চুয়াডাঙ্গায় সিনজেনটা’র ফুলকপি বীজ বপনে ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ কৃষক
ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
- আপলোড টাইম : ০৯:৩৯:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
- / ৪৪ বার পড়া হয়েছে
সিনজেনটা কোম্পানির ‘হোয়াইট গোল্ড’ ফুলকপি বীজ বপন করে বিপাকে পড়েছেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার অন্তত ৩৫ জন কৃষক। চাষের পর ফুলকপি উত্তোলনের নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো ফলন হয়নি। এতে পুরো মৌসুমের লোকশানের পাশাপাশি তারা পিছিয়ে পড়ছেন পরবর্তী চাষের জন্য। গতকাল মঙ্গলবার এই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা সিনজেনটা কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেন। বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনের পর কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ দাবি করে বিক্ষোভ করেন। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দেন।
মানববন্ধনে চাষীরা জানান, চলতি মৌসুমে সিনজেনটার ‘হোয়াইট গোল্ড’ ফুলকপি বীজ বপন করেন বেলগাছী এলাকার অন্তত ৩৫ জন কৃষক। তিন মাস পূর্বে সিনজেনটা কোম্পানির কয়েকজন প্রতিনিধি বীজ বিক্রেতাদের নিয়ে সাধারণ কৃষকদের ‘হোয়াইট গোল্ড’ ফুলকপি বীজ বপনের পরামর্শ দেন। প্রতিশ্রুতি ছিল ৬৫ দিনের মধ্যে ভালো ফলন মিলবে। কিন্তু আড়াই মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো চাষীর খেতে ফুল আসেনি। কিছু কিছু গাছে ফুল এলেও তা সম্পূর্ণ অপুষ্ট।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে উলফাত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘বীজ কেনার সময় বিক্রেতারা দাবি করেছিল ৬০ দিনের মধ্যে কপির ওজন হবে এক কেজির বেশি। দুই মাসেই কপি বাজারজাত করার উপযোগী হয়ে যাবে। অথচ ৮০ দিনেরও বেশি সময় পার হলেও গাছে কোনো ফলন আসেনি। দু’একটি গাছে ফলন এলেও তা সম্পূর্ণ অপুষ্ট এবং বিক্রির অযোগ্য।’
তিনি জানান, ‘বেলগাছি এলাকার ৩৫ জন কৃষক প্রায় ৩০ একর জমিতে সিনজেনটা কোম্পানির ‘হোয়াইট গোল্ড’ বীজ বপন করে পথে বসেছেন। কপি বিক্রি করে বেশিরভাগ কৃষক বাকিতে কেনা সার ও কীটনাশকের দাম শোধ দিতেন। এখন আসল দূরের কথা একটি টাকায় বিক্রি হবে এমন ফসলও ফলেনি।’
চাষী আকবর আলী বলেন, ‘আমরা কৃষি বিভাগের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি, তারা মাঠও পরিদর্শন করেছে। কিন্তু এখনো কোনো সমাধান মেলেনি। কোম্পানির লোকেরাও সময়ক্ষেপণ করছে। প্রতি বিঘায় ১০ গ্রাম ওজনের ৪ প্যাকেট বীজ বপন করা হয়েছে। প্রতি প্যাকেটের দাম নিয়েছিল ৭০০ টাকা। এখন এক বিঘায় ১০০ টাকার ফলনও হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষতিপূরণ না পেলে আমরা পরবর্তী ফসলের চাষ করতেও পারব না। ফসল না ফলালে আমাদের বিষ খাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। আমাদের সঙ্গে যে প্রতারণা হয়েছে, যারা সারাদিন মাঠে কাজ করেছে তারা ছাড়া এই কষ্ট কেউ বুঝবে না। আমারা সিনজেনটা কোস্পানির উপযুক্ত শাস্তি ও আমাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ চাই।’