ইপেপার । আজ রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫

দামুড়হুদায় দখল আর ভরাটে খালগুলো বেহাল, মাঠের কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতা

অনাবাদি প্রায় এক হাজার বিঘা জমি, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা

আওয়াল হোসেন, দর্শনা:
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর পর্যন্ত শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের ১ হাজার বিঘা জমিতে বছরে আগে তিনটি করে ফসলের আবাদ হতো। তবে বর্তমানে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এই ১ হাজার বিঘা জমি অনাবাদি থাকছে। এতে একদিকে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অপর দিকে দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে ঘাটতি আরও বাড়ছে।

জানা গেছে, এঁড়ো খালটি অবৈধ দখল আর ভরাটের কারণে শোলাগাড়ি, দোবিল ও উজিরপুর পর্যন্ত মাঠের পানি নিষ্কাশন হয় না। এই খালটি উদ্ধার করে খনন করা হলে ফের শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের জমিগুলো চাষের উপযোগী করা সম্ভব হবে। দামুড়হুদা খাঁ পাড়ার আবুল কাশেম, দশমী পাড়ার শমশের আলী, জয়রামপুর গ্রামের জাফর আলী ও উজিরপুর গ্রামের কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, দামুড়হুদার ওদুদ শাহ কলেজের পিছন থেকে পুড়াপাড়া হয়ে উজিরপুর পর্যন্ত বিস্তৃত শোলাগাড়ি ও দোবিলের মাঠ। গত ১০-১২ বছর আগেও এই মাঠে কৃষকেরা সারা বছর বিভিন্ন ফসলের আবাদ করত। বর্ষার পর শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের পানি এঁড়ো খাল দিয়ে বের হয়ে ঝেটের বিলে চলে যেত। ফলে এ মাঠের জমিগুলো চাষের উপযোগী হতো। তবে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষের ফলে ধীরে ধীরে এঁড়ো খালটি ভরাট হয়ে গেছে।

তারা আরও বলেন, একই সাথে এঁড়ো খালের দুটি কার্লভাটও ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে বর্ষায় এই বিস্তীর্ণ মাঠের পানি আর বের হতে পারে না। ফলে ১ হাজার বিঘা উর্বর কৃষিজমি এখন সারা বছর জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে থাকছে। এতে যেমন দেশের কৃষিখাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছের শত শত কৃষক। বর্ষার আগেই খালটি খনন করে জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

কৃষকরা জানান, শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের ১ হাজার বিঘা কৃষি জমির জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতিপূর্বে একাধিকবার দাবি জানিয়েও কোনো সমাধান হয়নি। কৃষক জোট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের জোর আবেদন জানিয়ে আসছে। এ বিষয়ে সর্বশেষ গত ২৮ এপ্রিল উপজেলা কৃষক জোটের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার শারমীন আক্তার বলেন, ‘আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলাপ করব। উপজেলা মাসিক সভায় আলোচনা করে ওই ১ হাজার বিঘা জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করব।’
এ বিষয়ে দামড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান জানান, বিষয়টি মাসিক সভায় আলোচনা করে খালটি পরিদর্শন করে কী করা যায়, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ করতে হবে। কারণ এতগুলো জমি জলাবদ্ধতার কারণে চাষ হচ্ছে না। বিষয়টি দেখা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

দামুড়হুদায় দখল আর ভরাটে খালগুলো বেহাল, মাঠের কৃষিজমিতে জলাবদ্ধতা

অনাবাদি প্রায় এক হাজার বিঘা জমি, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা

আপলোড টাইম : ০৯:৫৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর পর্যন্ত শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের ১ হাজার বিঘা জমিতে বছরে আগে তিনটি করে ফসলের আবাদ হতো। তবে বর্তমানে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় এই ১ হাজার বিঘা জমি অনাবাদি থাকছে। এতে একদিকে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অপর দিকে দেশের খাদ্য চাহিদা পূরণে ঘাটতি আরও বাড়ছে।

জানা গেছে, এঁড়ো খালটি অবৈধ দখল আর ভরাটের কারণে শোলাগাড়ি, দোবিল ও উজিরপুর পর্যন্ত মাঠের পানি নিষ্কাশন হয় না। এই খালটি উদ্ধার করে খনন করা হলে ফের শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের জমিগুলো চাষের উপযোগী করা সম্ভব হবে। দামুড়হুদা খাঁ পাড়ার আবুল কাশেম, দশমী পাড়ার শমশের আলী, জয়রামপুর গ্রামের জাফর আলী ও উজিরপুর গ্রামের কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, দামুড়হুদার ওদুদ শাহ কলেজের পিছন থেকে পুড়াপাড়া হয়ে উজিরপুর পর্যন্ত বিস্তৃত শোলাগাড়ি ও দোবিলের মাঠ। গত ১০-১২ বছর আগেও এই মাঠে কৃষকেরা সারা বছর বিভিন্ন ফসলের আবাদ করত। বর্ষার পর শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের পানি এঁড়ো খাল দিয়ে বের হয়ে ঝেটের বিলে চলে যেত। ফলে এ মাঠের জমিগুলো চাষের উপযোগী হতো। তবে ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষের ফলে ধীরে ধীরে এঁড়ো খালটি ভরাট হয়ে গেছে।

তারা আরও বলেন, একই সাথে এঁড়ো খালের দুটি কার্লভাটও ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে বর্ষায় এই বিস্তীর্ণ মাঠের পানি আর বের হতে পারে না। ফলে ১ হাজার বিঘা উর্বর কৃষিজমি এখন সারা বছর জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে থাকছে। এতে যেমন দেশের কৃষিখাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, অন্যদিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছের শত শত কৃষক। বর্ষার আগেই খালটি খনন করে জলাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

কৃষকরা জানান, শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের ১ হাজার বিঘা কৃষি জমির জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতিপূর্বে একাধিকবার দাবি জানিয়েও কোনো সমাধান হয়নি। কৃষক জোট জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে শোলাগাড়ি ও দোবিল মাঠের জলাবদ্ধতা নিরসনের জোর আবেদন জানিয়ে আসছে। এ বিষয়ে সর্বশেষ গত ২৮ এপ্রিল উপজেলা কৃষক জোটের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার শারমীন আক্তার বলেন, ‘আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে আলাপ করব। উপজেলা মাসিক সভায় আলোচনা করে ওই ১ হাজার বিঘা জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করব।’
এ বিষয়ে দামড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এইচ তাসফিকুর রহমান জানান, বিষয়টি মাসিক সভায় আলোচনা করে খালটি পরিদর্শন করে কী করা যায়, সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসকের সাথে আলাপ করতে হবে। কারণ এতগুলো জমি জলাবদ্ধতার কারণে চাষ হচ্ছে না। বিষয়টি দেখা হবে।