ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

নিম্নমানের উপকরণ-সামগ্রী ব্যবহার, গ্রামবাসীর প্রতিবাদ

প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১০৫ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রীকোল বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী ভবন নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদারের যোগসাজশে নিম্নমানের নির্মাণ-সামগ্রী ব্যবহার করে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগে গ্রামবাসী প্রতিবাদ জানিয়েছে।

জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রীকোল বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করার পর নিয়মমাফিক কাজ পায় কুষ্টিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আনোয়ার আলী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে যায়। পরবর্তীতে গত কয়েকদিন আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুয়াডাঙ্গার শাকিল নামে একজন কাজ শুরু করেন। ১ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭০ টাকা ব্যয়ে ১ থেকে ৩ তলা পর্যন্ত বিল্ডিং নির্মাণ ও সংস্কারের কাজের শুরুতেই নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া ও রডের ব্যবহার দেখে গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিয়োজিত শাকিল আহমেদ বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে প্রচারণা চালায় বিএনপির লোকজন চাঁদা দাবি করায় কাজ করতে পারছেন না।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে নিম্নমানের ইট ও খোয়া ব্যবহার করে কাজ করার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধান শিক্ষককে কাজ বন্ধ করার জন্য শ্রীকোল ও বোয়ালিয়া গ্রামের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত হন। এসময় প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ইট ও খোয়া ফেরত দেওয়া হবে এবং নতুন করে ইট এনে কাজ করা হবে বলে গ্রামবাসীকে জানান।

গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, মূলত প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ঠিকাদারের সাথে আঁতাত করে ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন। তার প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদার প্রচারণা চালায় স্থানীয় বিএনপির নেতারা তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেছে, সে কারণে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। গতকাল বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক ওসমান গনির কাছে ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এবার থেকে আর কোনো নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হবে না। যে ইট ও খোয়া আছে, তা ফেরত দেওয়া হবে। আর ঠিকাদার আমার অজানতেই নিম্নমানের ইট ও খোয়া এনে কাজ করছে।’
ভবন নির্মাণে কেউ চাঁদা দাবি করেছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শুনেছি অনেকেই ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করেছে। শ্রীকোল গ্রামের ইলিয়াস নামে একজন নাকি ১০ হাজার টাকাও নিয়েছে। সত্য-মিথ্যা জানি না।’ এ বিষয়ে ঠিকাদারের পক্ষে দায়িত্ব পালন করা শাকিলের কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়, তাহলে নিউজ করে দেন। আর চাঁদা দাবির বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারব না।’
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, মূলত প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের জন্য যে ইট, খোয়া ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তা প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি নিজে সরবরাহ করবেন বলে যোগসাজশ করে কাজ করছেন। সরোজগঞ্জের একটি ভাটা থেকে নিম্নমানের ইট নিয়ে এসে কাজ করছেন। প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদার তাদের দুর্নীতি ঢাকতেই মূলত চাঁদাবাজির গল্প প্রচার করছে। যাতে সাধারণ মানুষ বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়। তদন্তপূর্বক নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ভবন নির্মাণ বন্ধসহ দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

শ্রীকোল-বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

নিম্নমানের উপকরণ-সামগ্রী ব্যবহার, গ্রামবাসীর প্রতিবাদ

আপলোড টাইম : ০৯:৫৬:২৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রীকোল বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বমুখী ভবন নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদারের যোগসাজশে নিম্নমানের নির্মাণ-সামগ্রী ব্যবহার করে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগে গ্রামবাসী প্রতিবাদ জানিয়েছে।

জানা গেছে, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শ্রীকোল বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করার পর নিয়মমাফিক কাজ পায় কুষ্টিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আনোয়ার আলী। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে যায়। পরবর্তীতে গত কয়েকদিন আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুয়াডাঙ্গার শাকিল নামে একজন কাজ শুরু করেন। ১ কোটি ৮৭ লাখ ৭৭০ টাকা ব্যয়ে ১ থেকে ৩ তলা পর্যন্ত বিল্ডিং নির্মাণ ও সংস্কারের কাজের শুরুতেই নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া ও রডের ব্যবহার দেখে গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিয়োজিত শাকিল আহমেদ বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে প্রচারণা চালায় বিএনপির লোকজন চাঁদা দাবি করায় কাজ করতে পারছেন না।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে নিম্নমানের ইট ও খোয়া ব্যবহার করে কাজ করার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধান শিক্ষককে কাজ বন্ধ করার জন্য শ্রীকোল ও বোয়ালিয়া গ্রামের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত হন। এসময় প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ইট ও খোয়া ফেরত দেওয়া হবে এবং নতুন করে ইট এনে কাজ করা হবে বলে গ্রামবাসীকে জানান।

গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, মূলত প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি ঠিকাদারের সাথে আঁতাত করে ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করছেন। তার প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদার প্রচারণা চালায় স্থানীয় বিএনপির নেতারা তাদের কাছে চাঁদা দাবি করেছে, সে কারণে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। গতকাল বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষক ওসমান গনির কাছে ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এবার থেকে আর কোনো নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হবে না। যে ইট ও খোয়া আছে, তা ফেরত দেওয়া হবে। আর ঠিকাদার আমার অজানতেই নিম্নমানের ইট ও খোয়া এনে কাজ করছে।’
ভবন নির্মাণে কেউ চাঁদা দাবি করেছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘শুনেছি অনেকেই ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করেছে। শ্রীকোল গ্রামের ইলিয়াস নামে একজন নাকি ১০ হাজার টাকাও নিয়েছে। সত্য-মিথ্যা জানি না।’ এ বিষয়ে ঠিকাদারের পক্ষে দায়িত্ব পালন করা শাকিলের কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়, তাহলে নিউজ করে দেন। আর চাঁদা দাবির বিষয়ে এখন কিছু বলতে পারব না।’
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, মূলত প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণের জন্য যে ইট, খোয়া ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করা হবে, তা প্রধান শিক্ষক ওসমান গনি নিজে সরবরাহ করবেন বলে যোগসাজশ করে কাজ করছেন। সরোজগঞ্জের একটি ভাটা থেকে নিম্নমানের ইট নিয়ে এসে কাজ করছেন। প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদার তাদের দুর্নীতি ঢাকতেই মূলত চাঁদাবাজির গল্প প্রচার করছে। যাতে সাধারণ মানুষ বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়। তদন্তপূর্বক নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ভবন নির্মাণ বন্ধসহ দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।