ইপেপার । আজ রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

ঝিনাইদহের নগরবাথান গ্রামে রহস্যজনক মৃত্যুর পর হত্যা মামলা

দাফনের ৮২ দিন পর স্কুলছাত্রের লাশ উত্তোলন

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ১০:০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৫৩ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহে লাশ দাফনের ৮২ দিন পর আদালতের নির্দেশে সোহান (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রের লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেফতাহুল হাসানের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ সদর উপজেলার নগরবাথান গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে সোহানের লাশ উত্তোলন করে। সোহান একই গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় সোহানের। ২১ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে একটি মহল ঝিনাইদহের নগরবাথান গ্রামে সোহানের লাশ দাফন করে। লাশ দাফনের পর সোহানকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার হলে ঝিনাইদহের একটি আদালতে তার বাবা শহিদুল ইসলাম ৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরীফ লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করলে ঝিনাইদহ সদর আমলি আদালতের বিচারক তা মঞ্জুর করেন।

সোহানের মা সুন্দরী খাতুন অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে নগরবাথান গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে সাকিব (২৭)। জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
মামলার বাদী শহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সাকিব ও তার অজ্ঞাত বন্ধুরা সোহানকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকার ৩০০ ফিটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহিদুল ইসলাম ছেলেকে বাড়িতে ফেরার জন্য ফোন করলে সোহান জানায়, সে খুব ঝামেলায় আছে। এরপর সোহানের বাবা সাকিবকে ফোন করে। এসময় ফোন ধরে সাকিব গালিগালাজ করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। ঘটনার কিছুক্ষণ পর রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সোহানের বাবাকে ফোন করে জানানো হয় সোহান হাসপাতালে। খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান সাকিবের দুই ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা খাতুন সেখানে উপস্থিত।

সোহানের বাবা আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালে থাকতেই সাকিবের বাবা আব্দুল আজিজ তাকে ফোন করে কোনো ঝামেলা না করার জন্য হুমকি দেন। এছাড়া সাকিবের ফুফা আরব আলী তাকে শিখিয়ে দেন পুলিশ গেলে আমি যেন তাদের বলি সোহান দুর্ঘটনায় মারা গেছে। গ্রামবাসী জানায়, আসামি সাকিবের ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা ঢাকায় মানুষের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির ব্যবসা করে। এই অপকর্ম করে তারা ইতিমধ্যে ঢাকা ও ঝিনাইদহ শহরের একাধিক স্থানে বহুতল ভবন তৈরি ও জায়গা জমি কিনেছেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ গোয়েন্দা বিভাগের এসআই শরীফ জানান, আদালতে এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ফলে আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে বোঝা যাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

ঝিনাইদহের নগরবাথান গ্রামে রহস্যজনক মৃত্যুর পর হত্যা মামলা

দাফনের ৮২ দিন পর স্কুলছাত্রের লাশ উত্তোলন

আপলোড টাইম : ১০:০২:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ঝিনাইদহে লাশ দাফনের ৮২ দিন পর আদালতের নির্দেশে সোহান (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রের লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেফতাহুল হাসানের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ সদর উপজেলার নগরবাথান গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে সোহানের লাশ উত্তোলন করে। সোহান একই গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে।

জানা গেছে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় রহস্যজনক মৃত্যু হয় সোহানের। ২১ সেপ্টেম্বর ময়নাতদন্ত না করেই তড়িঘড়ি করে একটি মহল ঝিনাইদহের নগরবাথান গ্রামে সোহানের লাশ দাফন করে। লাশ দাফনের পর সোহানকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রচার হলে ঝিনাইদহের একটি আদালতে তার বাবা শহিদুল ইসলাম ৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য ঝিনাইদহ ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরীফ লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য আবেদন করলে ঝিনাইদহ সদর আমলি আদালতের বিচারক তা মঞ্জুর করেন।

সোহানের মা সুন্দরী খাতুন অভিযোগ করেন, তার ছেলেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে নগরবাথান গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে সাকিব (২৭)। জমি-জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
মামলার বাদী শহিদুল ইসলাম জানান, চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সাকিব ও তার অজ্ঞাত বন্ধুরা সোহানকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঢাকার ৩০০ ফিটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঘটনার দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শহিদুল ইসলাম ছেলেকে বাড়িতে ফেরার জন্য ফোন করলে সোহান জানায়, সে খুব ঝামেলায় আছে। এরপর সোহানের বাবা সাকিবকে ফোন করে। এসময় ফোন ধরে সাকিব গালিগালাজ করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। ঘটনার কিছুক্ষণ পর রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সোহানের বাবাকে ফোন করে জানানো হয় সোহান হাসপাতালে। খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান সাকিবের দুই ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা খাতুন সেখানে উপস্থিত।

সোহানের বাবা আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালে থাকতেই সাকিবের বাবা আব্দুল আজিজ তাকে ফোন করে কোনো ঝামেলা না করার জন্য হুমকি দেন। এছাড়া সাকিবের ফুফা আরব আলী তাকে শিখিয়ে দেন পুলিশ গেলে আমি যেন তাদের বলি সোহান দুর্ঘটনায় মারা গেছে। গ্রামবাসী জানায়, আসামি সাকিবের ফুফু ডায়রি খাতুন ও আরজিনা ঢাকায় মানুষের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রির ব্যবসা করে। এই অপকর্ম করে তারা ইতিমধ্যে ঢাকা ও ঝিনাইদহ শহরের একাধিক স্থানে বহুতল ভবন তৈরি ও জায়গা জমি কিনেছেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ গোয়েন্দা বিভাগের এসআই শরীফ জানান, আদালতে এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ফলে আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তে বোঝা যাবে মৃত্যুর সঠিক কারণ।