখিয়েন। আওয়ামী লীগের আমলে তিনটা নির্বাচনে যে ভোট দিয়েছে, সে ৩০-৪০টা করে দিয়েছে। আবার যে দিতে পারেনি, সে একটাও পারেনি। গত ১৬ বছর আপনাদের নির্যাতনের মধ্যদিয়ে যেতে হয়েছে। গণহত্যার কারণে ইতিহাসে খুনি শেখ হাসিনার নাম লেখা থাকবে।’

হাসনাত আব্দুল্লাহ পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘প্রশাসনের মধ্যে মাফিয়াতন্ত্র ছিল। বিচারব্যবস্থা গণভবন থেকে পরিচালিত হতো। আমরা প্রশাসনে সংস্কার চাই। আমরা দেখেছি ওসি, ইউএনও, ডিসি, এসপি, ডিআইজি ভোটের আগে রাতে বিক্রি হতেন। সব হারুণ না, সব বেনজির না। আমরা আপনাদের ধারণ করতে চাই। হাসিনার পথকে আপনাদের অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই। দালালি করলে হারুণ-বেনজিরের মতো পালাতে হবে। পুলিশ আমাদের ভাই ভাই। আপনাদের জনমুখি হতে হতে হবে।’

oplus_2

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, এই আলোচনা অনেক পরে। আগে খুনি হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামানের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের কমিটির লিস্ট ধরে ধরে বিচার করতে হবে। তারপর আলোচনা হবে, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে কি করবে না। আগে বিচার নিশ্চিতের জন্য রাজনৈতিক দল থেকে দাবি তুলুন। আওয়ামী লীগ আমাদের দেশের টাকা লুট করে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনার আমার রাজনৈতিক বিভাজন প্রয়োজন নেই। পরবর্তী বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করব। আমাদের বিভক্তিতে ফ্যাসিস্টদের লাভ। আওয়ামী লীগের পুর্নবাসন ঠেকাতে আমাদের এক হয়ে থাকতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আসলাম অর্কের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব সাফফাতুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সেল সদস্য মোল্লা এহসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক বাবু খান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মেহেরপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ, কুষ্টিয়া জেলা সদস্যসচিব মুস্তাফিজুর রহমান, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য এস এম আসরাফ সুইট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর রহমান অনিক, মুখ্য সংগঠক সজিবুল ইসলাম, সংগঠক কামরুল হাসান কাজল, সংগঠক আর রিফাত, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম, সদস্যসচিব ফাহিম উদ্দীন, জীবননগর প্রতিনিধি সোহেল পারভেজ প্রমুখ।
ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অভ্যুত্থানের শক্তি নাগরিক, আহত ও শহীদ পরিবারের সাথে তরুণ নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক কমিটি চুয়াডাঙ্গা রাইজিং শিরোনামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।