দর্শনায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা, অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন
সংঘর্ষে ৩ নেতা-কর্মী আহত, শহরজুড়ে চরম আতঙ্ক!
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন
- আপলোড টাইম : ০৬:০৭:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
- / ১২ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গার শিল্প ও সীমান্ত শহর দর্শনায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে শহরজুড়ে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্রের মহড়া ও সংঘর্ষে শহরে আতঙ্ক দেখা দেয়। এ ঘটনায় কৃষক দল নেতা আবুল হাতেমসহ (৫০) তিনজন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর ১২টার দিকে কেরু চিনিকলের ডিস্টিলারি গেটের সামনে বসে থাকা কৃষক দল নেতা আবুল হাতেমের ওপর হেলমেট পরা কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি দা দিয়ে হামলা চালায়। পরে বেলা দেড়টার দিকে দর্শনার সাবেক সেনা সদস্য আ. সালাম (৪৫) ও যুবদল সমর্থক সাব্বির হোসেনের (৩০) ওপর হামলার খবর পাওয়া যায়। এ ঘটনায় গতকাল মো. লিটন হোসেন ও মনির হোসেন বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছেন।
এর আগে খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা-জীবননগর সার্কেল) জাকিয়া সুলতানার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ টহল শুরু হয়। অভিযানে যুবদল নেতা মাহাবুল হোসেন (৪২) ও আরুক হোসেনকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কেরুজ শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের নির্বাচনী উত্তেজনা এবং বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধ থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত। গত শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে শহরে বারবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও অস্ত্রের মহড়া চলছে। এ ঘটনায় গত তিন দিনে কমপক্ষে ৭-৮ জন আহত হয়েছেন। এদিকে, সংঘর্ষ ও অস্ত্রের মহড়ার সময় শহরের বেশকিছু দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়দের মতে, দীর্ঘদিন পর এমন সংঘর্ষের দৃশ্য দেখে তারা আতঙ্কিত। অনেকে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য দোকান বন্ধ করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।
দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বুলেট বলেন, ‘দলের মধ্যে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটছে, যা দুঃখজনক। যারা এ ঘটনার জন্য দায়ী, দলীয় কেউ হলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর কিছু সংখ্যক অনাগত ব্যক্তি দলের মধ্যে ঢুকে এ ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। সে যেই হোক পুলিশ প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এটা আমাদের প্রত্যাশা।’
এ বিষয়ে কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান জানান, সহিংসতার বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদ তিতুমীর বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। আমরা দুই দিনে দুই পক্ষের চারটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
এদিকে, ঘটনার পর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা এখনও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর থেকে শহরে আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।