ইপেপার । আজ শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে লিফলেট বিতরণ

সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১০:১৬:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১২ বার পড়া হয়েছে

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় লিফলেট বিতরণ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। শনিবার বিকেল ৪টায় শহরের শহিদ হাসান চত্বর এলাকায় ‘জুলাই এর প্রেরণা, দিতে হবে ঘোষণা’ স্লোগান সম্বলিত এ লিফলেট বিতরণ করা হয়। সড়কের পাশের ব্যবসায়ী, পথচারী, ইজিবাইক চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দেন শিক্ষার্থীরা।
লিফলেট বিতরণের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন শুধু একটি সরকার উৎখাত করার উদ্দেশ্যে হয়নি। আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্যহীন সাম্যের নতুন বাংলাদেশ গড়ার। পরবর্তীতে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা যেন এই আন্দোলনকে নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্যই জুলাই ঘোষণাপত্র অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
সদস্য সচিব সাফফাতুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিলুপ্ত করতে সব ধরনের সংস্কারের ওয়াদা দিতে হবে। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলুপ্তি এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে। জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্বীকৃতি দিতে হবে এবং আহতদের দায়িত্ব নিতে হবে।’
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং আহতদের বিনামূল্যে সুচিকিৎসা প্রদানের প্রতিশ্রুতি। একই সঙ্গে অভ্যুত্থানে জড়িত আওয়ামী খুনী ও দোসরদের বিচার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল ভিত্তি সংবিধান বাতিল করে নির্বাচিত গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়।
ঘোষণাপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পরিস্কারভাবে উল্লেখ, ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতা স্পষ্ট করা। নতুন রাষ্ট্রকাঠামোতে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের মধ্য দিয়ে নাগরিক পরিচয়কে প্রধান করে একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো।
লিফলেটে উল্লেখিত এসব বিষয় সাধারণ মানুষের মাঝে সুশৃঙ্খলভাবে তুলে ধরেন ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব শিমুল হোসেন, হাসিবুল ইসলাম শান্ত, প্লাবন এবং সদস্য ফাহিম প্রমুখ।

এদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ঘোষণাপত্রের দাবিতে ঝিনাইদহে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। গতকাল শনিবার বিকেলে শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়। গণসংযোগ শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝিনাইদহ জেলা শাখার সমন্বয়ক আবু হুরায়রা, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি নাসির আল সাদী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাইদুর রহমান, রত্না খাতুন, অ্যাডভোকেট জাহিদুর রহমান, মুজাহিদুল হক, মনির হোসেন, তরিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, অন্তর, তানাইম আহমেদ ও সাব্বির আহমেদ জুয়েল।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের পতন হয়েছে। দেশে এক নতুন ভোর উদিত হয়েছে। দেশে যাতে আর কখনো যেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদ কায়েম না হতে পারে সেজন্য ছাত্র জনতা সোচ্চার রয়েছে। ৫২-র ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪ এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থান একই সূত্রে গাথা। দেশের জন্য সাধারণ জনতা বারবার রক্ত দিয়েছে। এবার আমাদের দেশ গড়তে হবে। চাঁদাবাজ, লুটপাট ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বক্তারা দ্রুত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ঘোষণাপত্রের দাবি জানান। সমাবেশ শেষে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশে জনমত গঠনের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে লিফলেট বিতরণ

সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান

আপলোড টাইম : ১০:১৬:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় লিফলেট বিতরণ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। শনিবার বিকেল ৪টায় শহরের শহিদ হাসান চত্বর এলাকায় ‘জুলাই এর প্রেরণা, দিতে হবে ঘোষণা’ স্লোগান সম্বলিত এ লিফলেট বিতরণ করা হয়। সড়কের পাশের ব্যবসায়ী, পথচারী, ইজিবাইক চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দেন শিক্ষার্থীরা।
লিফলেট বিতরণের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক বলেন, ‘জুলাই আন্দোলন শুধু একটি সরকার উৎখাত করার উদ্দেশ্যে হয়নি। আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্যহীন সাম্যের নতুন বাংলাদেশ গড়ার। পরবর্তীতে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা যেন এই আন্দোলনকে নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্যই জুলাই ঘোষণাপত্র অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।’
সদস্য সচিব সাফফাতুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিলুপ্ত করতে সব ধরনের সংস্কারের ওয়াদা দিতে হবে। ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলুপ্তি এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে হবে। জুলাই আন্দোলনের শহীদদের স্বীকৃতি দিতে হবে এবং আহতদের দায়িত্ব নিতে হবে।’
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং আহতদের বিনামূল্যে সুচিকিৎসা প্রদানের প্রতিশ্রুতি। একই সঙ্গে অভ্যুত্থানে জড়িত আওয়ামী খুনী ও দোসরদের বিচার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল ভিত্তি সংবিধান বাতিল করে নির্বাচিত গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়।
ঘোষণাপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পরিস্কারভাবে উল্লেখ, ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতা স্পষ্ট করা। নতুন রাষ্ট্রকাঠামোতে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের মধ্য দিয়ে নাগরিক পরিচয়কে প্রধান করে একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো।
লিফলেটে উল্লেখিত এসব বিষয় সাধারণ মানুষের মাঝে সুশৃঙ্খলভাবে তুলে ধরেন ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্য সচিব শিমুল হোসেন, হাসিবুল ইসলাম শান্ত, প্লাবন এবং সদস্য ফাহিম প্রমুখ।

এদিকে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ঘোষণাপত্রের দাবিতে ঝিনাইদহে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। গতকাল শনিবার বিকেলে শহরের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়। গণসংযোগ শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝিনাইদহ জেলা শাখার সমন্বয়ক আবু হুরায়রা, জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি নাসির আল সাদী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাইদুর রহমান, রত্না খাতুন, অ্যাডভোকেট জাহিদুর রহমান, মুজাহিদুল হক, মনির হোসেন, তরিকুল ইসলাম, হুমায়ুন কবির, অন্তর, তানাইম আহমেদ ও সাব্বির আহমেদ জুয়েল।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের পতন হয়েছে। দেশে এক নতুন ভোর উদিত হয়েছে। দেশে যাতে আর কখনো যেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদ কায়েম না হতে পারে সেজন্য ছাত্র জনতা সোচ্চার রয়েছে। ৫২-র ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪ এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থান একই সূত্রে গাথা। দেশের জন্য সাধারণ জনতা বারবার রক্ত দিয়েছে। এবার আমাদের দেশ গড়তে হবে। চাঁদাবাজ, লুটপাট ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বক্তারা দ্রুত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ঘোষণাপত্রের দাবি জানান। সমাবেশ শেষে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশে জনমত গঠনের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।