ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

জীবননগরে চাকরি ও ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণা, হাতিয়েছেন মোটা অংকের টাকা

ভুয়া এনজিওর সহকারী ম্যানেজারকে আটকের পর থানায় মীমাংসা

জীবননগর অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৮:০২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

চাকরি ও ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ভুয়া এনজিও ‘প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড’-এর কথিত সহকারী ম্যানেজার জিহাদ হোসেনকে আটক করে স্থানীয়রা। গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে আপসের মাধ্যমে তিনি থানা থেকে ছাড়া পান। জিহাদকে টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সন্দেহে এদিন দুপুরে শহরের শাপলাকলি পাড়ার আব্দুস সাত্তারের ছেলে মুরসালিনসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী জিহাদকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলার মিনাজপুর গ্রামের লাল্টু মিয়ার ছেলে জিহাদ নিজেকে ‘প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড’-নামের একটি এনজিও জীবননগর শাখার ম্যানেজার পরিচয় দেন। এসময় ওই এনজিওতে চাকরি দেওয়ার নামে মুরসালিনসহ বিভিন্ন যুবক-যুবতীর নিকট থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা জামানতের নামে হাতিয়ে নেন। এরপর শিক্ষাগত সনদ চেয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে জিহাদের প্রতি ভুক্তভোগীদের সন্দেহ সৃষ্টি হয় এবং তারা জিহাদকে আটক করে থানা পুলিশের হস্তান্ত করে।

ভুক্তভোগেীর মধ্যে মুরসালিন বলেন, ‘আমার পরিচিত দুই মেয়ে, নয়নতারা ও রুনা খাতুনকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখান জিহাদ। তার কথায় আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু পরে টাকার জন্য টালবাহানা করলে তাকে ধরে পুলিশে দিই।’ তিনি জানান, নয়নতারা ও রুনাসহ ২৯ জনের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণে টাকা নিয়েছে জিহাদ।

এদিকে, থানা পুলিশে হস্তান্তরের পর জিহাদ ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেন এবং অন্যদের টাকাও ফেরত দেবে মর্মে আপসের মাধ্যমে ছাড়া পান। তবে এ ঘটনার পর আরও অনেক গ্রাহক থানায় হাজির হয়ে জিহাদ তাদের থেকেও বিভিন্ন পরিমাণে টাকা নিয়েছে অভিযোগ করে তাদের টাকার ফেরত উদ্ধারের দাবি করেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতা হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘জিহাদ চাকরি দেওয়ার নামে বেকার যুবক-যুবতীদের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতানোর চেষ্টা করেছে। তবে ভাগ্য ভালো যে, প্রতারণার আগেই বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে গেছে এবং ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’

অভিযুক্ত জিহাদ হোসেন দাবি করেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি কাজ করেছেন। কাউকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে টাকা নেননি। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তিনি সবসময় প্রস্তুত ছিলেন। তাকে হয়রানি করার জন্য থানায় দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন জিহাদ। তবে জিহাদ ‘প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড’ নামের কোনো এনজিও এর সঠিক তথ্য দেখায়নি ভুক্তভোগীদের।
এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়ায় বিষয়টি আপস-মীমাংসা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ মামলা করতে চাননি।’ জীবননগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জাকির উদ্দিন জানান, প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড নামে কোনো সংস্থা সমাজসেবায় নিবন্ধিত নয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

জীবননগরে চাকরি ও ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণা, হাতিয়েছেন মোটা অংকের টাকা

ভুয়া এনজিওর সহকারী ম্যানেজারকে আটকের পর থানায় মীমাংসা

আপলোড টাইম : ০৮:০২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

চাকরি ও ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ভুয়া এনজিও ‘প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড’-এর কথিত সহকারী ম্যানেজার জিহাদ হোসেনকে আটক করে স্থানীয়রা। গত সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় তাকে থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে আপসের মাধ্যমে তিনি থানা থেকে ছাড়া পান। জিহাদকে টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সন্দেহে এদিন দুপুরে শহরের শাপলাকলি পাড়ার আব্দুস সাত্তারের ছেলে মুরসালিনসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী জিহাদকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, উপজেলার মিনাজপুর গ্রামের লাল্টু মিয়ার ছেলে জিহাদ নিজেকে ‘প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড’-নামের একটি এনজিও জীবননগর শাখার ম্যানেজার পরিচয় দেন। এসময় ওই এনজিওতে চাকরি দেওয়ার নামে মুরসালিনসহ বিভিন্ন যুবক-যুবতীর নিকট থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা জামানতের নামে হাতিয়ে নেন। এরপর শিক্ষাগত সনদ চেয়ে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে জিহাদের প্রতি ভুক্তভোগীদের সন্দেহ সৃষ্টি হয় এবং তারা জিহাদকে আটক করে থানা পুলিশের হস্তান্ত করে।

ভুক্তভোগেীর মধ্যে মুরসালিন বলেন, ‘আমার পরিচিত দুই মেয়ে, নয়নতারা ও রুনা খাতুনকে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখান জিহাদ। তার কথায় আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু পরে টাকার জন্য টালবাহানা করলে তাকে ধরে পুলিশে দিই।’ তিনি জানান, নয়নতারা ও রুনাসহ ২৯ জনের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণে টাকা নিয়েছে জিহাদ।

এদিকে, থানা পুলিশে হস্তান্তরের পর জিহাদ ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেন এবং অন্যদের টাকাও ফেরত দেবে মর্মে আপসের মাধ্যমে ছাড়া পান। তবে এ ঘটনার পর আরও অনেক গ্রাহক থানায় হাজির হয়ে জিহাদ তাদের থেকেও বিভিন্ন পরিমাণে টাকা নিয়েছে অভিযোগ করে তাদের টাকার ফেরত উদ্ধারের দাবি করেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতা হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘জিহাদ চাকরি দেওয়ার নামে বেকার যুবক-যুবতীদের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতানোর চেষ্টা করেছে। তবে ভাগ্য ভালো যে, প্রতারণার আগেই বিষয়টি প্রকাশ পেয়ে গেছে এবং ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।’

অভিযুক্ত জিহাদ হোসেন দাবি করেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি কাজ করেছেন। কাউকে প্রতারণার উদ্দেশ্যে টাকা নেননি। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তিনি সবসময় প্রস্তুত ছিলেন। তাকে হয়রানি করার জন্য থানায় দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন জিহাদ। তবে জিহাদ ‘প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড’ নামের কোনো এনজিও এর সঠিক তথ্য দেখায়নি ভুক্তভোগীদের।
এ বিষয়ে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মামুন হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত দেওয়ায় বিষয়টি আপস-মীমাংসা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ মামলা করতে চাননি।’ জীবননগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জাকির উদ্দিন জানান, প্রত্যাশা ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড নামে কোনো সংস্থা সমাজসেবায় নিবন্ধিত নয়।