ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সরোজগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক সভায় ডিসি জহিরুল ইসলাম

শিশুর মেধাশক্তি খাটাতে বাবা-মাকে সহযোগিতা করতে হবে

প্রতিবেদক, সরোজগঞ্জ:
  • আপলোড টাইম : ০৬:৩৫:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ৪৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা সদরের সরোজগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও উত্তম চর্চা সম্পর্কে শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরোজগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সভার আয়োজন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম. সাইফুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সরোজগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখে এবং সকল ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক অভিভাবকদের উপস্থিত ও যে সুন্দর পরিবেশ, সেই পরিবেশ দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। একটি শিশুর শিক্ষকের পাশাপাশি, প্রথম শিক্ষক তার মা, এছাড়া মা তার বাঁচ্চাকে যেভাবেই শিক্ষা দেবে, সেই বাঁচ্চা সেই ভাবেই শিক্ষা পাবে। আপনার বাঁচ্চাকে সবসময় যত্নে রাখবেন। খেয়াল রাখবেন বঁাঁচ্চা কোথায় কী করছে।
তিনি আরও বলেন, এখনকার মায়েরা তাদের বাঁচ্চাদের নিয়ে অনেক পেরেশানি থাকে। বাঁচ্চা ভালো রেজাল্ট করল না, লেখাপড়া ভালো করে না, দুষ্টুমি করে, সবচাইতে মায়েরাই বেশি পেরেশানি হয়ে পড়ে। এত পেরেশানি হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাঁচ্চাদের সবার মেধা শক্তি এক না। সকলের বুদ্ধি এক না। আপনাদের বাঁচ্চাদের ওপরে বেশি চাপ দেবেন না। যার যেমন মেধা শক্তি, সে বাঁচ্চা সেভাবেই তৈরি করতে হবে। অনেক বাঁচ্চা আছে অল্প পড়লেই সবকিছু গুছিয়ে বলতে পারে, তাই বলে সেই সকল বাঁচ্চাদের সকাল-সন্ধ্যা পড়ার টেবিলে বসিয়ে রাখবেন, এমন কোনো মানে নেই। যাতে কোনো বাঁচ্চা বিরক্ত বোধ না হয়। আস্তে আস্তে বাঁচ্চাদের মেধা শক্তি বিকাশ ঘটে। বাঁচ্চাদের স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে দেবেন। একটা বাবা-মায়ের দায়িত্ব তার বাঁচ্চাটি সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়ছে কি না, সন্ধ্যায় পড়ছে কি না, বাসায় নিয়মিত ফিরছে কি না, নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে কি না, এগুলো আপনারা খেয়াল রাখবেন। এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আধুনিকের সময় বাবা-মা সবাই শিক্ষিত, যার কারণে বাঁচ্চাদের লেখাপড়ার জন্য একটু কেয়ার করলেই চলবে।
তিনি নিজের সম্পর্কে বলেন, ‘আমার বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। তখনকার সময়ে মানুষ খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। অসংখ্য স্কুল-কলেজ ছিল না। লেখাপড়া খরচও জোগাতে পারতো না অনেকেই, তবে আমি চেষ্টা করেছি। সেই মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই আজ আমি এ পর্যায়ে এসেছি। এ জন্যই বলি অভিভাবকদের শিক্ষকদের আপনাদের বাঁচ্চাদের লেখাপড়া পড়ার প্রতি বেশি চাপ দিবেন না। তাদের মেধা শক্তি খাটানোর জন্য বাবা-মাকে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এখনকার সমাজে ছেলে-মেয়েদের বাল্যবিবাহ থেকে বিরত থাকতে হবে। এই বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক মমতাজ। উপস্থিত ছিলেন সরোজগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান, নজরুল ইসলাম, আকতারুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, সহকারী শিক্ষিকা নাঈমা বেগম, রোকসানা তাজরীন, সুচিত্রা রানী অধিকারী, নিলুফার ইয়াসমিন, সুফিয়া খাতুন, নাসরিন আক্তার, নাহিদা আক্তার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

সরোজগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক সভায় ডিসি জহিরুল ইসলাম

