চুয়াডাঙ্গায় বাড়ছে শীতের প্রকোপ, বিপাকে শ্রমজীবী নিম্ন আয়ের মানুষ
ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারপাশ, দেখা নেই সূর্যের
শনিবার থেকে কুয়াশার সঙ্গে কমবে তাপমাত্রা, শৈতপ্রবাহের সম্ভাবনা
- আপলোড টাইম : ১০:১৬:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৪৭ বার পড়া হয়েছে
গত কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা ক্রমশ কমছে। আর ঘন কুয়াশা জনজীবনে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। গতকার বৃহস্পতিবার সারাদিন তেমন সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশার পাশাপাশি তীব্র ঠাণ্ডা বাতাস শ্রমজীবী মানুষসহ নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রা প্রায় অচল করে দিয়েছে। গতকাল এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল ইসলাম জানান, ‘আগামী ২৬ জানুয়ারি (শনিবার) থেকে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে টানা ৩-৪ দিন জেলার ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এছাড়া রাত থেকে ঘন কুয়াশা শুরু হয়ে দিনের অধিকাংশ সময় ঢেকে থাকছে। এটি চলতি শীত মৌসুমে সবথেকে বেশি কুয়াশা।’
এদিকে, কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ আর শীতের প্রকোপে সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছেন দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। শহরের বড় বাজারে কাজের আশায় আসা দিনমজুর মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘সকালে গ্রাম থেকে সাইকেল চালিয়ে শহরে এসেছিলাম। কিন্তু ঠাণ্ডার কারণে কোনো কাজ পাচ্ছি না। সারাদিন অপেক্ষা করেও ১০ টাকার কাজ জোটেনি। এখন বাড়ি ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’
আরেক দিনমজুর আলিমদ্দীন বলেন, ‘শীতের কারণে খুব ভোরে কাজে বের হওয়া যায় না। কিন্তু সকালে না এলে কাজও পাওয়া যায় না। গত কয়েকদিন ধরে এই অবস্থার কারণে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পারার চিন্তায় রাতে ঘুমও আসে না। এমন পরিস্থিতি যেন আর বেশিদিন না থাকে। শীত গেলে আমরা রক্ষা পাই।’
শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, শীত নিবারণের জন্য অনেকে রাস্তার পাশে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন। তবে গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কাঁপতে থাকা মানুষের সংখ্যা বেশি। শীতবস্ত্রের দাম বাজারে বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষদের পক্ষে তা কেনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন গ্রামেও খেটে খাওয়া মানুষের কষ্ট চরমে পৌঁছেছে। কৃষিকাজসহ গ্রামীণ শ্রমে নিয়োজিত মানুষজন কাজে বের হতে পারছেন না। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই কৃষিপণ্য পরিবহনের কাজও বন্ধ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় স্থানীয় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় কিছু পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে।
চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি বলেন, শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে তাপমাত্রা আরও কমবে, যা দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষের জন্য পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলবে। এই অবস্থায় আমরা সাধ্যমতো শীতবস্ত্র সরবরাহ এবং অন্যান্য সহায়তা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শুধু শহরাঞ্চলে নয়, প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলেও আমরা আমাদের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে সহায়তা পৌঁছাতে চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, ‘আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস আমরা সবসময় স্মরণ রাখি। সামনের সপ্তাহগুলোতে চুয়াডাঙ্গায় একাধিক শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে চুয়াডাঙ্গাসহ আশপাশের এলাকার মানুষদের দুর্ভোগ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’