দামুড়হুদায় মাসিক আইনশৃঙ্খলা, চোরাচালান, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সভা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান ও অর্থনৈতিক লেনদেন নিয়ে অসন্তোষ
- আপলোড টাইম : ১১:০১:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
- / ১৪ বার পড়া হয়েছে
দামুড়হুদায় আইনশৃঙ্খলা, চোরাচালান, সন্ত্রাস, নাশকতা ও মানব পাচার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের সভাকক্ষে এ মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মমতাজ মহল।
তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর থেকে জানতে পেরেছি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত শিক্ষকেরা যে যার মতো প্রতিষ্ঠানে আসেন এবং দায়িত্ব পালন সঠিকভাবে না করে চলে যান। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ বিভাগ, কারিগরি বিভাগ এবং কলেজ সেকশন থাকার কারণে প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কোনো সমন্বয় নেই। কেউ কারো কথা শোনেন না। আমি পর্যবেক্ষণে ও গত বিজ্ঞান মেলায় কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যেটা পরিলক্ষিত হয়েছে, সেটা হলো বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার প্রতি অনীহা রয়েছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক লেনদেনের ভাউচারগুলো সবাই গরমিল করে আমার কাছে নিয়ে আসে ধান্দা করার জন্য। এ থেকে বোঝা যায় উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার মান তো নেই এবং অর্থনৈতিক লেনদেনের স্বচ্ছতার যথেষ্ট অভাব আছে
সভায় উপস্থিত দামুড়হুদা থানা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘এখনকার ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করছে না। সবাই দাবি-দাওয়া মিছিল মিটিং নিয়ে ব্যস্ত। লেখাপড়ার প্রতি কোনো খেয়াল নেই। চারিদিকে হাত বাড়ালেই মাদক পাওয়া যাচ্ছে। মাদক সংগ্রহ করতে অর্থ যোগানোর জন্য চারিদিকে ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও চুরি বেড়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে মাদক নির্মূল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন রেখে বলতে চাই, মাদক তো চাঁদের দেশে থেকে আসে না? আপনাদের লোক সবই জানে, কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যেভাবে চারিদিকে প্রতিদিন মাদকের চালান ধরা পড়ছে, মনে হচ্ছে যেন প্রশাসনের লোকজন এর সাথে জড়িত আছে। এই অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। পুলিশের সহযোগিতায় চারিদিকে কৃষকের উর্বর ভূমির যেভাবে মাটি কাটার উৎসব চলছে। এক সময় এই উপজেলায় খাদ্য সংকট দেখা দেবে। বিষয়টা আমাদের ভেবে দেখা উচিত। উন্নয়ন করতে হলে অবশ্যই বালু মাটির প্রয়োজন হবে। আমাদের উপযুক্ত স্থান থেকে বালু মাটি সংগ্রহ করতে হবে, সমতল ভূমি ও কৃষকের উর্বর জমি থেকে নয়।’
দর্শনা থানা বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট বলেন, ‘শিল্পনগরী দর্শনা একটি ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক প্রবণ এলাকা। গত ১৭টি বছর স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের লোকজন এই দর্শনাকে বাংলাদেশের বুকে স্বর্ণসহ বিভিন্ন অবৈধ ভারতীয় মালামাল চোরাচালান এবং মাদক খাওয়া ও কেনা বেচার হটস্পট হিসেবে উপস্থাপনা করেছে। সত্যিই অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। আমরা আমাদের দর্শনার হারানো গৌরবকে ফিরিয়ে আনতে চাই। সে জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, যারা এই অবৈধ চোরাচালান ও মাদকের ব্যবসা করবে, আপনারা তাদের ধরে আইনের আওতায় আনেন। এ বিষয়ে যে ব্যক্তি সুপারিশ করবে, তাকেও একই মামলায় দিয়ে দেবেন। আমি সার্বক্ষণিক আপনাদের পাশে থাকব।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন আক্তার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হেলেনা আক্তার নিপা, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ শহীদ তিতুমীর, দামুড়হুদা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি শামসুজ্জোহা পলাশ, দর্শনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল হক পিপুল, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম বজলুর রশীদ, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল হক, কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বিশ্বাস, কুড়ুলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, বিভিন্ন বিজিবি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার প্রমুখ।