ইপেপার । আজ রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড

হিমেল হাওয়ায় বেড়েছে শীতের দাপট, জনজীবনে দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১০:২৩:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৫৯ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী এই জেলায় এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে তীব্র ঠান্ডা আর হিমেল বাতাসে শুরু হয়েছে শীতের দাপট। জনজীবনে নেমে এসেছে প্রচণ্ড দুর্ভোগ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে জেলার ও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন বুধবার (১১ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমে গতকাল বৃহস্পতিবার দাঁড়ায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, গতকাল সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। সকাল ৯টায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জে যৌথভাবে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে, ঘন কুয়াশার সাথে তীব্র ঠান্ডায় এ অঞ্চলের মানুষের যবুথবু অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ভোরে দিনমজুর ও শ্রমিকদের কাজে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ঘন কুয়াশায় সড়কে হেডলাইট জালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। শীত নিবারণে অনেকে আবার খড়কুটো জালিয়ে উষ্ণতা নেয়ার চেষ্টা করছেন।

চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশা চালক আলী হোসেন বলেন, ‘শীতে বাইরে বের হতে পারছি না। হাত কালা (ঠাণ্ডা) হয়ে যাচ্ছে। রিকশায় প্যাডেল মারা যাচ্ছে না। আয় রোজগার কমে গেছে। আর দুপুর পর্যন্ত তেমন ভাড়া-ভুতো হচ্ছে না।’ চা-দোকানি আলফাজ আলী বলেন, ‘সকালে চায়ের খরিদ্দার (ক্রেতা) কমে গেছে। শীতে চা বানাতেও প্রচুর কষ্ট হচ্ছে।’

দিনমজুর সোহান আলী বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে কামলা খাটার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বড় বাজারে আসি। এখান থেকে কোনো না কোনো একটা কাজ হয়। লোকজন দিনমজুর লাগলে এখান থেকে আমাদের নিয়ে যায়। গড়ে প্রতিদিন বড় বাজারে একশ থেকে দেড়শ দিনমজুর আসে। তবে শীতের কারণ কদিন বেশিরভাগের কাজ হচ্ছে না। খুব বিপদে আছি।’

বৃদ্ধ বয়সী দিনমজুর আবুল কাশেম বলেন, ‘বয়স বেশি বাপু, কাম (কাজ) করব কীভাবে। পরিবার চালাতে গিয়ে তাও কষ্ট করছি। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার শীত সহ্য করতেই পারছিনে। কেউ কেউ ইয়ারকি করে বলছে, কাশেম এবারের শীতে মরবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড

হিমেল হাওয়ায় বেড়েছে শীতের দাপট, জনজীবনে দুর্ভোগ

আপলোড টাইম : ১০:২৩:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী এই জেলায় এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এতে তীব্র ঠান্ডা আর হিমেল বাতাসে শুরু হয়েছে শীতের দাপট। জনজীবনে নেমে এসেছে প্রচণ্ড দুর্ভোগ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় এ জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ মৌসুমে জেলার ও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রার পারদ নামতে শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন বুধবার (১১ ডিসেম্বর) তাপমাত্রা ছিল ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমে গতকাল বৃহস্পতিবার দাঁড়ায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, গতকাল সকাল ৬টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। সকাল ৯টায় একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা ও গোপালগঞ্জে যৌথভাবে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে, ঘন কুয়াশার সাথে তীব্র ঠান্ডায় এ অঞ্চলের মানুষের যবুথবু অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ভোরে দিনমজুর ও শ্রমিকদের কাজে যেতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। ঘন কুয়াশায় সড়কে হেডলাইট জালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। শীত নিবারণে অনেকে আবার খড়কুটো জালিয়ে উষ্ণতা নেয়ার চেষ্টা করছেন।

চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশা চালক আলী হোসেন বলেন, ‘শীতে বাইরে বের হতে পারছি না। হাত কালা (ঠাণ্ডা) হয়ে যাচ্ছে। রিকশায় প্যাডেল মারা যাচ্ছে না। আয় রোজগার কমে গেছে। আর দুপুর পর্যন্ত তেমন ভাড়া-ভুতো হচ্ছে না।’ চা-দোকানি আলফাজ আলী বলেন, ‘সকালে চায়ের খরিদ্দার (ক্রেতা) কমে গেছে। শীতে চা বানাতেও প্রচুর কষ্ট হচ্ছে।’

দিনমজুর সোহান আলী বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে কামলা খাটার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বড় বাজারে আসি। এখান থেকে কোনো না কোনো একটা কাজ হয়। লোকজন দিনমজুর লাগলে এখান থেকে আমাদের নিয়ে যায়। গড়ে প্রতিদিন বড় বাজারে একশ থেকে দেড়শ দিনমজুর আসে। তবে শীতের কারণ কদিন বেশিরভাগের কাজ হচ্ছে না। খুব বিপদে আছি।’

বৃদ্ধ বয়সী দিনমজুর আবুল কাশেম বলেন, ‘বয়স বেশি বাপু, কাম (কাজ) করব কীভাবে। পরিবার চালাতে গিয়ে তাও কষ্ট করছি। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার শীত সহ্য করতেই পারছিনে। কেউ কেউ ইয়ারকি করে বলছে, কাশেম এবারের শীতে মরবে।’