ইপেপার । আজ বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আলমডাঙ্গার বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে অর্থ বাণিজ্য

ফি’র নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

আলমডাঙ্গা অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১১:৩২:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গার বিভিন্ন এমপিওভুক্ত এবং নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির নামে অতিরিক্ত ফি বাণিজ্য চলছে বলে অভিযোগ করছেন অভিভাবকরা। সন্তানদের ভর্তির অতিরিক্ত ফি দিতে গিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বছরের শুরু জানুয়ারিতে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে। এমনকি কিছু স্কুলে এর থেকেও বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তবে কিছু স্কুলে দেখা গেছে ভিন্নতা। উপজেলার হারদী মীর শামসুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫০০ টাকা ও পাঁচলিয়া জামাল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮০০ টাকা শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি’ রাখা হয়েছে।

এসব স্কুলের ভর্তি ফি সম্পর্কে আলমডাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক জানান, সরকার সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়ার বিধান রেখেছে। তবে কোনো স্কুল যদি কম টাকা নিতে চায়, তবে তারা নিতে পারেন। যেমন আলমডাঙ্গার বিভিন্ন ইউনিয়নের স্কুলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ভর্তি ফি নিচ্ছে। আবার কোনো কোনো স্কুল ১৫০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকা ভর্তি ফি নিচ্ছে।
এদিকে, সরকার থেকে শিক্ষকদের বেতন বাবদ এমপিওভুক্ত টাকা নিলেও কেন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। তারা মনে করছেন, ছাত্র আন্দোলনের বিজয়ের পর শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার হবে। কিন্তু কোনো পরিবর্তন না দেখে হতাশ প্রকাশ করেন অনেক অভিভাবক।

তারা জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ডেভেলপমেন্ট চার্জ, ল্যাবরেটরি ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, সেশন চার্জ, টিউশন ফি ইত্যাদির নামে বছরের শুরুতেই মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হচ্ছে। জামাল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়ব জানান, বেতনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচের জন্য ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণির টিউশন ফি ১৫০ টাকা, অষ্টম শ্রেণিতে ১৭০ টাকা, নবম-দশম শ্রেণিতে ২০০ টাকা এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ২২০ টাকা অতিরিক্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। মফস্বল এলাকায় এই ফি তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম।

হারদী মীর শামছদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার রশীদ সাগর। তিনি বলেন, ‘সরকার পৌর শহরের স্কুলে ১ হাজার এবং মফস্বলের স্কুলে ৬০০ টাকা নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্ত আমরা অভিভাবকদের অবস্থা বুঝে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে ভর্তি করছি। যে সকল ক্ষেত্রের অর্থ সরকার বহন করছে, তার টাকা শিক্ষার্থীদের থেকে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত আদায়। আমরা এমন করছি না।’
এদিকে, নন-এমপিওভুক্ত স্কুলগুলোতেও ১ হাজার থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে। প্লে গ্রুপ থেকে প্রথম শ্রেণিতে ১ হাজার টাকা, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ২ হাজার টাকা এবং নবম-দশম শ্রেণিতে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেতন দিতে হচ্ছে।
অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। স্কুল ভবন, গেট, দেয়াল নির্মাণের পাশাপাশি আসবাবপত্রও সরবরাহ করছে। তবুও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফি’র নামে অতিরিক্ত ডেভেলপমেন্ট চার্জ আদায় করা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ হওয়া উচিৎ। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) শেখ মেহেদী ইসলাম জানান, সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে দায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

আলমডাঙ্গার বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলছে অর্থ বাণিজ্য

ফি’র নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

আপলোড টাইম : ১১:৩২:০৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫

আলমডাঙ্গার বিভিন্ন এমপিওভুক্ত এবং নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির নামে অতিরিক্ত ফি বাণিজ্য চলছে বলে অভিযোগ করছেন অভিভাবকরা। সন্তানদের ভর্তির অতিরিক্ত ফি দিতে গিয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বছরের শুরু জানুয়ারিতে উপজেলার বিভিন্ন স্কুলে ১৫০০ থেকে ১৭০০ টাকা পর্যন্ত ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে। এমনকি কিছু স্কুলে এর থেকেও বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। তবে কিছু স্কুলে দেখা গেছে ভিন্নতা। উপজেলার হারদী মীর শামসুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫০০ টাকা ও পাঁচলিয়া জামাল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৮০০ টাকা শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি’ রাখা হয়েছে।

এসব স্কুলের ভর্তি ফি সম্পর্কে আলমডাঙ্গা উপজেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক জানান, সরকার সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়ার বিধান রেখেছে। তবে কোনো স্কুল যদি কম টাকা নিতে চায়, তবে তারা নিতে পারেন। যেমন আলমডাঙ্গার বিভিন্ন ইউনিয়নের স্কুলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ভর্তি ফি নিচ্ছে। আবার কোনো কোনো স্কুল ১৫০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকা ভর্তি ফি নিচ্ছে।
এদিকে, সরকার থেকে শিক্ষকদের বেতন বাবদ এমপিওভুক্ত টাকা নিলেও কেন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকরা। তারা মনে করছেন, ছাত্র আন্দোলনের বিজয়ের পর শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার হবে। কিন্তু কোনো পরিবর্তন না দেখে হতাশ প্রকাশ করেন অনেক অভিভাবক।

তারা জানান, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ডেভেলপমেন্ট চার্জ, ল্যাবরেটরি ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি, সেশন চার্জ, টিউশন ফি ইত্যাদির নামে বছরের শুরুতেই মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হচ্ছে। জামাল উদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তৈয়ব জানান, বেতনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচের জন্য ষষ্ঠ থেকে সপ্তম শ্রেণির টিউশন ফি ১৫০ টাকা, অষ্টম শ্রেণিতে ১৭০ টাকা, নবম-দশম শ্রেণিতে ২০০ টাকা এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ২২০ টাকা অতিরিক্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। মফস্বল এলাকায় এই ফি তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম।

হারদী মীর শামছদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার রশীদ সাগর। তিনি বলেন, ‘সরকার পৌর শহরের স্কুলে ১ হাজার এবং মফস্বলের স্কুলে ৬০০ টাকা নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্ত আমরা অভিভাবকদের অবস্থা বুঝে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে ভর্তি করছি। যে সকল ক্ষেত্রের অর্থ সরকার বহন করছে, তার টাকা শিক্ষার্থীদের থেকে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত আদায়। আমরা এমন করছি না।’
এদিকে, নন-এমপিওভুক্ত স্কুলগুলোতেও ১ হাজার থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে। প্লে গ্রুপ থেকে প্রথম শ্রেণিতে ১ হাজার টাকা, পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ২ হাজার টাকা এবং নবম-দশম শ্রেণিতে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেতন দিতে হচ্ছে।
অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। স্কুল ভবন, গেট, দেয়াল নির্মাণের পাশাপাশি আসবাবপত্রও সরবরাহ করছে। তবুও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফি’র নামে অতিরিক্ত ডেভেলপমেন্ট চার্জ আদায় করা হচ্ছে। এগুলো বন্ধ হওয়া উচিৎ। এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) শেখ মেহেদী ইসলাম জানান, সরকার নির্ধারিত ফি ছাড়া অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে দায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।