ইপেপার । আজ শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি

অবৈধ আদালত বিলুপ্ত করে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি

সমীকরণ প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৩:৩৪:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪
  • / ১৮ বার পড়া হয়েছে

চাকরি ফেরত পাওয়ার দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন পিলখানা হত্যাকাণ্ডে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের আমলে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনীর কয়েকজন অফিসার নিহত হন। ওই সময় অনেক বিডিআর সদস্যকে অভিযুক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হয়। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার বেশ কয়েকজন বিডিআর সদস্য চাকরি হারান। গতকাল চুয়াডাঙ্গার চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি প্রদান শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেছেন, ‘২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে পিলখানা ও দেশের অন্যান্য ইউনিটে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল, তা তৎকালীন সরকার কর্তৃক হাসিনার চক্রান্তে এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ বাহিনীর সহযোগিতায় ঘটানো হয়েছিল, যাতে তার পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া হয়। এর প্রতিদানে পিলখানাসহ দেশের অন্যান্য ইউনিটে অবৈধ আদালত স্থাপন করা হয়। ওই আদালত ছিল বিচারবিহীন, যেখানে কোনো আইনজীবী নিয়োগ দেয়াও নিষিদ্ধ ছিল। বিচারক নিজেই ছিলেন শাস্তিদাতা। পৃথিবীর কোনো দেশে এমন প্রথা নেই। আমরা অত্যন্ত অসহায় হয়ে পড়েছি। সারাদেশে প্রায় ১৮ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্য রয়েছেন। আমাদের দ্বারা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত রাষ্ট্র বা সমাজের কোনো ক্ষতি হয়নি। আমরা আপনার কাছে বিনীতভাবে আবেদন জানাই, আমাদের জীর্ণ সংসার জীবনের দিকে দৃষ্টি দিয়ে ওই অবৈধ আদালত বিলুপ্ত ঘোষণা করে আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার ব্যবস্থা করুন।’ বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদানকালে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ ও জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের লোকজন অংশ নেয়।

ঘণ্টাব্যাপী আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে এক সমাবেশে বিডিআর সদস্য বিএম কামরুজ্জামান, হাবিলদার আলিফ হোসেন ও মনিরুল ইসলাম বক্তব্য দেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে ভারতের তাঁবেদার ও ফ্যাসিবাদের জননী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার পরিকল্পিতভাবে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে। অথচ এই হত্যার দায় চাপিয়ে ১৯ হাজার বিডিআর সদস্যকে চাকরিচ্যুত ও জেল জরিমানা প্রদান করা হয়। বিডিআর সদ্যদের চাকরি না থাকায় বর্তমান পরিবারের লক্ষাধিক সদস্য মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি

অবৈধ আদালত বিলুপ্ত করে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি

আপলোড টাইম : ০৩:৩৪:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

চাকরি ফেরত পাওয়ার দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন পিলখানা হত্যাকাণ্ডে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের আমলে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনীর কয়েকজন অফিসার নিহত হন। ওই সময় অনেক বিডিআর সদস্যকে অভিযুক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হয়। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার বেশ কয়েকজন বিডিআর সদস্য চাকরি হারান। গতকাল চুয়াডাঙ্গার চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি প্রদান শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল সহকারে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।

স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেছেন, ‘২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে পিলখানা ও দেশের অন্যান্য ইউনিটে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছিল, তা তৎকালীন সরকার কর্তৃক হাসিনার চক্রান্তে এবং ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ বাহিনীর সহযোগিতায় ঘটানো হয়েছিল, যাতে তার পিতার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়া হয়। এর প্রতিদানে পিলখানাসহ দেশের অন্যান্য ইউনিটে অবৈধ আদালত স্থাপন করা হয়। ওই আদালত ছিল বিচারবিহীন, যেখানে কোনো আইনজীবী নিয়োগ দেয়াও নিষিদ্ধ ছিল। বিচারক নিজেই ছিলেন শাস্তিদাতা। পৃথিবীর কোনো দেশে এমন প্রথা নেই। আমরা অত্যন্ত অসহায় হয়ে পড়েছি। সারাদেশে প্রায় ১৮ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্য রয়েছেন। আমাদের দ্বারা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত রাষ্ট্র বা সমাজের কোনো ক্ষতি হয়নি। আমরা আপনার কাছে বিনীতভাবে আবেদন জানাই, আমাদের জীর্ণ সংসার জীবনের দিকে দৃষ্টি দিয়ে ওই অবৈধ আদালত বিলুপ্ত ঘোষণা করে আমাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার ব্যবস্থা করুন।’ বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদানকালে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবিতে ঝিনাইদহে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ ও জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের লোকজন অংশ নেয়।

ঘণ্টাব্যাপী আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি শেষে এক সমাবেশে বিডিআর সদস্য বিএম কামরুজ্জামান, হাবিলদার আলিফ হোসেন ও মনিরুল ইসলাম বক্তব্য দেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে ভারতের তাঁবেদার ও ফ্যাসিবাদের জননী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার পরিকল্পিতভাবে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে। অথচ এই হত্যার দায় চাপিয়ে ১৯ হাজার বিডিআর সদস্যকে চাকরিচ্যুত ও জেল জরিমানা প্রদান করা হয়। বিডিআর সদ্যদের চাকরি না থাকায় বর্তমান পরিবারের লক্ষাধিক সদস্য মানবেতর জীবনযাপন করছে।