ঝিনাইদহে বাওড়ের ইজারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
কর্ম হারিয়ে পথে বসেছে ৩০ হাজার জেলে পরিবার- আপলোড টাইম : ০৮:৪৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫
- / ৪৭ বার পড়া হয়েছে
জেলেদের ভাষায় জলমহাল নীতিমালা লঙ্ঘন করে ঝিনাইদহে বাওড় ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন মৎস্যজীবীরা। ইজারা বাতিল ও প্রকৃত জেলেদের মাঝে বাওড় ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে গতকাল রোববার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসকের অফিস চত্বরে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধন শেষে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন বাওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন বাংলাদেশের আহ্বায়ক নির্মল হালদার, সদস্যসচিব সুজন বিপ্লব, নিত্য হালদার, সাজ্জাদ হোসেন, আবু তোয়াব অপু ও তোফাজ্জেল লস্কার।
প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাসুদেব বিশ্বাস। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মৎস্যজীবীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাওড় ইজারা দেওয়ার কারণে ঝিনাইদহের ৩০ হাজার মৎস্যজীবী পরিবার কর্ম হারিয়ে পথে বসেছে। মৎস্যজীবীরা বাওড় জলমহালসমূহের ইজারা পদ্ধতি পুরোপুরি বাতিল করে বাওড় জলমহালে জেলেদের ন্যায়সংগত মালিকানার ফিরিয়ে দিতে জলমহাল ব্যবস্থাপনা আইন সংশোধন করার দাবি জানান।
বাওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন বাংলাদেশের আহ্বায়ক নির্মল হালদার বলেন, বাওড় জলমহালে মাছ চাষে রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে জেলেদের সাথে সরকারের ন্যায্য উৎপাদনের অংশীদারিত্ব চুক্তি থাকতে হবে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় প্রকৃত বাওড় মৎস্যজীবীদের শুমারি করে তালিকাবদ্ধ করে মৎস্যজীবী কার্ড প্রদান করতে হবে।
বাওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন বাংলাদেশের সদস্যসচিব সুজন বিপ্লব বলেন, ঝিনাইদহে মহেশপুর ও কোটচাঁদপুর উপজেলার ফতেপুর, কাঠগড়া, বলুহর, জয়দিয়া বাওড়, কালীগঞ্জ উপজেলার মর্জাত বাওড় ও যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার বেড় গোবিন্দপুর বাওড়ের ইজারা চুক্তি লঙ্ঘন করে সাবলিজ দেওয়া হয়েছে। যা বর্তমানে প্রচলিত জলমহাল নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এসব বাওড় ছাড়াও ঝিনাইদহ জেলার অন্যান্য সকল বাওড় ও জলাভূমি ইজারা দেওয়ায় ভূমিহীন জেলে সম্প্রদায় জীবিকা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মৎস্যজীবী নিত্য হালদার অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী ও বাণিজ্যিক মৎসচাষীরা বাওড়ের ইজারা হাতিয়ে নিয়ে বাওড়ে দেশীয় প্রজাতির মা মাছ ও ছোট কার্প জাতীয় মাছের পোনা নিধন করছে। ফলে দেশী পুটি, শিং, কৈ, পাবদা, ফলি, মেনি, খলিশা, খয়রা, টেংরা, বাটা, গুতুম, কাকিলা, দেশী সরপুটি, বাইন, শোল, টাকি ও গজার মাছ বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বাওড়ে বাণিজ্যিক মৎস্যচাষীরা রাসায়নিক ও দ্রুত বর্ধনশীল ওষুধ প্রয়োগের ফলে বাওড়ের পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। সাধারণ জেলেরা বলেন, শত বছর ধরে জেলে সম্প্রদায় প্রাকৃতিক উপায়ে বাওড়ে মাছ উৎপাদন করে আসছেন। বাওড় ইজারা দেয়ায় প্রকৃত মৎস্যজীবী ও জেলে সম্প্রদায় কর্ম হারিয়ে পথে বসেছেন।
জেলেদের অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বকুল চন্দ্র কবিরাজ জানান, সরকারি নীতিমালা মেনেই বারগুলো ইজারা প্রদান করা হয়েছে। তাই জেলে সম্প্রদায়ের এই অভিযোগ সঠিক নয়।