দর্শনায় পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের
সাবেক এমপি টগর ও সাবেক এসপি আ.রহিমসহ আসামি ৯- আপলোড টাইম : ০৩:৫৫:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
- / ৩১ বার পড়া হয়েছে
চুয়াডাঙ্গায় বন্দুকযুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর ও চুয়াডাঙ্গার সাবেক পুলিশ সুপার আব্দুর রহিমসহ ৯ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত বিল্লাল হোসেনের বোন শালপোনা পারভীন (৪০) বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা আমলি আদালতে এই মামলা দায়ের করেন। দর্শনা আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রিপন আলী বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে মামলাটি চুয়াডাঙ্গা সিআইডিকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক কাউন্সিলর ও দর্শনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জয়নুল আবেদিন নফর, সাবেক দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান মিজান, সাবেক দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী মুনছুর বাবু, দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুরের আওয়ামী লীগ নেতা আলীহীম, দামুড়হুদা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহসান হাবিব, এএসআই দেবাশীষ এবং কনস্টেবল সাজিদুর রহমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ‘গত ২০১৩ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পৌর এলাকার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের মো. বিল্লাল হোসেনকে (৪৫) চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদীন নফর, আলী মুনছুর বাবু ও আলীহিম পুলিশের ক্রসফায়ারে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে। বিল্লাল হোসেন চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশের ইনচার্জ এস এম মিজানকে বিষয়টি জানায়। এসময় দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসএম মিজানুর রহমান মিজান, আলী আজগর টগর, তার ভাই আলী মুনছুর বাবু, আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল আবেদিন নফর ও আলীহিমকে জানালে পুলিশ এসআই মিজান, সাবেক চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুল রহিম শাহ, দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব, কনস্টেবল সাজিদুর রহমান, এএসআই দেবাশীষরা বিল্লাল হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
২০১৩ সালের ১১ আগস্ট অবৈধভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে ওই দিন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর বিল্লাল হোসেনকে বাড়ি থেকে অপহরণ করে দর্শনা দক্ষিণ চাঁদপুর উজলপুর রাস্তার হরচরার মাঠে নামক স্থান নিয়ে যায়। এসময় আসামিরা বিল্লালকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং একাধিক গুলি করে হত্যা করে। পরে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বিল্লাল হোসেন নিহত হয়েছে বলে নাটক সাজায়। সকালে সাক্ষীগণসহ স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিল্লাল হোসেনের বাম বুকে, বাম বগলের নিচে, ডান উরুসহ একাধিক স্থানে গুলি করা দেখতে পায়। পিঠে, দুই হাঁটুর নিচে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা দেখা যায় এবং বিল্লালের দুই হাতে হ্যান্ডকাপ দিয়ে বাঁধা ছিল। তার ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখ উপড়ানো হয়। পরের দিন এই খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় আদালতের আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা জেনে আসামিরা আমার (নিহত বিল্লালের বোন শালপোনা পারভিন) পরিবারকে অপহরণ, গুম খুনের হুমকি দেয়।’
এ মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতের অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল বলেন, বিজ্ঞ আদালত বাদীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণ করে মামলাটি তদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সিআইডি পুলিশের নিকট প্রেরণ করেছে।