৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে সুদসহ পরিশোধ করেছেন ৫ লাখ টাকা
তবুও মেলেনি মুক্তি, সর্বস্ব হারিয়ে পথে পথে কৃষক
- আপলোড টাইম : ০৬:০৮:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৬০ বার পড়া হয়েছে
৫০ হাজার টাকা নিয়ে সুদসহ মাসে মাসে পরিশোধ করেছেন ৬ লাখ টাকা, তারপরও মুক্তি মেলেনি শিমুল মন্ডল নামের এক কৃষকের। সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে আদালতে মামলা করে বসেছেন চিহ্নিত সুদখোর। এদিকে সুদখোরের অত্যাচারে জমিজমা ভিটে বাড়ি হারিয়ে শিমুল এখন পথে পথে ঘুরছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক শিমুল ওই গ্রামের মোশাররফ মন্ডলের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চাষাবাদের জন্য বড়বাড়ি গ্রামের আমজেদ আলীর ছেলে ইসরাইলের কাছ থেকে ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল ৫০ হাজার টাকা সুদ হিসেবে নেন শিমুল মন্ডল। কিন্তু সেই টাকা শোধ করতে গিয়ে হারিয়েছেন সর্বস্ব। মাত্র ৫০ হাজার টাকা নিয়ে প্রতিমাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করে প্রদান করেছেন। আর্থিক টানাপোড়েনের কারণে মাঝে মধ্যে কিস্তির টাকা দিতে পারেননি। চার বছর ধরে শিমুল মন্ডল ৬ লাখ টাকা দিয়েছেন, তারপরও সুদের টাকা পরিশোধ হয়নি।
এদিকে, শিমুল তার ভিটেমাটি ও মাঠের জমি বিক্রি করে এখন পথের ফকির। গ্রামের কথিত বিচারকদের অবিচারের শিকার হয়ে সুদখোর ইসরাইলকে স্ট্যাম্প লিখে দেন। সেই স্ট্যাম্পের বুনিয়োদে ইসরাইলের মা ওজলা খাতুন বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন। মামলায় সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে সুদে কারবারি ইসরাইল, তার বাবা ও স্ত্রীকে।
শিমুল মন্ডলের পিতা মোশারেফ মন্ডল বলেন, ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এ পর্যন্ত ৬ লাখ টাকার ওপরে টাকা দেওয়া হয়েছে। তারপরও মুক্তি মেলেনি। এদিকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রতিবেশী ইলাজ মিয়াকে দিয়ে সুদে কারবারি ইসরাইল শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে যাচ্ছে। এমনকি২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর শিমুলের ভাই রিপুল মন্ডলের ওপর হামলা চালায় সুদখোর ইসরাইল। এরপর মিথ্যা গল্প সাজিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় অভিযোগ করা হলে পুলিশ থানায় মীমাংসার কথা বলে তাদের আটক করে।
এ বিষয়ে মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন জানান, সুদের টাকা নিয়ে এভাবে অত্যাচার ও অতিরিক্ত টাকা আদায় জঘন্য অন্যায়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি তার কাছে অভিযোগ দিলে তিনি গ্রাম্য আদালতে সুরাহা করতে পারতেন। সুদে কারবারি ইসরাইল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিমুল মন্ডলের সাথে কোনোদিন কোনো লেনদেন হয়নি, তবে আমার মায়ের কাছ থেকে সে টাকা নিয়েছে। এ কারণে তার মা ওজলা খাতুন বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেছেন।