ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আলমডাঙ্গার বকশিপুরে মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে

বিএনপি-জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:০১:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৩ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গার বকশিপুরে মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় আব্দুল হান্নান নামের ওয়ার্ড জামায়াতের সেক্রেটারিকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের বকশিপুর প্রাইমারি স্কুলপাড়া মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মসজিদের নতুন কমিটি গঠন করার বিষয়ে গত শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পর গ্রামের মুসল্লিদের বসার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান কমিটির সভাপতি ও ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি জিনারুল ইসলাম হঠাৎ বৈঠক স্থগিত করলে বাঁধে বিপত্তি। গ্রামের বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা ও উত্তেজনা। পরে খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
ডাউকি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল হান্নান অভিযোগ করে বলেন, ‘কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি চলছিল। এসময় বিএনপির এক লোক বলে মসজিদে কুরআনের রাজনীতি চলবে না। এতে আমিসহ আমার দলের কিছু লোক প্রতিবাদ করি। এসময় ডাউকি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুস সালাম তেড়ে এসে আমাকে একটা ঘুষি মারে। তার সাথে আমার পূর্ব থেকে পারিবারিক বিরোধ ছিল। এরপর বিএনপির ছেলে-পিলে আমাকে মসজিদের ভেতর আটকে রাখে। তাদের হাতে লাঠিসোটা ও রাম দা ছিল। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দিলেও আমি বর্তমানে বাড়ি থেকে সেভাবে বের হতে পারছি না। প্রতিনিয়ত তারা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। থানায় অভিযোগ যাতে না করি, এ জন্যেই হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে ডাউকি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুস সালাম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পর নতুন কমিটি গঠন বিষয়ে সভা আহ্বান করেন। জুম্মার নামাজের সময়ও সভার কথা মুসল্লিদের জানানো হয়। কিন্তু হঠাৎ আসরের নামাজের পর সেক্রেটারি বলেন যে কমিটি গঠনে সভার বিষয়ে সভাপতি কিছু জানেন না, তাই সভা স্থগিত করা হলো। এটা নিয়ে মাগরিবের নামাজের মুসল্লিরা তাদের কাছে জানতে চাইলে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। শুরুতে এটা গ্রামের মুসল্লিদের বিষয় থাকলেও পরে তা রাজনৈতিক বিষয় হয়ে ওঠে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্ড জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল হান্নানকে মারধর করা হয়নি। বরং গ্রামের মেম্বার হিসেবে আমি তাকে জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য ঠেলে মসজিদের ভেতর তালা দিয়ে রাখি। পরে পুলিশ-প্রশাসনের লোক এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এবং পুলিশের সাথে আমি হান্নানকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দিই।’ আব্দুল হান্নানকে হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা বানোয়াট, মিথ্যা অভিযোগ। বিষয়টি ওই দিনই শেষ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এখন পুরো স্বাভাবিক।’
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বকশিপুর গ্রামে মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে আমরা ফোর্স পাঠাই। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসময় আমরা মসজিদের ভেতর থেকে অবরুদ্ধ এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করি। বর্তমানে পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় কেউ বা কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

আলমডাঙ্গার বকশিপুরে মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে

বিএনপি-জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা

আপলোড টাইম : ০৯:০১:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

আলমডাঙ্গার বকশিপুরে মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় আব্দুল হান্নান নামের ওয়ার্ড জামায়াতের সেক্রেটারিকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের বকশিপুর প্রাইমারি স্কুলপাড়া মসজিদে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মসজিদের নতুন কমিটি গঠন করার বিষয়ে গত শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পর গ্রামের মুসল্লিদের বসার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান কমিটির সভাপতি ও ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি জিনারুল ইসলাম হঠাৎ বৈঠক স্থগিত করলে বাঁধে বিপত্তি। গ্রামের বিএনপি ও জামায়াত সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা ও উত্তেজনা। পরে খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
ডাউকি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল হান্নান অভিযোগ করে বলেন, ‘কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি চলছিল। এসময় বিএনপির এক লোক বলে মসজিদে কুরআনের রাজনীতি চলবে না। এতে আমিসহ আমার দলের কিছু লোক প্রতিবাদ করি। এসময় ডাউকি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুস সালাম তেড়ে এসে আমাকে একটা ঘুষি মারে। তার সাথে আমার পূর্ব থেকে পারিবারিক বিরোধ ছিল। এরপর বিএনপির ছেলে-পিলে আমাকে মসজিদের ভেতর আটকে রাখে। তাদের হাতে লাঠিসোটা ও রাম দা ছিল। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে বাড়ি পৌঁছে দিলেও আমি বর্তমানে বাড়ি থেকে সেভাবে বের হতে পারছি না। প্রতিনিয়ত তারা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। থানায় অভিযোগ যাতে না করি, এ জন্যেই হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।’
এ বিষয়ে ডাউকি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুস সালাম বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি শুক্রবার মাগরিবের নামাজের পর নতুন কমিটি গঠন বিষয়ে সভা আহ্বান করেন। জুম্মার নামাজের সময়ও সভার কথা মুসল্লিদের জানানো হয়। কিন্তু হঠাৎ আসরের নামাজের পর সেক্রেটারি বলেন যে কমিটি গঠনে সভার বিষয়ে সভাপতি কিছু জানেন না, তাই সভা স্থগিত করা হলো। এটা নিয়ে মাগরিবের নামাজের মুসল্লিরা তাদের কাছে জানতে চাইলে শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। শুরুতে এটা গ্রামের মুসল্লিদের বিষয় থাকলেও পরে তা রাজনৈতিক বিষয় হয়ে ওঠে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওয়ার্ড জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল হান্নানকে মারধর করা হয়নি। বরং গ্রামের মেম্বার হিসেবে আমি তাকে জনরোষ থেকে বাঁচানোর জন্য ঠেলে মসজিদের ভেতর তালা দিয়ে রাখি। পরে পুলিশ-প্রশাসনের লোক এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এবং পুলিশের সাথে আমি হান্নানকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে পৌঁছে দিই।’ আব্দুল হান্নানকে হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা বানোয়াট, মিথ্যা অভিযোগ। বিষয়টি ওই দিনই শেষ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এখন পুরো স্বাভাবিক।’
আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বকশিপুর গ্রামে মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে আমরা ফোর্স পাঠাই। তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এসময় আমরা মসজিদের ভেতর থেকে অবরুদ্ধ এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করি। বর্তমানে পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় কেউ বা কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ করেনি।’