ইপেপার । আজ শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় পানবরজে মিলল টিকটকার মুন্নির অর্ধগলিত মরদেহ

ময়নাতদন্ত শেষে ভাংবাড়ীয়া কবরস্থানে লাশ দাফন, থানায় হত্যা মামলা দায়ের

সমীকরণ প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ১০:২৯:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪
  • / ৯৬ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গায় টিকটকার খালেদা আক্তার মুন্নির (২০) বিবস্ত্র অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাজরাহাটি-বোয়ালমারি মাঠ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা-পুলিশ। খালেদা আক্তার মুন্নি আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের জোয়ার্দ্দার পাড়ার খোয়াজ আলীর মেয়ে। এদিকে, খবর পাওয়ার পরপরই চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামানসহ সিআইডির ক্রাইমসিনের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে হাজরাহাটি-বোয়ালমারী মাঠে পানের বরজে কাজ করতে যান শ্রমিকেরা। এসময় একটি পানবরজের পাশে নারীর বিবস্ত্র ও অর্ধগলিত লাশ পড়ে থাকতে দেখে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা-পুলিশকে খবর দেন তারা। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। স্থানীয়রা জানান, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হতে পারে। মরদেহটি উলঙ্গ অবস্থায় পড়েছিল।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে কয়েকদিন আগে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

এদিকে, গতকাল দুপুরে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া গ্রামের নিখোঁজ খালেদা আক্তার মুন্নির পরিবারকে লাশটি দেখতে খবর দেয় পুলিশ। মুন্নির মা আহারন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশটি তার ছোট মেয়ে খালেদা আক্তার মুন্নির বলে শনাক্ত করেন। তিনি জানান, মুন্নি গত ৯ নভেম্বর শনিবার নিখোঁজ হন। পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৩-৪ দন আগে পরিচিত একজনের সাথে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হন মুন্নি। তারপর থেকে মুন্নির আর খোঁজ মেলেনি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। তাকে যারা ডেকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের দ্রুত আটক করে শাস্তির দাবি জানান।

সরেজমিনে বিকেলে মুন্নির বাড়ী ভাংবাড়ীয়া জোয়ার্দারপাড়ায় গেলে গ্রামবাসী ও প্রতিবেশীরা জানান, খালেদা আক্তার মুন্নি উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন। পিতৃহীন ও দরিদ্র পরিবারের মুন্নি যৌবনের শুরুতে খারাপ পথে পা বাড়ান। তিন বছর আগে পার্শ্ববর্তী গৌরীহৃদ গ্রামের প্রবাসী আসিবের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তবে বিয়ের পরেও মুন্নি উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে থাকেন। ফলে কিছু দিনের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ হয়। তারপর সুন্দরী মুন্নি ভারতে চলে যান। সেখানে একটি বারে ডান্স্যার হিসেবে কাজ করতেন। ভারত থেকে গত ৬ মাস আগে দেশে ফিরে আসেন মুন্নি। দেশে এসে আবারও তিনি জড়িয়ে পড়েন অসামাজিক কার্যকলাপে। তিনি কল গার্ল হিসেবে কাজ করতেন বলে প্রতিবেশীরা জানান।
এদিকে, গতকাল রাতে ময়নাতদন্ত শেষে মুন্নির লাশ গ্রামে আনা হয়। পরে ভাংবাড়ীয়া কবরস্থানে জানাজা শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে দাফন করা হয়। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে মরদেহ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশ কাজ শুরু করেছে। অতি দ্রুতই প্রকৃত ঘটনার রহস্য উন্মোচন এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় পানবরজে মিলল টিকটকার মুন্নির অর্ধগলিত মরদেহ

ময়নাতদন্ত শেষে ভাংবাড়ীয়া কবরস্থানে লাশ দাফন, থানায় হত্যা মামলা দায়ের

আপলোড টাইম : ১০:২৯:০৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় টিকটকার খালেদা আক্তার মুন্নির (২০) বিবস্ত্র অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাজরাহাটি-বোয়ালমারি মাঠ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা-পুলিশ। খালেদা আক্তার মুন্নি আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়িয়া গ্রামের জোয়ার্দ্দার পাড়ার খোয়াজ আলীর মেয়ে। এদিকে, খবর পাওয়ার পরপরই চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামানসহ সিআইডির ক্রাইমসিনের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে হাজরাহাটি-বোয়ালমারী মাঠে পানের বরজে কাজ করতে যান শ্রমিকেরা। এসময় একটি পানবরজের পাশে নারীর বিবস্ত্র ও অর্ধগলিত লাশ পড়ে থাকতে দেখে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা-পুলিশকে খবর দেন তারা। পরে পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। স্থানীয়রা জানান, তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হতে পারে। মরদেহটি উলঙ্গ অবস্থায় পড়েছিল।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালেদুর রহমান জানান, ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে কয়েকদিন আগে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

এদিকে, গতকাল দুপুরে আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া গ্রামের নিখোঁজ খালেদা আক্তার মুন্নির পরিবারকে লাশটি দেখতে খবর দেয় পুলিশ। মুন্নির মা আহারন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে গিয়ে লাশটি তার ছোট মেয়ে খালেদা আক্তার মুন্নির বলে শনাক্ত করেন। তিনি জানান, মুন্নি গত ৯ নভেম্বর শনিবার নিখোঁজ হন। পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ৩-৪ দন আগে পরিচিত একজনের সাথে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হন মুন্নি। তারপর থেকে মুন্নির আর খোঁজ মেলেনি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। তাকে যারা ডেকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, তাদের দ্রুত আটক করে শাস্তির দাবি জানান।

সরেজমিনে বিকেলে মুন্নির বাড়ী ভাংবাড়ীয়া জোয়ার্দারপাড়ায় গেলে গ্রামবাসী ও প্রতিবেশীরা জানান, খালেদা আক্তার মুন্নি উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতেন। পিতৃহীন ও দরিদ্র পরিবারের মুন্নি যৌবনের শুরুতে খারাপ পথে পা বাড়ান। তিন বছর আগে পার্শ্ববর্তী গৌরীহৃদ গ্রামের প্রবাসী আসিবের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তবে বিয়ের পরেও মুন্নি উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করতে থাকেন। ফলে কিছু দিনের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ হয়। তারপর সুন্দরী মুন্নি ভারতে চলে যান। সেখানে একটি বারে ডান্স্যার হিসেবে কাজ করতেন। ভারত থেকে গত ৬ মাস আগে দেশে ফিরে আসেন মুন্নি। দেশে এসে আবারও তিনি জড়িয়ে পড়েন অসামাজিক কার্যকলাপে। তিনি কল গার্ল হিসেবে কাজ করতেন বলে প্রতিবেশীরা জানান।
এদিকে, গতকাল রাতে ময়নাতদন্ত শেষে মুন্নির লাশ গ্রামে আনা হয়। পরে ভাংবাড়ীয়া কবরস্থানে জানাজা শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে দাফন করা হয়। চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে মরদেহ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশ কাজ শুরু করেছে। অতি দ্রুতই প্রকৃত ঘটনার রহস্য উন্মোচন এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।