ঝিনাইদহে ফ্রুটিং ব্যাগে কলা চাষে লাভবান কৃষকেরা
- আপলোড টাইম : ০৯:৫৪:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৮০ বার পড়া হয়েছে
ঝিনাইদহে ফ্রুটিং ব্যাগে কলা চাষ কৃষকদের মাঝে অতিজনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা। এই পদ্ধতিতে কলা চাষের ফলে কীট পতঙ্গের হাত থেকে কলার কাঁদি রক্ষা পাচ্ছে। দিতে হচ্ছে না কোনো রাসায়নিক ওষুধ। এতে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে এক নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহে প্রচুর পরিমাণে কলা উৎপাদিত হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জেলায় ৫ হাজার হেক্টরের বেশি কলার আবাদ হয়েছে। অন্যান্য আবাদের চেয়ে কলা চাষে কৃষকের কম পরিশ্রম করতে হয়। ঝড় ও কীটপতঙ্গের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে কৃষকদের কাছে কলা একটি লাভজনক আবাদ। শীতকালে কলার কাঁদিতে মশা ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ আক্রমণ করে। ফলে কলার গায়ে স্পট তৈরি হয়। পাকলেও কলার মধ্যে শক্ত হয়ে থাকে। কীটপতঙ্গের হাত থেকে কলার কাঁদি রক্ষা করতে তাই নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করতে হয় কৃষকদের, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি। নিরাপদ খাদ্য হিসেবে কলার কাঁদি কীটপতঙ্গের হাত থেকে রক্ষা করতে আরআরএফ ও কেমোনিক্স ইন্টারন্যাশনাল নামে দুটি সংগঠন ঝিনাইদহের কলা চাষিদের প্রশিক্ষকসহ দশ হাজার ফ্রুটিং ব্যাগ প্রদান করেছে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সংগঠন দুটি ঝিনাইদহ সদর, কোটচাঁদপুর, মহেশপুর, যশোর সদর ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার এক হাজার কৃষককে নিরাপদ কলা চাষের প্রশিক্ষণ শেষে ফ্রুটিং ব্যাগ দিয়েছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক নন্দ দুলাল কবিরাজ জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছেন। ফ্রটিং ব্যাগ ব্যবহারের ফলে তার কলা খেত মশা ও কীটনাশকের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে। একই গ্রামের পরিমল কবিরাজও কলার কাঁদিতে ফ্রুটিং ব্যাগ ব্যবহার করে সুফল পেয়েছেন। আরেক কলা চাষি শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রশিক্ষণের পাশাপাশি নিরাপদ কলা উৎপাদনে ফ্রুটিং ব্যাগ ব্যবহারের ফলে আগের চেয়ে ভালো ফলন পাচ্ছেন।
কৃষিবিদ ড. অসিত বরণ মন্ডল বলেন, নিরাপদ কলা উৎপাদন ও বিপণন সম্পর্কিত প্রকল্পের মাধ্যমে তারা কলা চাষি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কলা গাছে ফ্রুটিং ব্যাগ ব্যবহারের ফলে যেমন পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে, তেমনি কলা চাষিরাও আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। আর ভোক্তা পর্যায়ে নিশ্চিত হবে নিরাপদ খাদ্য।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. নূর এ নবী বলেন, ব্রিটল ও মশার আক্রমণ সঙ্গে বাতাসে বিভিন্ন জীবাণু থাকে সেটা কলার সাথে মিশে কলা নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে কৃষক কীটনাশক স্প্রে করে। সেক্ষেত্রে ফ্রুটিং ব্যাগ ব্যবহার করলে পোকার আক্রমণ থেকে কলার কাঁদি রক্ষা করা সম্ভব। এতে কৃষকের কীটনাশক খরচ বেঁচে যায়। ফলে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য নিরাপদ কলা উৎপাদিত হয়। বাজারে নিরাপদ কলার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। চাষিরা এই পদ্ধতিতে চাষ করলে বেশি লাভবান হবে বলে তিনি মনে করেন।