ইপেপার । আজ রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

হরিণাকুণ্ডুতে পাকা বাড়ি নির্মাণের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ঠিকাদারের প্রতারণা

গ্রামের সাধারণ মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও

প্রতিবেদক, হরিণাকুণ্ড:
  • আপলোড টাইম : ০৫:১০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে অভিনব প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে আলমগীর কবির নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ‘ওয়ান ব্যাংক’ ও বিদেশি বরাদ্দে গ্রামে প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও পাকা বসতবাড়ি নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে তিনি জামানতের নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। অভিযুক্ত আলমগীর কবির হোসেন যশোর জেলার মণ্ডল গাভী গ্রামের বাসিন্দা। আলমগীরের সঙ্গে আরও কিছু ব্যক্তি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবি, দরিবিন্নী এলাকার সিদ্দিক নামের এক ব্যক্তিকে আধুনিক ঘর নির্মাণের প্রস্তাব দেন আলমগীর। তবে বরাদ্দ পেতে ৪ লাখ টাকা জামানত দিতে হবে বলে শর্ত দেন। সিদ্দিক ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করলে আলমগীর প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ করে ভিত্তি স্থাপন করেন। এভাবে কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার আরও অনেকেই তার ফাঁদে পড়ে। তিনি ভবন নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে ৫ পরিচারের থেকে জামানত হিসেবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
হরিণাকুণ্ডু থানাধীন রঘুনাথপুর ইউনিয়নের টাকিরপোতা গ্রামের মিজানুর রহমান, যিনি একজন রাজমিস্ত্রী। প্রতারক আলমগীরের শিকার হয়েছেন তিনিও।

মিজানুর রহমান জানান, আলমগীর কবির তার কাছে বিভিন্ন প্রকল্পের ভবন নির্মাণের জন্য ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মৌখিক চুক্তি করেন। কাজ শুরুর সময় আলমগীর সাপ্তাহিক ভিত্তিতে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও নির্মাণসামগ্রীর মূল্য পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু কাজের একপর্যায়ে প্রায় ১১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার নির্মাণসামগ্রী ও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করে পালিয়ে যান। পরে ১৮ ডিসেম্বর রড ক্রয়ের জন্য দুটি আলমসাধু চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে পাঠানো হয়। এসময় আলমগীর ফোন বন্ধ করে পলাতক হয়ে যায়। তার সাথে আর যোগযোগ করাও যাচ্ছে না।

চরপাড়া, দরিবিন্নী এবং চর আড়িয়াকান্দি এলাকায় তার প্রতারণার আরও নজির পাওয়া গেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, আলমগীর বিদেশি বরাদ্দের নামে ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে তিন কক্ষবিশিষ্ট পাকা বাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিটি বাড়ির জন্য ২ থেকে ৩ লাখ টাকা জামানত নেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করতেন তিনি। পরে এক রাতে ঢাকায় অফিসে কাজের কথা বলে তিনি পালিয়ে যান। সেই থেকে আর তার খোঁজ মেলেনি।

এ ঘটনায় গত ১৯ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী রাজমিস্ত্রী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে হরিণাকুণ্ডু থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম.এ. রউফ বলেন, ‘প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বি.এম. তারিক উজ জামান জানান, প্রতারণার বিষয়টি তার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

হরিণাকুণ্ডুতে পাকা বাড়ি নির্মাণের প্রলোভন দেখিয়ে ভুয়া ঠিকাদারের প্রতারণা

গ্রামের সাধারণ মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও

আপলোড টাইম : ০৫:১০:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে অভিনব প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে আলমগীর কবির নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ‘ওয়ান ব্যাংক’ ও বিদেশি বরাদ্দে গ্রামে প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও পাকা বসতবাড়ি নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে তিনি জামানতের নামে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন। অভিযুক্ত আলমগীর কবির হোসেন যশোর জেলার মণ্ডল গাভী গ্রামের বাসিন্দা। আলমগীরের সঙ্গে আরও কিছু ব্যক্তি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর দাবি, দরিবিন্নী এলাকার সিদ্দিক নামের এক ব্যক্তিকে আধুনিক ঘর নির্মাণের প্রস্তাব দেন আলমগীর। তবে বরাদ্দ পেতে ৪ লাখ টাকা জামানত দিতে হবে বলে শর্ত দেন। সিদ্দিক ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করলে আলমগীর প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ করে ভিত্তি স্থাপন করেন। এভাবে কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার আরও অনেকেই তার ফাঁদে পড়ে। তিনি ভবন নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে ৫ পরিচারের থেকে জামানত হিসেবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
হরিণাকুণ্ডু থানাধীন রঘুনাথপুর ইউনিয়নের টাকিরপোতা গ্রামের মিজানুর রহমান, যিনি একজন রাজমিস্ত্রী। প্রতারক আলমগীরের শিকার হয়েছেন তিনিও।

মিজানুর রহমান জানান, আলমগীর কবির তার কাছে বিভিন্ন প্রকল্পের ভবন নির্মাণের জন্য ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মৌখিক চুক্তি করেন। কাজ শুরুর সময় আলমগীর সাপ্তাহিক ভিত্তিতে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও নির্মাণসামগ্রীর মূল্য পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু কাজের একপর্যায়ে প্রায় ১১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার নির্মাণসামগ্রী ও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক পরিশোধ না করে পালিয়ে যান। পরে ১৮ ডিসেম্বর রড ক্রয়ের জন্য দুটি আলমসাধু চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে পাঠানো হয়। এসময় আলমগীর ফোন বন্ধ করে পলাতক হয়ে যায়। তার সাথে আর যোগযোগ করাও যাচ্ছে না।

চরপাড়া, দরিবিন্নী এবং চর আড়িয়াকান্দি এলাকায় তার প্রতারণার আরও নজির পাওয়া গেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, আলমগীর বিদেশি বরাদ্দের নামে ওয়ান ব্যাংকের মাধ্যমে তিন কক্ষবিশিষ্ট পাকা বাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিটি বাড়ির জন্য ২ থেকে ৩ লাখ টাকা জামানত নেন। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করতেন তিনি। পরে এক রাতে ঢাকায় অফিসে কাজের কথা বলে তিনি পালিয়ে যান। সেই থেকে আর তার খোঁজ মেলেনি।

এ ঘটনায় গত ১৯ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী রাজমিস্ত্রী মিজানুর রহমান বাদী হয়ে আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে হরিণাকুণ্ডু থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এম.এ. রউফ বলেন, ‘প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমাদের তদন্ত চলমান রয়েছে এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বি.এম. তারিক উজ জামান জানান, প্রতারণার বিষয়টি তার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।