জিয়ার সৈনিকদের প্রথম দায়িত্ব শৃঙ্খলা বজায় রাখা: বাবু খান
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় বিএনপির বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা
জনগণের সুশাসন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিতে কাজ করে গেছেন শহিদ জিয়া: শরীফুজ্জামান
- আপলোড টাইম : ০৮:৫৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪
- / ৪৩ বার পড়া হয়েছে
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় জেলা বিএনপির আয়োজনে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এই র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী ট্রাক, করিমন ও বিভিন্ন যানবাহনে এবং দলে দলে মিছিল সহকারে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্বর ও এর আশেপাশে এসে জড়ো হন। এসময় পুরো শহরজুড়ে লোকে লোকারণ্য হয়। শহরের প্রত্যেকটি স্পটেই বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে দেখা যায়। ফলে র্যালি বের হওয়ার আগেই যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন মাধ্যমে যানজট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের সাহিত্য পরিষদ চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র্যালিটি বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ।
র্যালিটি জেলা সাহিত্য পরিষদ চত্বর থেকে বের হয়ে কোর্ট মোড় দোয়েল চত্বর, বড় বাজার পায়রা চত্বর, পৌরসভা মোড়, কবরী রোড ও কলেজ রোড অতিক্রম করে পুনরায় সাহিত্য পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়। র্যালিতে বিএনপি নেতা-কর্মীরা জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা বহন করেন এবং বিএনপির বিভিন্ন শ্লোগান দেন। র্যালিটি দীর্ঘ সারিতে রূপ নেয়। সাহিত্য পরিষদ চত্বরে শেষ মাথা থাকলেও শোভাযাত্রায় নেতা-কর্মীর উপস্থিতি এতোটাই বৃদ্ধি পায় যে তা পুরো শহরকে প্রায় ব্লক করে ফেলে। এ সময় প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো শহরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এই র্যালিতে অংশ নেন এবং নিজেদের সমর্থন প্রকাশ করেন।
র্যালি শেষে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্বরে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনার সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহামুদ হাসান খান বাবু। তিনি বলেন, ‘৭ নভেম্বর শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে দায়িত্ব নিয়েছিলেন, ইতিহাস তা যুগ যুগ ধরে মনে রেখেছে এবং রাখবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ বহু বছর ধরে আমাদের প্রিয় নেতা শহিদ জিয়াউর রহমানের অবদানকে কবর দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা পেরেছে কি? পারেনি এবং পারবেও না। আমরা যারা নিজেদের জিয়ার সৈনিক বলে পরিচয় দিই, আমাদের প্রথম দায়িত্ব শৃঙ্খলা বজায় রাখা। তাহলেই বিভিন্ন সংগ্রামে আমরা বিজয়ী হতে পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১৬ বছর আমরা শৃঙ্খলার সাথে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছি, কোনো হটকারী রাজনীতি করিনি। এর ইতিবাচক ফল আমরা এবং জনগণ পেয়েছি। আমি খুশির খবর দিতে চাই যে, জেলা বিএনপির সম্মেলন আগামী ২৩ নভেম্বর হবে। আজকের মতো সুশৃঙ্খলভাবে র্যালি সম্পন্ন করার জন্য আমি সবাইকে আহ্বান জানাই, যাতে সম্মেলনও শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে সফলভাবে সমাপ্ত হয়।’
আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি বলেন, ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভূমিকা আমরা জানি। আমরা এটাও জানি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর, ১৯৭৫ সালেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার বিগত ১৬ বছরের মতো একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছিল, বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং রক্ষীবাহিনী নামে একটি বাহিনী গঠন করেছিল। চুয়াডাঙ্গার ২ তলা ও আলমডাঙ্গার ৪ তলা ভবনসহ সারাদেশে তার উদাহরণ রয়েছে। সেই সময় শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর সকাল বেলা ক্ষমতার পালাবদল হয়েছিল। ওই বছরের ৩ নভেম্বর কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয় এবং সেনাবাহিনীতে পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান শুরু হয়। এ ঘটনার একপর্যায়ে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী করা হয়। ৭ নভেম্বর এক সিপাহি বিদ্রোহের মাধ্যমে তিনি মুক্তি পান এবং সিপাহি-জনতার আন্দোলন গড়ে ওঠে। মুক্তির পর তিনি ক্রমান্বয়ে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হন এবং জনগণের সঙ্গে সুশাসন ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করেন। তাই আমরা যারা জাতীয়তাবাদী দলে বিশ্বাসী, তাদের কাছে ৭ নভেম্বর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। যুবদল, ছাত্রদল ও বিএনপির অন্যান্য সংগঠনের সবাইকে এই দিন সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।’
এদিন র্যালি ও আলোচনা সভায় অংশ নেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জেলা বিএনপির সদস্য ও শ্রমিক দলের সভাপতি এম.জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান, জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান কবির, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাজাহান আলী, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ওল্টু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি রাফিতুল্লাহ মহলদার, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান বুলেট, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম নজু, মাহাতাব উদ্দিন চুন্নু, আবুল হোসেন তোহা, সালমা জাহান পারুল, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুর রহমান পল্টু প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের সদস্যসচিব মওলানা আনোয়ার হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমআর মুকুল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম পিটু, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সদস্যসচিব হাকিম মুন্সি, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফ হোসেন জোয়দ্দার সোনা, তরিকুল ইসলাম জোয়ার্দার বিলু। এছাড়া বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভায় জেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, মৎস্যজীবী দলের সকল উপজেলা, থানা, পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।