ইপেপার । আজ রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শেয়াল, গন্ধগোকুল, বেজি ও কুকুরের মৃত্যু, স্থানীয়দের ক্ষোভ

চুয়াডাঙ্গার দীননাথপুরে ভুট্টাখেতে বিষটোপ দিয়ে বন্যপ্রাণি হত্যার অভিযোগ

ঘটনার তদন্তে খুলনার বন্যপ্রাণি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর, কৃষকের বিরুদ্ধে জিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১১:০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৪ বার পড়া হয়েছে


চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের দীননাথপুর গ্রামের নড়িতলার মাঠে কয়েকটি শেয়াল, একটি গন্ধগোকুল, একটি বেজি ও একটি পোষা কুকুরসহ বিভিন্ন প্রাণির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয়রা প্রাণিগুলোর মৃতদেহ দেখতে পান। এদিকে, তদন্তে গতকালই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বন্যপ্রাণি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর খুলনার একটি টিম। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষটোপে বিভিন্ন বন্যপ্রাণির মৃত্যুর প্রমাণ পান এবং অভিযুক্ত চাষির বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরিটি করেছেন খুলনা বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ফরেস্ট গার্ড মো. রাসেল মিয়া।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাখালডাঙ্গার নবীছদ্দীর ছেলে ফারুক তার ভুট্টাখেতে নিষিদ্ধ ফুরাডন বিষ প্রয়োগ করেন। এতে শেয়াল, গন্ধগোকুল, বেজি এবং অজ্ঞাত আরও অনেক বন্যপ্রাণি মারা যায়। ফুরাডন বিষ প্রয়োগে বিভিন্ন বন্যপ্রাণির মৃত্যু হতে পারে জেনে এলাকার যুবকরা ফারুককে নিষেধ করেন। তা সত্ত্বেও ফারুক বিষ প্রয়োগ বন্ধ করেননি এবং তার প্রয়োগকৃত বিষটোপে বিভিন্ন প্রাণির মৃত্যু ঘটে। খবর পেয়ে গতকালই ঘটনাস্থলে ছুটে যান চুয়াডাঙ্গা জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীন, পরিবেশবাদী সংগঠন পানকৌড়ির সভাপতি বখতিয়ার হামিদ ও থানা পুলিশের একটি দল। এদিকে, বন্যপ্রাণি হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পানকৌড়ির সভাপতি বখতিয়ার হামিদ বলেন, ‘এতগুলো প্রাণ একসঙ্গে হত্যা করার কোনো যুক্তি নেই। এটি পরিবেশ এবং প্রাণিবৈচিত্রের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হবে। আমরা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।’ তিনি জানান, গতকালই বন বিভাগের কর্মকর্তা ও পুলিশ ভুট্টাখেত পরিদর্শন করেছেন। তারা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন।
জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, অভিযুক্ত কৃষকের ভুট্টাখেতে ক্ষয়-ক্ষতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিষটোপে বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণির মৃত্যুর সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, ‘বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইন ২০১২ অনুযায়ী, এভাবে বন্যপ্রাণি হত্যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমরা ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছি। অপরাধ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। আমরা ঘটনাটির তদন্তের জন্য কোর্টের অনুমতির অপেক্ষা করছি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

শেয়াল, গন্ধগোকুল, বেজি ও কুকুরের মৃত্যু, স্থানীয়দের ক্ষোভ

চুয়াডাঙ্গার দীননাথপুরে ভুট্টাখেতে বিষটোপ দিয়ে বন্যপ্রাণি হত্যার অভিযোগ

ঘটনার তদন্তে খুলনার বন্যপ্রাণি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর, কৃষকের বিরুদ্ধে জিডি

আপলোড টাইম : ১১:০৪:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫


চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মাখালডাঙ্গা ইউনিয়নের দীননাথপুর গ্রামের নড়িতলার মাঠে কয়েকটি শেয়াল, একটি গন্ধগোকুল, একটি বেজি ও একটি পোষা কুকুরসহ বিভিন্ন প্রাণির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয়রা প্রাণিগুলোর মৃতদেহ দেখতে পান। এদিকে, তদন্তে গতকালই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বন্যপ্রাণি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ দপ্তর খুলনার একটি টিম। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিষটোপে বিভিন্ন বন্যপ্রাণির মৃত্যুর প্রমাণ পান এবং অভিযুক্ত চাষির বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরিটি করেছেন খুলনা বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ফরেস্ট গার্ড মো. রাসেল মিয়া।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মাখালডাঙ্গার নবীছদ্দীর ছেলে ফারুক তার ভুট্টাখেতে নিষিদ্ধ ফুরাডন বিষ প্রয়োগ করেন। এতে শেয়াল, গন্ধগোকুল, বেজি এবং অজ্ঞাত আরও অনেক বন্যপ্রাণি মারা যায়। ফুরাডন বিষ প্রয়োগে বিভিন্ন বন্যপ্রাণির মৃত্যু হতে পারে জেনে এলাকার যুবকরা ফারুককে নিষেধ করেন। তা সত্ত্বেও ফারুক বিষ প্রয়োগ বন্ধ করেননি এবং তার প্রয়োগকৃত বিষটোপে বিভিন্ন প্রাণির মৃত্যু ঘটে। খবর পেয়ে গতকালই ঘটনাস্থলে ছুটে যান চুয়াডাঙ্গা জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীন, পরিবেশবাদী সংগঠন পানকৌড়ির সভাপতি বখতিয়ার হামিদ ও থানা পুলিশের একটি দল। এদিকে, বন্যপ্রাণি হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পানকৌড়ির সভাপতি বখতিয়ার হামিদ বলেন, ‘এতগুলো প্রাণ একসঙ্গে হত্যা করার কোনো যুক্তি নেই। এটি পরিবেশ এবং প্রাণিবৈচিত্রের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হবে। আমরা দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।’ তিনি জানান, গতকালই বন বিভাগের কর্মকর্তা ও পুলিশ ভুট্টাখেত পরিদর্শন করেছেন। তারা ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন এবং প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন।
জেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা রাকিব উদ্দীন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, অভিযুক্ত কৃষকের ভুট্টাখেতে ক্ষয়-ক্ষতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বিষটোপে বেশ কয়েকটি বন্যপ্রাণির মৃত্যুর সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, ‘বন্যপ্রাণি সংরক্ষণ আইন ২০১২ অনুযায়ী, এভাবে বন্যপ্রাণি হত্যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমরা ঘটনাটি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করছি। অপরাধ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। আমরা ঘটনাটির তদন্তের জন্য কোর্টের অনুমতির অপেক্ষা করছি। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’