শিশুর মেধাশক্তি খাটাতে বাবা-মাকে সহযোগিতা করতে হবে

আপলোড টাইম : ০৬:৩৫:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

চুয়াডাঙ্গা সদরের সরোজগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও উত্তম চর্চা সম্পর্কে শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সরোজগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সভার আয়োজন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম. সাইফুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সরোজগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মনোমুগ্ধকর পরিবেশ দেখে এবং সকল ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক অভিভাবকদের উপস্থিত ও যে সুন্দর পরিবেশ, সেই পরিবেশ দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে। একটি শিশুর শিক্ষকের পাশাপাশি, প্রথম শিক্ষক তার মা, এছাড়া মা তার বাঁচ্চাকে যেভাবেই শিক্ষা দেবে, সেই বাঁচ্চা সেই ভাবেই শিক্ষা পাবে। আপনার বাঁচ্চাকে সবসময় যত্নে রাখবেন। খেয়াল রাখবেন বঁাঁচ্চা কোথায় কী করছে।
তিনি আরও বলেন, এখনকার মায়েরা তাদের বাঁচ্চাদের নিয়ে অনেক পেরেশানি থাকে। বাঁচ্চা ভালো রেজাল্ট করল না, লেখাপড়া ভালো করে না, দুষ্টুমি করে, সবচাইতে মায়েরাই বেশি পেরেশানি হয়ে পড়ে। এত পেরেশানি হওয়ার কোনো কারণ নেই। বাঁচ্চাদের সবার মেধা শক্তি এক না। সকলের বুদ্ধি এক না। আপনাদের বাঁচ্চাদের ওপরে বেশি চাপ দেবেন না। যার যেমন মেধা শক্তি, সে বাঁচ্চা সেভাবেই তৈরি করতে হবে। অনেক বাঁচ্চা আছে অল্প পড়লেই সবকিছু গুছিয়ে বলতে পারে, তাই বলে সেই সকল বাঁচ্চাদের সকাল-সন্ধ্যা পড়ার টেবিলে বসিয়ে রাখবেন, এমন কোনো মানে নেই। যাতে কোনো বাঁচ্চা বিরক্ত বোধ না হয়। আস্তে আস্তে বাঁচ্চাদের মেধা শক্তি বিকাশ ঘটে। বাঁচ্চাদের স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে দেবেন। একটা বাবা-মায়ের দায়িত্ব তার বাঁচ্চাটি সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়ছে কি না, সন্ধ্যায় পড়ছে কি না, বাসায় নিয়মিত ফিরছে কি না, নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে কি না, এগুলো আপনারা খেয়াল রাখবেন। এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আধুনিকের সময় বাবা-মা সবাই শিক্ষিত, যার কারণে বাঁচ্চাদের লেখাপড়ার জন্য একটু কেয়ার করলেই চলবে।
তিনি নিজের সম্পর্কে বলেন, ‘আমার বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। তখনকার সময়ে মানুষ খুব কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। অসংখ্য স্কুল-কলেজ ছিল না। লেখাপড়া খরচও জোগাতে পারতো না অনেকেই, তবে আমি চেষ্টা করেছি। সেই মধ্যবিত্ত পরিবার থেকেই আজ আমি এ পর্যায়ে এসেছি। এ জন্যই বলি অভিভাবকদের শিক্ষকদের আপনাদের বাঁচ্চাদের লেখাপড়া পড়ার প্রতি বেশি চাপ দিবেন না। তাদের মেধা শক্তি খাটানোর জন্য বাবা-মাকে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এখনকার সমাজে ছেলে-মেয়েদের বাল্যবিবাহ থেকে বিরত থাকতে হবে। এই বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক মমতাজ। উপস্থিত ছিলেন সরোজগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মশিউর রহমান, নজরুল ইসলাম, আকতারুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, সহকারী শিক্ষিকা নাঈমা বেগম, রোকসানা তাজরীন, সুচিত্রা রানী অধিকারী, নিলুফার ইয়াসমিন, সুফিয়া খাতুন, নাসরিন আক্তার, নাহিদা আক্তার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন।